Anandabazar Adwitiya

পেশা, সংসার সামলেই বাজিমাত

প্রতিযোগিতার কলকাতা অঞ্চলের ফাইনালে ‘আবৃত্তি’ বিভাগে প্রথম হওয়ার যাবতীয় কৃতিত্ব লোকশ্রী দিয়েছেন তাঁর মাকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২২ জানুয়ারি ২০২০ ০১:০০
Share:

পাশাপাশি: ‘অদ্বিতীয়া’র মঞ্চে (বাঁ দিক থেকে) লোকশ্রী দত্ত, দেবলীনা মণ্ডল এবং শম্পা নাগ। নিজস্ব চিত্র

পড়াশোনার পাশাপাশি চলে আবৃত্তি চর্চাও। তবে আগে কখনও পেশাদার মঞ্চে আবৃত্তি করেননি কল্যাণীর বকুলপুরের কলেজছাত্রী লোকশ্রী দত্ত। প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলার ছাত্রীটি জানাচ্ছেন, ‘পি সি চন্দ্র মুগ্ধা নিবেদিত আনন্দবাজার পত্রিকা অদ্বিতীয়া’ প্রতিযোগিতায় কলকাতা অঞ্চলে ‘আবৃত্তি’ বিভাগে প্রথম হয়ে তাঁর জীবনটাই যেন বদলে গিয়েছে। আত্মীয়-প্রতিবেশীদের কাছে তিনি এখন রীতিমতো সেলিব্রিটি। ভবিষ্যতে পড়াশোনার সঙ্গে আবৃত্তি নিয়েও ভাল কিছু করার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ওই তরুণী।

Advertisement

প্রতিযোগিতার কলকাতা অঞ্চলের ফাইনালে ‘আবৃত্তি’ বিভাগে প্রথম হওয়ার যাবতীয় কৃতিত্ব লোকশ্রী দিয়েছেন তাঁর মাকে। বললেন, ‘‘মা-ই আমাকে এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে সব চেয়ে বেশি উৎসাহ দিয়েছিলেন। মায়ের কথাতেই আমি আবৃত্তির এক মিনিটের ভিডিয়ো তুলে পাঠিয়ে দিই। তখন ঘুণাক্ষরেও ভাবিনি, প্রথম হয়ে গ্র্যান্ড ফিনালে-তে চলে যাব।’’

রোজ কল্যাণী থেকে প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতায়াত করেন লোকশ্রী। তাঁর কথায়, ‘‘প্রতিদিন এতটা রাস্তা ট্রেনে যাতায়াত। সঙ্গে পড়ার চাপ। এত কিছুর মধ্যেও আবৃত্তিকে ভালবাসি বলেই চর্চাটা রেখেছি। তবে আমার মধ্যে যে প্রথম হওয়ার মতো প্রতিভা লুকিয়ে আছে, তা বুঝতেই পারতাম না এই প্রতিযোগিতায় অংশ না নিলে। ‘অদ্বিতীয়া’ সত্যিই সুপ্ত প্রতিভাকে স্বীকৃতি দেওয়ার মঞ্চ।’’

Advertisement

এই বিভাগে দ্বিতীয় হওয়া বছর ছত্রিশের দেবলীনা মণ্ডল পেশায় স্কুলশিক্ষিকা। দেবলীনা জানালেন, ছোটবেলায় আবৃত্তি শিখতেন। স্কুল-কলেজের নানা অনুষ্ঠানেও আবৃত্তি করেছেন। কিন্তু তার পরে দীর্ঘ বছর বন্ধ ছিল চর্চা। তিনি বলেন, ‘‘পেশার চাপ তো আছেই। তার উপরে আছে সংসারের চাপ। মা হওয়ার পরে আরও ব্যস্ত হয়ে গিয়েছি। এখন স্কুলে ছেলেমেয়েদের আবৃত্তি শেখাই মাঝেমধ্যে। তবে কখনও প্রতিযোগিতায় অংশ নিইনি।’’ দেবলীনা জানান, ‘অদ্বিতীয়া’য় অংশগ্রহণের জন্য এক বন্ধু তাঁকে এক মিনিটের আবৃত্তির ভিডিয়ো তুলে পাঠাতে বলেন। সেই সঙ্গে তাঁর সাত বছরের মেয়েও জোর করতে থাকে। দেবলীনা বলেন, ‘‘মেয়ে অনেক বার বলেছিল, মা তুমি নাম দাও। ওর জোরাজুরিতেই ভিডিয়ো পাঠাই।’’ তাতেই বাজিমাত করেছেন ওই শিক্ষিকা। তিনি আরও বলেন, ‘‘এত মানুষ আমার কবিতা শুনে ভাল বলেছেন। এটাই তো সব চেয়ে বড় পুরস্কার। এতেই আত্মবিশ্বাস অনেকটা বেড়ে গিয়েছে।’’

কলকাতা অঞ্চলের এই প্রতিযোগিতায় তৃতীয় হয়েছেন কৃষ্ণনগরের গৃহবধূ শম্পা নাগ। বছর ঊনপঞ্চাশের শম্পা জানান, তাঁর পেশা আবৃত্তি শেখানো। আবৃত্তি শেখানোর স্কুলও আছে তাঁর। তবে ‘অদ্বিতীয়া’র মঞ্চ তাঁর কাছে স্পেশ্যাল। শম্পা বলেন, ‘‘তৃতীয় হয়েছি ঠিকই। কিন্তু আমার সামনেও সুযোগ আছে গ্র্যান্ড ফিনালে-তে যাওয়ার। তার জন্য ইতিমধ্যেই তৈরি হতে শুরু করেছি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন