দীর্ঘ লাইন কমাতে আপস নয় নিরাপত্তায়

সিআইএসএফ-এর দাবি ছিল, সেই স্ট্যাম্প মারা বন্ধ হলে লাইনে যাত্রীদের প্রতীক্ষার সময় কমবে। সমীক্ষায় ওই স্ট্যাম্প তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিমানযাত্রীরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০১৭ ০২:১৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বেষ্টনীর দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে বিরক্ত হন যাত্রীরা। শুধু কলকাতায় নয়, দেশের সমস্ত প্রধান বিমানবন্দরের ছবিটা একই। গত অক্টোবরে দেশের প্রধান আটটি বিমানবন্দরের ৩ লক্ষ ৩০ হাজার ১৫২ জন যাত্রীর মধ্যে সমীক্ষা চালিয়েছিল বিমানবন্দরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সেন্ট্রাল ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিকিউরিটি ফোর্স (সিআইএসএফ)। সেখান থেকেই উঠে এসেছে যাত্রীদের এই বিরক্তির ছবি।

Advertisement

কোনও যাত্রী বিমানবন্দরে ঢুকে নিজের বড় ব্যাগ (যেগুলি বিমানের পেটে চালান করে দেওয়া হয়) এক্স-রে করিয়ে প্রথমে পৌঁছন বিমানসংস্থার চেক-ইন কাউন্টারে। অর্থাৎ যিনি জেট এয়ারওয়েজে যাবেন তিনি সেই সংস্থার কাউন্টারে, যিনি ইন্ডিগোয় যাবেন তিনি ইন্ডিগোর কাউন্টারে গিয়ে বড় ব্যাগগুলি বিমানসংস্থার হাতে তুলে দেন। সেখান থেকে বোর্ডিং কার্ড নিয়ে সঙ্গের ছোট হাতব্যাগ বা ছোট ট্রলিব্যাগ সমেত যাত্রী পৌঁছন নিরাপত্তা বেষ্টনীতে। যদিও চেক-ইন কাউন্টারেও যাত্রীদের দাঁড়াতে হয় লাইনে। কিন্তু নিরাপত্তা বেষ্টনীর লাইন নিয়েই উঠেছে মূল অভিযোগ। এখানে যাত্রীর হাতব্যাগ এক্স-রে করা হয়। সেই সঙ্গে যাত্রীর দেহেরও তল্লাশি চালানো হয়।

সিআইএসএফ সূত্রের খবর, কলকাতা ছাড়াও যাত্রীদের মধ্যে এই সমীক্ষা চালানো হয়েছে দিল্লি, মুম্বই, চেন্নাই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরু, কোচিন ও গুয়াহাটি বিমানবন্দরে। প্রতিটি বিমানবন্দরের ক্ষেত্রেই যাত্রীরা এই দেহ তল্লাশির আগে লম্বা লাইন নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন। যাত্রীদের বেশি ক্ষণ যাতে এই লাইনে অপেক্ষা করতে না হয়, সে জন্য সম্প্রতি দেশের মূল বিমানবন্দরগুলিতে দেহ তল্লাশির পরে বোর্ডিং কার্ডে স্ট্যাম্প মারা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। যাত্রীর দেহ যে তল্লাশি করা হয়েছে, তাঁর হাত ব্যাগ যে পরীক্ষা করা হয়েছে, তা নিশ্চিত করতেই ওই স্ট্যাম্প মারা হচ্ছিল। সিআইএসএফ-এর দাবি ছিল, সেই স্ট্যাম্প মারা বন্ধ হলে লাইনে যাত্রীদের প্রতীক্ষার সময় কমবে। সমীক্ষায় ওই স্ট্যাম্প তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিমানযাত্রীরা।

Advertisement

কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, যাত্রীদের প্রতীক্ষার দীর্ঘ লাইন কমছে না, ফলে কমছে না তা নিয়ে যাত্রীদের অভিযোগও। দেশের অভ্যন্তরীণ উড়ানের ক্ষেত্রেই মূলত এই অভিযোগ রয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরের এক অফিসারের দাবি, নতুন টার্মিনালের অভ্যন্তরীণ ক্ষেত্রে চারটি পৃথক নিরাপত্তা বেষ্টনী রয়েছে। দিনের কোনও এক সময়ে দেখা যায়, একটিতে বেষ্টনীতে ভিড় বেশি ফলে দীর্ঘ লাইন রয়েছে। অন্যটিতে কোনও ভিড় নেই। সেই সময়ে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীদের অনুরোধ করা হয়, যাতে তাঁরা একটু দূরে হেঁটে গিয়ে ফাঁকা বেষ্টনীতে দাঁড়ান। কিন্তু বেশির ভাগ যাত্রীই সে বিষয়ে আগ্রহ দেখান না বলে জানা গিয়েছে।

অফিসারদের দাবি, নিরাপত্তার সঙ্গে কোনও রকম আপস করা সম্ভব নয়। একটু অপেক্ষা করতেই হবে বিমানযাত্রীদের। সামগ্রিক ভাবে দেশের প্রায় সব ক’টি বিমানবন্দরেই সিআইএসএফ-এর পরিষেবা ও ব্যবহারে সন্তুষ্ট বলেই সমীক্ষায় জানিয়েছেন যাত্রীরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন