Kolkata Pubs and Bars

পানশালায় হানার পথে পুলিশ, কড়া আবগারি দফতরও

শনিবার রাতেই শহরের একাধিক পানশালা ঘুরে দেখা গিয়েছিল বিধি ভাঙার চিত্র। কলকাতার পানশালায় শর্তসাপেক্ষে গানে ছাড় থাকলেও নাচ একেবারে বারণ বলে পুলিশের দাবি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৪
Share:

রাত ১২টার মধ্যে পানশালা বন্ধ করার নির্দেশের পাশাপাশি লালবাজার সেখানে হানা দিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছে বলে খবর। প্রতীকী ছবি।

বিধি উড়িয়ে শহরের বিভিন্ন পানশালায় নাচ ও সেই সঙ্গে টাকা ওড়ানো চলছে বলে অভিযোগ ওঠার পরেই তৎপর হল কলকাতা পুলিশ। সূত্রের খবর, সোমবারই একাধিক থানা এলাকার পানশালা মালিকদের সঙ্গে কথা বলেছে তারা। রাত ১২টার মধ্যে পানশালা বন্ধ করার নির্দেশের পাশাপাশি লালবাজার সেখানে হানা দিয়ে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছে বলে খবর। একই রকম নির্দেশ জারি করেছে আবগারি দফতরও। ওই দফতরও রাত ১২টার মধ্যে সব কিছু বন্ধ করতে নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisement

শনিবার রাতেই শহরের একাধিক পানশালা ঘুরে দেখা গিয়েছিল বিধি ভাঙার চিত্র। কলকাতার পানশালায় শর্তসাপেক্ষে গানে ছাড় থাকলেও নাচ একেবারে বারণ বলে পুলিশের দাবি। তা সত্ত্বেও বেশ কিছু জায়গায় রাত সাড়ে ১২টার পরেও দেদার চলছে নাচ। সেখানে ইঙ্গিতপূর্ণ নানা অঙ্গভঙ্গিও করতে দেখা গিয়েছে নাচতে আসা তরুণীদের। পানশালায় আসা অনেককেই দেখা গিয়েছে, বিধি উড়িয়ে নাচার মঞ্চে উঠে পড়ছেন এবং টাকা ওড়াচ্ছেন। তবে, প্রায় সর্বত্রই ছবি তোলার ক্ষেত্রে ছিল নিষেধাজ্ঞা। তার মধ্যেও নজর এড়িয়ে তোলা কয়েকটি ছবিতে ধরা পড়েছে নাচের দৃশ্য।

এই প্রসঙ্গে ‘বেঙ্গল হোটেল অ্যান্ড বার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক অচিন্ত্য বসু বলেন, ‘‘পুলিশ কড়াকড়ি করছে। কিছু জায়গায় হানাও দিতে পারে শুনেছি। রাত পর্যন্ত যাঁরা পানশালা চালান, তাঁদের সতর্ক করছি। পুলিশের থেকে যে লাইসেন্স নেওয়া হয়, তাতে লাইভ ব্যান্ডের উল্লেখ থাকে। অনেকেই গান-বাজনার সঙ্গে নাচেন। গান তো আর শুধু হয় না, নাচও থাকে কিছু ক্ষেত্রে। তবে, এ ভাবে খোলাখুলি বিধিভঙ্গ সমর্থন করি না। যাঁরা এ সব করেন, খোঁজ নিয়ে তাঁদের সতর্ক করছি। তবে, এর সঙ্গে অনেকগুলো বিষয় জড়িত। সরকার অনুমতি দিচ্ছে বলেই বেশি রাত পর্যন্ত পানশালা খোলা রাখা হচ্ছে।’’

Advertisement

স্পেশ্যাল এক্সাইজ় কমিশনার (এনফোর্সমেন্ট) সুব্রত বিশ্বাস বলেন, ‘‘পানশালায় কী কী করা যাবে, কী করা যাবে না, তা পুলিশ ঠিক করেছিল। যে সমস্ত পানশালার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, সেগুলি বেশি রাত পর্যন্ত খোলা রাখার অনুমতি নিয়েছিল কি না, খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’

অন্য দিকে, রেস্তরাঁ ও পানশালায় ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার দিয়ে পরীক্ষার পুলিশি নির্দেশিকা ঘিরে প্রশ্ন ওঠায় শনিবার ‘ভারত চেম্বার অব কমার্স’-এ কলকাতার পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েলকে নিজেদের আপত্তির কথা জানিয়েছিলেন পানশালা মালিকেরা। জট কাটাতে এ দিন রেস্তরাঁ ও পানশালার প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করল লালবাজার। বৈঠক শেষে পুলিশকর্তারা আপাতত নির্দেশিকাটিকে পরামর্শ-বার্তা হিসাবে দেখার কথা বলেছেন বলে দাবি পানশালা মালিকদের।

পুলিশি নির্দেশ কার্যকর করতে গেলে কী কী অসুবিধা হতে পারে, লালবাজারের কর্তাদের তা জানান রেস্তরাঁ ও পানশালার মালিকেরা। তাঁরা জানতে চান, কেউ যদি ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার পরীক্ষায় রাজি না হন, তা হলে কী করণীয়। তাঁদের আরও প্রশ্ন, ব্রেথ অ্যানালাইজ়ার পরীক্ষা এড়াতে কেউ যদি বানিয়ে বলেন যে, তাঁর গাড়ির চালক আছেন এবং পরে নিজেই গাড়ি চালান, তা হলেই বা কী করণীয়? বৈঠকে উপস্থিত এক পানশালা মালিক বলেন, ‘‘এই নির্দেশ কার্যকর করতে গেলে আমাদের থানা-পুলিশ করেই কাটাতে হবে। মত্ত কোনও গ্রাহককে পরীক্ষার পরে আটকে রাখলে তিনি পরবর্তী কালে পুলিশের দ্বারস্থ হতে পারেন। তখন আমাদের ভোগান্তি বাড়বে।’’ ‘ইস্টার্ন ইন্ডিয়া হোটেল অ্যান্ড রেস্তরাঁ অ্যাসোসিয়েশন’-এর সভাপতি সুদেশ পোদ্দার বলেন, ‘‘একাধিক সমস্যার কথা পুলিশকে জানিয়েছি। ছোট পানশালা, যেখানে কর্মী-সংখ্যা কম, সেখানে এই নির্দেশ কার্যকর করতে গেলে কী কী সমস্যা হতে পারে, তা নিয়েও আমরা আলোচনা করেছি। পরে আরও একটি নোটিস দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।’’ লালবাজারের এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘পানশালার মালিকদের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। তাঁরা সমস্যার কথা জানিয়েছেন। বিষয়টি যে নির্দেশ নয়, পরামর্শ, তা পরিষ্কার করে দেওয়া হয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন