অন্য কারও খালি পড়ে থাকা জমিতে বা কোনও ফাঁকা মাঠে দখল করে বসে থাকা অবৈধ বাসিন্দাদের পুর পরিষেবা দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন হয়ে গেল মেয়র পারিষদদের বৈঠকে। শুক্রবার ওই বৈঠকে বিষয়টি তোলেন কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। তিনি জানিয়েছেন, পুর অধিবেশনে অনুমোদন করার পরে প্রস্তাবটি এ বার রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে।
এ দিন এ বিষয়ে শোভনবাবু বলেন, ‘‘জমিতে কেউ বসবাস করলে মানবিকতার খাতিরে তাঁদের পানীয় জল, যাতায়াতের রাস্তা, নিকাশি এবং আলো-সহ ন্যূনতম পুর পরিষেবাগুলি দেওয়া হবে। যদিও কাউকে ওই জমির অধিকার দেওয়া হবে না।’’ তবে ‘বেআইনি’ ভাবে দখল করা জমিতে এ সব সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হলে দখলদারির প্রবণতা তো আগের থেকে আরও বেড়ে যেতে পারে। এ বিষয়ে মেয়রের বক্তব্য, ‘‘মালিকপক্ষ যদি জমি নিজের দখলে রাখতে পারেন, তা হলে তো এ সব প্রশ্ন আর উঠবেই না।’’ যদিও সরকার এ ব্যাপারে এক বার সবুজ সঙ্কেত দিলে মামলা হতে পারে বলে মনে করছেন পুরসভার একাধিক মেয়র পারিষদ এবং কাউন্সিলরেরাই।
আগামী পয়লা এপ্রিল থেকে কলকাতা শহরে এলাকা-ভিত্তিক সম্পত্তি কর নেওয়ার ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। নতুন ওই ব্যবস্থায় করের পরিবর্তিত কাঠামো কেমন হবে, তা-ও এ দিন নির্ধারিত হয়েছে মেয়র পারিষদদের ওই বৈঠকে। পুরসভার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, নতুন এই কর ব্যবস্থায় সম্পত্তিকর আদায়ের পরিমাণ আগের থেকে খানিকটা কমে যাবে। এ বিষয়ে মেয়র শোভনবাবু বলেন, ‘‘কলকাতা শহরের বাসিন্দাদের কিছুটা রেহাই দিতেই আমাদের এই উদ্যোগ।’’ ২০০৭ সালে বামফ্রন্টের আমলেই প্রথম এলাকা-ভিত্তিক সম্পত্তি কর আদায়ের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে তৃণমূল বোর্ডই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে বলে দাবি করেছেন পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার।
একই সঙ্গে এ দিন রাজ্য সরকার পরিচালিত এবং অনুমোদিত বিভিন্ন স্কুল-কলেজের বিল্ডিং নকশার ফি মকুব করার সিদ্ধান্ত পাশ হয়েছে ওই বৈঠকে। মেয়র জানিয়েছেন, পুরসভার অনুমোদিত এই সিদ্ধান্ত এর পরে প্রস্তাব আকারে রাজ্য সরকারের কাছে পাঠানো হবে। এর জন্য বিল্ডিং আইনের সংশোধন করার দরকার। তা হয়ে গেলে তবেই তা কার্যকর করা সম্ভব হবে।