রাজ্যে নিষিদ্ধ মাদকের ব্যবহার কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করা গেলেও কলকাতার পরিস্থিতি খুবই উদ্বেগজনক। বিশেষ করে, ভেষজ মাদকের জায়গায় এলএসডি ও এমএসডি-র মতো ‘সিন্থেটিক’ মাদকের সরবরাহ কলকাতায় ভয়াবহ রকমের বেড়ে গিয়েছে। যার পাল্লায় পড়ছে স্কুল ও কলেজের পডুয়ারা। এই মাদকের নেশায় আসক্ত হয়ে উঠছে তারা।
শনিবার হাওড়া সিটি পুলিশ, নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরো ও একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে হাওড়ার শরৎ সদনে আয়োজিত মাদক-বিরোধী সপ্তাহের সূচনা অনুষ্ঠানে এমনই আশঙ্কার কথা জানালেন নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর আঞ্চলিক ডিরেক্টর দিলীপকুমার শ্রীবাস্তব। তিনি বলেন, ‘‘ইউরোপের বিভিন্ন দেশ থেকে পাকিস্তান ও বাংলাদেশ হয়ে মাদক আসছে কলকাতায়। এই মাদক সেবনের পদ্ধতিও খুব সহজ। তাই কলেজ ও স্কুলপড়ুয়ারা বাড়িতেই লুকিয়ে মাদক নিচ্ছে এবং বাবা-মা বা পরিবারের লোকজন তা বুঝতেও পারছেন না।’’ দিলীপ জানান, এলএসডি খুব ছোট প্যাকে পাওয়া যায় এবং একটি প্যাক থেকে তিন-চার জন তা নিতে পারে। যার ফলে এর চাহিদাও খুব বেশি।
দিলীপ আরও জানান, এলএসডি-র পাশাপাশি গাঁজার ব্যবহারও খুব বেড়ে গিয়েছে। অনেক ক্ষেত্রেই মা-বাবারা ছেলেমেয়ের উপরে ঠিক মতো নজর রাখেন না। ফলে তারা অবাধেই নেশা করে চলে। নারকোটিক্স কন্ট্রোল ব্যুরোর অধিকর্তা জানান, আগে মালদহের কালিয়াচকে প্রায় ১১ হাজার একর জমিতে গাঁজার চাষ হত। বছর দুই আগে বিশেষ অভিযান চালিয়ে তা বন্ধ করে দেওয়ায় এখন মাত্র দু’একর জায়গায় সেই চাষ হয়। কিন্তু চোরা পথে পড়শি রাজ্য থেকে গাঁজার সরবরাহ অব্যাহত থাকায় তা পড়ুয়াদের হাতে সহজেই চলে আসছে। এই গাঁজা থেকেই তৈরি হচ্ছে ব্রাউন সুগারের মতো মারাত্মক মাদক। তিনি বলেন, ‘‘বাবা-মায়েদের উচিত ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বন্ধুর মতো মিশে তাদের মাদক সম্পর্কে সতর্ক করা। মাদকের বিরুদ্ধে এটাই লড়াইয়ের সব থেকে বড় অস্ত্র।’’
এ দিনের অনুষ্ঠানে হাওড়ার তৃণমূল সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে মেয়র রথীন চক্রবর্তী, পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ— প্রত্যেকেই ছেলেমেয়েদের পাশাপাশি তাঁদের বাবা-মাকেও সতর্ক থাকতে বলেন।