সন্ধ্যার অবসরে। ছবি: শৌভিক দে।
যেন সন্ধ্যার গঙ্গা-ধার। জলে নৌকো চলছে। পাড়ে খাবারের কিয়স্ক। বাঁধানো পাড় ধরে নিশ্চিন্তে ঘুরছেন মানুষজন। তরুণ-তরুণীরা নিজেদের মতো বসে রয়েছেন। এমনই ছবিটা লেকটাউন থেকে ভিআইপি রোড ধরে বাঙুরের দিকের। দক্ষিণ দমদম পুরসভার তৈরি এই ‘ইকো নেস্ট’ ঠিকঠাক রাখায় সচেতন বাসিন্দারাও।
ছিল একেবারে পূতিগন্ধময় নয়ানজুলি। পচা জলে মশার আঁতুড় ঘর ছিল। দক্ষিণ দমদম পুরসভার উদ্যোগে সেই নয়ানজুলির পাড় এখন ‘ইকো নেস্ট’। চারদিক ঝকঝকে। আবর্জনার লেশ নেই কোথাও। গরমে স্থানীয় বাসিন্দাদের সান্ধ্য কিংবা নৈশভ্রমণের অন্যতম জায়গা নয়ানজুলির এই পাড়।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ রাজ্যকে লন্ডনের আদলে সাজিয়ে তোলার কথা বলেছিলেন এক সময়। বাঙুর এলাকার ওই নয়ানজুলির ধারের সৌন্দর্যায়ন তার উদাহরণ। তবে এ ক্ষেত্রে প্রশাসন এবং স্থানীয় বাসিন্দারা— দু’পক্ষই এগিয়ে এসেছেন বলে জানান বাঙুর এবং লেকটাউন এলাকার বাসিন্দারা।
বাঙুর ‘বি’ ব্লকের বাসিন্দা অভিজিত চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘সৌন্দর্যায়ন রক্ষার দায়িত্ব এখানে প্রশাসনের পাশাপাশি বাসিন্দারাও নিয়েছেন।’’ এর প্রমাণ পাওয়া গেল যখন দমদম পার্ক থেকে আসা এক দম্পতি বাচ্চার জন্য কেনা চকোলেটের প্যাকেটটি রাস্তায় ফেললেন। স্থানীয় কিয়স্কের মালিক বাবলু সাহা ওই দম্পতিকে অনুরোধ করলেন চকোলেটের প্যাকেটটি কাছের ডাস্টবিনে ফেলার জন্য। একই অনুরোধ করতে দেখা গেল নৈশভ্রমণে বেরনো স্থানীয় এক বাসিন্দাকেও।
দক্ষিণ দমদম পুরসভার ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের অধীনে পড়ে এটি। লোহার বে়ঞ্চ, ছোটোদের জন্য তৈরি বিভিন্ন কার্টুনের মোটিভ-সহ সৌন্দর্যায়নের হরেক উপকরণে সাজিয়ে তোলা হয়েছে নয়ানজুলির পাড়। শুধু ‘ইকো নেস্ট’ নয়। বাঙুর স্কুলের পাশে আলো ও শব্দের খেলা সহকারে থাকা আবোল-তাবোল পার্কটি এখন সন্ধ্যার পরে বাচ্চাদের ভিড়ে জমে ওঠে।
তৎকালীন চেয়ারম্যান পারিষদ তথা বর্তমানে ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মৃগাঙ্ক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সন্ধ্যার পরে স্থানীয়েরা ছাড়াও বাইরের লোকজনও ‘ইকো নেস্ট’-এ আসেন। নিরাপত্তার দিক থেকে বাঙুর সুরক্ষিত। বাসিন্দারা জায়গাটিকে আপন করে নেওয়ায় এখন আর সেটি অপরিচ্ছন্ন থাকার আশঙ্কা নেই।’’