চালক ফোনে? পুলিশে জানান

পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, কানে ফোন নিয়ে গাড়ি চালানো রুখতে নিয়মিত বেপরোয়া চালকদের জরিমানা করা হচ্ছে। সর্বক্ষণ রয়েছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৩০
Share:

স্কুলবাস ভর্তি পড়ুয়া। মোবাইলে কথা বলতে বলতে এক হাতেই গাড়ি চালাচ্ছেন চালক। মাঝেমধ্যে দু’হাত ছাড়াই ছুটছে বাস। বুধবার মধ্যমগ্রামের ওই ঘটনাটি কোনও ভাবে চোখে পড়ে গিয়েছিল উত্তর ২৪ পরগনার এক পুলিশকর্তার। তখনই বাস থামিয়ে গ্রেফতার করা হয় চালককে।

Advertisement

গত সপ্তাহেই মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে সেতু ভেঙে খালে পড়ে গিয়েছিল একটি যাত্রিবাহী বাস। সলিলসমাধি হয় ৪৩ জনের। দেখা যায়, দুর্ঘটনার আগে চালকের কানে ছিল মোবাইল।

পুলিশের একাংশ জানাচ্ছে, কানে ফোন নিয়ে গাড়ি চালানো রুখতে নিয়মিত বেপরোয়া চালকদের জরিমানা করা হচ্ছে। সর্বক্ষণ রয়েছে সিসি ক্যামেরার নজরদারি। কিন্তু তার পরেও চালকদের একাংশের এই প্রবণতা বন্ধ করা যাচ্ছে না। বৃহস্পতিবারই জোকার কাছে মোবাইলে কথা বলতে বলতে স্টিয়ারিং ধরেছিলেন চালক। ঠাকুরপুকুর ট্র্যাফিক গার্ডের কর্তব্যরত সার্জেন্ট ঘটনাটি দেখেই ১২সি রুটের ওই বাসটি আটক করেন। গ্রেফতার করা হয় চালক লখিন্দর রাউতকে।

Advertisement

বেপরোয়া চালকদের শায়েস্তা করতে তাই এ বার কলকাতা পুলিশের নিদান, গাড়ি চালাতে চালাতে চালককে ফোনে কথা বলতে দেখলে নাগরিকেরা সরাসরি তাদের কাছে অভিযোগ জানান। এর জন্য ট্র্যাফিক পুলিশের কর্তারা একটি হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরও (৯৯০৩৫৮৮৮৮৮) দিয়েছেন। পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের ‘বন্ধু’ অ্যাপেও অভিযোগ জানানো যাবে সংশ্লিষ্ট বেপরোয়া চালকের বিরুদ্ধে। পুলিশকর্তারা আরও জানাচ্ছেন, অভিযোগের সঙ্গে গাড়ির নম্বর, সময় এবং ঘটনাস্থল জানাতে হবে অভিযোগকারীকে। সম্ভব হলে অভিযুক্ত চালকের ছবিও আপলোড করতে বলা হয়েছে।

কেন এই ব্যবস্থা নিতে হচ্ছে? পুলিশ সূত্রে খবর, কলকাতা পুলিশের ২৫টি ট্র্যাফিক গার্ডের কয়েকশো অফিসার বা কর্মী রাস্তায় রোজ থাকেন যান নিয়ন্ত্রণের জন্য। যাঁরা ফোনে কথা বলতে বলতে গাড়ি চালান, ট্র্যাফিক আইন মেনে তাঁদের জরিমানা করেন ওই অফিসারেরা। এই অপরাধে গত বছর প্রায় ৩৯ হাজার চালকের জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু লালবাজারই জানাচ্ছে, লাগাতার প্রচার সত্ত্বেও এক হাতে ফোন আর অন্য হাতে স্টিয়ারিং— পথেঘাটে এই দৃশ্য বন্ধ করা যাচ্ছে না। বিশেষত অ্যাপ-ক্যাব চালকদের একাংশের মধ্যে এই প্রবণতা বেশি বলে দাবি করেছেন ট্র্যাফিক অফিসারেরা। তাই ভবিষ্যতে কোনও চালক পুলিশের চোখ ফাঁকি দিলেও সাধারণ মানুষের চোখকে যাতে ফাঁকি দিতে না পারেন, সে জন্যই এমন পদক্ষেপ। ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমার জানান, গাড়ি চালাতে চালাতে চালকদের ফোনে কথা বলার বিরুদ্ধে সাধারণ যাত্রীরাও যাতে এগিয়ে আসেন, সে কারণেই পুলিশের তরফে এই প্রচার।

লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, বেপরোয়া চালকদের এই প্রবণতার বিরুদ্ধে প্রতিটি ট্র্যাফিক গার্ড যাতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেয়, তার জন্য বৃহস্পতিবার বিশেষ নির্দেশ জারি করা হয়েছে। প্রত্যেক সার্জেন্ট এবং কর্মীকে বলা হয়েছে, ‘হাতে স্টিয়ারিং, কানে ফোন’ দেখলেই ট্র্যাফিক আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন