প্রতীকী ছবি।
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে উত্তপ্ত আর জি কর।
দমদমের বাসিন্দা অনন্ত অধিকারীর অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকাল আটটা নাগাদ তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী মৌসুমীকে নিয়ে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রীরোগ বিভাগে যান। মৌসুমীর জ্বর হয়েছিল। বারবার চিকিৎসকদের দেখার জন্য অনুরোধ করলেও প্রায় দেড় ঘণ্টা রোগীকে ফেলে রাখা হয় বলে অভিযোগ। অবশেষে বেলায় মৌসুমীকে দেখে চিকিৎসকেরা জানান, তাঁর প্রসবের সময় হয়ে গিয়েছে। কিন্তু জ্বর না কমলে অস্ত্রোপচার করা সম্ভব নয়। তবে এর কিছু ক্ষণ পরেই তাঁকে অস্ত্রোপচারের জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। চল্লিশ মিনিট পরে চিকিৎসকেরা জানান, মৃত শিশু প্রসব করেছেন মৌসুমী। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এর পরেই প্রসূতি বিভাগের সামনে এবং সুপারের ঘরে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন রোগীর পরিজনেরা। অভিযোগ জানানো হয় পুলিশেও।
পরিজনেদের অভিযোগ, সময়মতো চিকিৎসা শুরু না হওয়ায় এই বিপদ ঘটল। মৌসুমীর আত্মীয় প্রিয়াঙ্কা দাস অধিকারী এ দিন জানান, গত মঙ্গলবার থেকে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা হতে শুরু করে মৌসুমীর। পরিবার সূত্রে খবর, উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা রয়েছে তাঁর। হঠাৎ তাঁর নাক দিয়ে রক্তক্ষরণ শুরু হয়। ওই দিনই তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসক জানান, কোনও সমস্যা নেই। বুধবার রাতে জ্বর হওয়ায় বৃহস্পতিবার ফের মৌসুমীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। অস্ত্রোপচার দেরিতে হওয়ায় বিপদ ঘটে গেল বলেই তাঁদের অভিযোগ। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছেন তাঁরা।
চিকিৎসকদের একাংশের অবশ্য পাল্টা বক্তব্য, কয়েক ঘণ্টা দেরিতে অস্ত্রোপচার শুরু হলে মৃত্যুর আশঙ্কা থাকে না। বরং মায়ের জ্বরের মধ্যে সিজার করা বিপজ্জনক। এ দিকে, মায়ের উচ্চ রক্তচাপ আছে। ফলে জটিলতা তৈরির আশঙ্কা ছিলই। প্রসূতির উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সিজারের ব্যবস্থা আগেই করাই ভাল। এ ক্ষেত্রে প্রসূতির দু’রকম অসুস্থতাই সমস্যার কারণ বলে মত ওই চিকিৎসকদের।
আর জি করের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান শান্তনু সেন এ দিন বলেন, ‘‘পরিষেবা নিয়ে কোনও রোগী কিংবা পরিবারের অভিযোগ থাকলে তা খতিয়ে দেখা হবে। চিকিৎসায় গাফিলতি নিয়ে ওঠা অভিযোগের সত্যতা খতিয়ে দেখবেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।’’