ঘোষণা: সেন্ট অ্যান্ড্রুজ গির্জার সামনে যান নিয়ন্ত্রণে ব্যস্ত মাইকধারী সিভিক পুলিশ। সোমবার, বি বা দী বাগে। ছবি: সুমন বল্লভ
বি বা দী বাগের সেন্ট অ্যান্ড্রুজ গির্জার সামনে দাঁড়ানো এক পুলিশকর্মীর হাতে মাইক। তিনিই টানা ঘোষণা করে চলেছেন, কোন পথে যাবে হাওড়াগামী বাস ও কোন পথ ধরবে দক্ষিণ কলকাতামুখী বাস। শুধু ওই মাইকধারী পুলিশকর্মীই নন, গির্জার সামনে দাঁড়িয়ে যান নিয়ন্ত্রণ করছেন আরও বেশ কয়েক জন সার্জেন্ট। তৎপর পুলিশ সার্জেন্টদের ব্যস্ততা চোখে পড়ে বি বা দী বাগ এলাকার ব্রেবোর্ন রোড ও বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের বিভিন্ন মোড়েও।
মেট্রোর নির্মীয়মাণ মহাকরণ স্টেশনের প্রবেশপথ তৈরির জন্য গভর্নমেন্ট প্লেস (ইস্ট)-এর তিনটি লেন বন্ধ করে দেওয়া হলেও সোমবার, সপ্তাহের প্রথম কাজের দিনে এমন পুলিশি তৎপরতায় বি বা দী বাগ অঞ্চলে এড়ানো গেল কঠিন যানজট-পরিস্থিতি। বি বা দী বাগ বাসস্ট্যান্ডের উপরে তৈরি হওয়া বিকল্প পথ ধরে গাড়ি চলল অনেকটাই মসৃণ ভাবে। ডিসি (ট্র্যাফিক) সুমিত কুমার বলেন, ‘‘বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট থেকে বি বা দী বাগ অঞ্চলে আসতে গাড়িগুলির একটু বেশি সময় লেগেছে ঠিকই, কিন্তু এটা বাদ দিলে আজ বি বা দী এলাকায় যান চলাচল প্রায় স্বাভাবিকই ছিল। ওই এলাকায় অন্যান্য দিনের থেকে আরও ৩০-৪০ জন বেশি ট্র্যাফিক পুলিশকর্মীকে মোতায়েন করা হয়েছিল। আসা করা যায়, আগামী দিনগুলিতেও এই এলাকায় যান চলাচল এ রকমই মসৃণ থাকবে।’’
তবে যান নিয়ন্ত্রণে কতটা সফল হল, তা প্রথম দিনের তৎপরতা দেখে বিচার করা ঠিক হবে না বলেও নিত্যযাত্রীদের এক অংশের মত। গভর্নমেন্ট প্লেসের তিনটি লেন বন্ধ করে বি বা দী বাগ মিনিবাস স্ট্যান্ডের উপরে যে বিকল্প পথ তৈরি হয়েছে, সেখান দিয়ে যেমন ব্রেবোর্ন রোড থেকে দক্ষিণ কলকাতা যাওয়ার গাড়ি ঢুকছে, তেমন বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিট ধরে হাওড়া যাওয়ার গাড়িগুলিও ওই পথই ধরছে। ওই বিকল্প রাস্তা ধরছে ছোট গাড়িও। ফলে ওই বিকল্প পথে যানজট হওয়ার আশঙ্কা যে রয়েছে, তা পুলিশকর্তাদের এক অংশ স্বীকার করে নিচ্ছেন।
যেমন বিমানবন্দর থেকে বি বা দী বাগগামী একটি বাসের কন্ডাক্টর অমিত মাইতি বলেন, ‘‘রাস্তায় অনেক পুলিশ ছিল, তবু চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের বৌবাজার মোড় থেকে লালবাজার আসতে অন্য দিনের তুলনায় অন্তত পনেরো মিনিট বেশি লাগল। আগামী দিনগুলিতে এত পুলিশ না থাকলে বড়সড় ভোগান্তি হতে পারে।’’ একই বক্তব্য বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের একটি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের এক ছাত্রের বাবা। নীলাঞ্জন বসু নামে ওই ব্যক্তি বলেন, ‘‘ভোগান্তি যে হতে পারে, তা কিন্তু প্রথম দিন একটু টের পাওয়া গিয়েছে। আশা করি, আগামী দিনগুলিতেও তা সামাল দিতে পুলিশ সমান তৎপর থাকবে।’’ ডিসি ট্র্যাফিক সুমিত কুমার অবশ্য বলেন, ‘‘আজ থেকে আগামী কয়েক মাস যত দিন এ রকম ঘুরপথে যান চলবে, তত দিনই ওই এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ যান নিয়ন্ত্রণ করবে। শুধু সকালে অফিস টাইমেই নয়, বিকেলে অফিস ছুটির পরেও ওই এলাকায় যান চলাচলের যথেষ্ট চাপ থাকে। ফলে সারা দিনই ওই এলাকায় বাড়তি নজর থাকবে।’’