গয়না প্রতারণায় তিন তরুণী পুলিশের জালে

সোমবার বিকেলে কাঁচরাপাড়ার একটি গয়নার দোকানে ঢুকে একই রকম প্রস্তাব দেয় তিন তরুণী। গয়না এবং বিল দেখে সন্দেহ হয় দোকান মালিকের। পুলিশের সতর্কবার্তা মনে পড়ায় তাঁরা আর ঝুঁকি নেননি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ মার্চ ২০১৮ ০১:৫৫
Share:

দুধ-সাদা গাড়িতে সওয়ার তিন তরুণী। বেশভুষা আধুনিক। উদ্দেশ্য, পুরনো সোনার গয়না বদলে নতুন গয়না কেনা। গত কয়েক দিন ধরে কলকাতা এবং ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের বেশ কয়েকটি দোকান থেকে তারা এ ভাবে গয়না কেনে। যদিও দোকান মালিকেরা পরে আবিষ্কার করেন, হলমার্কের আড়ালে পুরনো গয়নাগুলি নকল।

Advertisement

তবে শেষরক্ষা হল না। সোমবার বিকেলে কাঁচরাপাড়ার একটি সোনার দোকানে একই কায়দায় গয়না কিনতে ঢুকে হাতেনাতে ধরা পড়ল শাহিনা বিবি, পায়েল শীল এবং দেবশ্রী দাস নামের তিন তরুণী এবং তাদের সঙ্গী গাড়িচালক সাদ্দাম হোসেন লস্কর। পুলিশ জানিয়েছে, শাহিনা এবং সাদ্দাম হাওড়া শিবপুরের কাজিপাড়া লেনের বাসিন্দা। পায়েলের বাড়ি টালিগঞ্জের বনমালী মণ্ডল লেনে। দেবশ্রী থাকে বেলেঘাটা মেন রোডে।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার পায়েলরা ব্যারাকপুরের একটি গয়নার দোকানে যায়। তারা বেশ কিছু পুরনো গয়না বদলে নতুন গয়না কিনতে চায়। পুরনো গয়নাগুলিতে হলমার্ক ছিল। এমনকী, ওজন অনুযায়ী প্রতিটি গয়নার বিলও ছিল। ফলে দোকানের মালিকের কোনও সন্দেহ হয়নি। তিনি সেই গয়না বদলে নতুন গয়না দিয়েও দেন। পরে তাঁরা পরীক্ষা করে দেখেন, সব গয়নাই নকল। এর পরেই পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়।
সঙ্গে সঙ্গে সব গয়নার দোকান মালিকদের এই দলটির বিষয়ে সতর্ক করে দেয় পুলিশ।

Advertisement

সোমবার বিকেলে কাঁচরাপাড়ার একটি গয়নার দোকানে ঢুকে একই রকম প্রস্তাব দেয় তিন তরুণী। গয়না এবং বিল দেখে সন্দেহ হয় দোকান মালিকের। পুলিশের সতর্কবার্তা মনে পড়ায় তাঁরা আর ঝুঁকি নেননি। নতুন গয়না দেখানোর অছিলায় তিন তরুণীকে আটকে রেখে বীজপুর থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ দোকানে গিয়ে চার জনকে থানায় নিয়ে আসে। জেরার পরে প্রতারণার কথা স্বীকার করে তারা। সোমবার রাতেই তাদের গ্রেফতার করা হয়। বীজপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, মঙ্গলবার খবর আসে দমদম ক্যান্টনমেন্টেও দিন কয়েক আগে একই কায়দায় সোনার গয়না হাতিয়েছে তিন তরুণী।

নকল বিল তৈরি নিয়ে সন্দেহ না থাকলেও, নকল হলমার্ক ধৃতেরা কী ভাবে বসাত, তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। সোমবার রাতেই বীজপুর থানায় এক যুবক এসে নিজেকে ধৃত তরুণীদের এক জনের স্বামী বলে পরিচয় দেয়। পরে সে নিজেকে ‘লিভ-ইন-পার্টনার’ বলে। পুলিশ তাকে জেরা করার তোড়জোড় করতেই পালিয়ে যায় সে। সে-ও দলের এক সদস্য বলেই পুলিশ মনে করছে। ওই দলে আরও সদস্য রয়েছে বলে পুলিশের অনুমান। বাকিদের ধরতে অভিযান শুরু করছে পুলিশ।

ব্যারাকপুর কমিশনারেটের ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (‌জোন ১) কে কান্নান জানান, ধৃতদের জেরা করে আর কোথায় এমন প্রতারণা করেছে তারা, তা জানার চেষ্টা চলছে। চার জনকে জেরা করে উঠে এসেছে আরও তথ্য। ধৃতেরা জানিয়েছে, বেশ কয়েক মাস ধরে এ ভাবেই প্রতারণা চালাচ্ছিল তারা। মঙ্গলবার ব্যারাকপুর আদালতে তোলা হলে ধৃতদের তিন দিনের পুলি‌শ হেফাজত হয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন