Baguiati

Baguiati: ভারা থেকে পড়ে জখম তিন শ্রমিক, হাত ছিন্ন এক জনের

মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনায় বাগুইআটির সাহাপাড়ার ওই নির্মীয়মাণ আবাসনের মালিকপক্ষের দাবি, নির্মাণ সংস্থার ঠিকাদারের গাফিলতি রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২২ ০৬:৪৭
Share:

প্রতীকী চিত্র।

সুরক্ষা-জাল না লাগিয়েই চলছিল নির্মাণকাজ। যা করতে গিয়ে চারতলা থেকে নীচে পড়ে গেলেন তিন নির্মাণ শ্রমিক। তাঁদের আঘাত গুরুতর। এক জনের একটি হাত শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়েছে। রাতে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই শ্রমিকের অস্ত্রোপচার হয়। মঙ্গলবার দুপুরের এই ঘটনায় বাগুইআটির সাহাপাড়ার ওই নির্মীয়মাণ আবাসনের মালিকপক্ষের দাবি, নির্মাণ সংস্থার ঠিকাদারের গাফিলতি রয়েছে। তবে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হবে কি না, তা স্পষ্ট করেননি তাঁরা।

Advertisement

বিধাননগর পুর এলাকায় নির্মীয়মাণ ওই প্রকল্পে দু’টি টাওয়ার তৈরি হচ্ছে। সেখানে দিন দশেক আগে কাজে যোগ দেন মুর্শিদাবাদের বাসিন্দা আনসারুল শেখ, বাসিরুদ্দিন, কলিমুদ্দিন, নুর হোসেন-সহ কয়েক জন। পুলিশ জানিয়েছে, বহুতলের পিছনের টাওয়ারের চারতলায় তাঁরা ভারা বেঁধে কাজ করার সময়েই তিন জন পড়ে যান। গুরুতর জখম হন সকলেই। হাত আলাদা হয়ে যায় নুরের। নির্মাণ সংস্থার লোকজনই তাঁদের হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতাল সূত্রের খবর, নুরের হাত জোড়া লাগানোর জন্য অস্ত্রোপচারের চেষ্টা করা হলেও সেটি আদৌ জোড়া লাগবে কি না, তা নিয়ে সন্দিহান চিকিৎসকেরা।

প্রশ্ন উঠেছে, কেন ঠিকাদার সংস্থা বহুতলের গায়ে জাল লাগায়নি? স্থানীয়দের অভিযোগ, ওই নির্মাণস্থলে সব সময়ে জাল লাগানো হয় না।

Advertisement

নির্মাণ সংস্থার মালিক সুরজিৎ সাহার দাবি, ঠিকাদারের কাছে জাল, নিরাপত্তা-বেষ্টনী এবং শ্রমিকদের নিরাপত্তার সব সামগ্রী দেওয়া রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘কেন জাল লাগানো হয়নি, সেটা আমারও প্রশ্ন। কিন্তু ঠিকাদারের ফোন বন্ধ। তাঁর ভূমিকা নিয়ে পুলিশকেও জানানো হয়েছে। তিন জনকে সুস্থ করে তুলতে যা প্রয়োজনীয়, সব হচ্ছে।’’

তবে স্থানীয় ১০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা দু’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান প্রণয় রায় বলেন, ‘‘কার গাফিলতি দেখতে পুরসভাকে লিখিত আবেদন জানাব। বহুতলটি পাঁচ বছর ধরে হচ্ছে। সেখানে গিয়ে প্রোমোটার বা ঠিকাদারের খোঁজ পাওয়া যায়নি।’’

এ দিন আর জি করে গিয়ে দেখা গেল, ট্রমা বিভাগের একতলার শয্যায় মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে যন্ত্রণায় ছটফট করছেন আনসারুল। তাঁর কথায়, ‘‘কী ভাবে যেন উপর থেকে হুড়মুড়িয়ে পড়ে গেলাম।’’ কপালে ও কোমরে আঘাত নিয়ে ডিজিটাল এক্স-রে বিভাগের বাইরে ট্রলিতে শুয়ে যন্ত্রণায় কাতর বাসিরুদ্দিন বলেন, ‘‘বেল্ট লাগানো ছিল। ভারা বেঁধে কাজ করছিলাম। আচমকা ভারা সমেত পড়ে যাই। জাল ছিল না।’’ তাঁর দাদা কলিমুদ্দিনের কথায়, ‘‘নীচের দিকে একটি ভারায় দাঁড়িয়ে মশলা দিচ্ছিলাম ভাইকে। চোখের সামনে তিন জন সব সমেত পড়ে গেল।’’

এমন দুর্ঘটনা এড়াতে কলকাতা পুরসভা শ্রমিকদের জন্য নিরাপত্তা-বেষ্টনী, নির্মাণস্থল জাল দিয়ে ঘিরে রাখা, শ্রমিকদের বিষয়ে থানায় তথ্য প্রদান-সহ একাধিক বিষয় বাধ্যতামূলক করেছে। বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তীর দাবি, তাঁরাও কলকাতা পুরসভার বিধি অনুসরণ করেন। কৃষ্ণা বলেন, ‘‘ঠিকাদার, প্রোমোটারদের অধিকার নেই শ্রমিকদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলার। পুরসভা ওখানে প্রতিনিধি পাঠাবে। পুলিশের সঙ্গেও বসা হবে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তেফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন