প্রতীকী ছবি।
বাবা-মা জানতেন, ছেলে গৃহশিক্ষকের কাছে পড়তে গিয়েছে। আর ফেরেনি। বেলা সাড়ে ১২টা নাগাদ ছেলের খোঁজে বেরিয়ে তাঁরা জানলেন, তার মৃত্যু হয়েছে। নিথর দেহ বেলেঘাটার এক বেসরকারি হাসপাতালে পড়ে। ছেলের জামা-জুতো ভাসছে ওই এলাকারই এক জলাশয়ে!
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে তাদের অনুমান, শুক্রবার জলে ডুবে মৃত্যু হয়েছে উজ্জ্বল সিংহ নামে বছর তেরোর ওই কিশোরের। তবে তার শরীরে বেশ কিছু আঘাতের চিহ্নও মিলেছে। এতেই তৈরি হয়েছে রহস্য। পারিপার্শ্বিক সাক্ষ্যপ্রমাণ খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। অপেক্ষা করা হচ্ছে ময়না-তদন্তের রিপোর্টেরও। এক তদন্তকারী অফিসার বললেন, ‘‘ওই কিশোর নিজেই জলে নেমেছিল বলে বন্ধুরা বলছে। ওদের দাবি, সিমেন্টে বাঁধানো পাড় থেকে জলে ঝাঁপ দিয়েছিল উজ্জ্বল। সেই সময়ে আঘাত পেয়েছিল কি না দেখতে হবে।’’
পরিবারের দাবি, জলে ফেলার আগে উজ্জ্বলকে মারধর করা হয়েছে। উজ্জ্বলের দাদা প্রিন্স সিংহ বলেন, ‘‘ভাইকে জল থেকে তোলার পরে ওর মুখ দিয়ে রক্ত বেরিয়েছে। মাথায় কালশিটে ছিল। তদন্তের
দাবি জানিয়েছি।’’
গৃহশিক্ষকের কাছে যাচ্ছে বলে এ দিন বেলেঘাটা চালপট্টির বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল উজ্জ্বল। বেলা ১২টা নাগাদ তার এক বন্ধু খবর দেয়, রাসবাগান এলাকায় জলে ডুবে মারা গিয়েছে সে। স্থানীয় লোকজনই জল থেকে তুলে তাকে এক বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করেন। দেহটি ময়না-তদন্তে পাঠায় পুলিশ।
ঘটনাস্থলে যান উজ্জ্বলের দাদা প্রিন্স ও বাবা তারকেশ্বর। তাঁদের দাবি, প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, উজ্জ্বলের সঙ্গে তার দুই বন্ধুর ঝগড়া হচ্ছিল। পরে জলে ভাসতে দেখা যায় তাকে। এতেই তাঁদের অনুমান, উজ্জ্বলকে জোর করে জলে নামানো হয়। মা কুন্তিদেবী বললেন, ‘‘ওরা ছেলেটাকে মেরেই ফেলল!’’
পুলিশ উজ্জ্বলের দুই বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করছে। তাদেরই এক জন বলল, ‘‘আজ পড়তে যাইনি। সবাই পাড়ার পুকুরে স্নান করতে নামি। হঠাৎ পাড় থেকে ঝাঁপ দেয় উজ্জ্বল। তখনই মাথায় লাগে ওর।’’ পরে সে বলে, ‘‘বন্ধুকে মারব কেন? আমরা তো একসঙ্গে ক্রিকেট খেলতাম। ওকে এ দিন ছোলাভাজা কিনে দিয়েছিলাম!’’