দক্ষিণ দমদমে নাগরিকদের তথ্য ভাণ্ডার

খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, নাগরিকদের জন্ম তারিখ থেকে শুরু করে আধার কার্ডের নম্বর। ভোটার কার্ডের প্রতিলিপি, কোন বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের ১৮ বছর বয়স হচ্ছে, কোন নাগরিকের রক্ত কোন গ্রুপের— এমন সব তথ্যই জমা থাকবে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের অফিসে।

Advertisement

প্রবাল গঙ্গোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৮ ০০:৪৯
Share:

নাগরিকদের তথ্য সংগ্রহ করছে দক্ষিণ দমদম পুরসভা।

নতুন বছর শুরু হলেই লোকসভা ভোট ঘোষণা হতে পারে। ঘর গোছাতে লোকসভা ভোটের আগে দক্ষিণ দমদমে ইতিমধ্যে স্থানীয় নেতৃত্বের কিছু অদল-বদলও হয়েছে।
ঘটনাচক্রে ঠিক এই সময়েই দমদম পুরসভার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে নাগরিকদের নিয়ে ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরির কাজ চলছে। যার নাম দেওয়া হচ্ছে ‘সিটিজেন সার্চিং’। লোকসভা ভোটের আগে এই প্রচেষ্টাকে ভোটারদের সঙ্গে তৃণমূলের জনসংযোগ বাড়ানোর একটি মাধ্যম বলেই মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

কী থাকবে সেই ডেটা ব্যাঙ্কে?

খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, নাগরিকদের জন্ম তারিখ থেকে শুরু করে আধার কার্ডের নম্বর। ভোটার কার্ডের প্রতিলিপি, কোন বাড়িতে ছেলে-মেয়েদের ১৮ বছর বয়স হচ্ছে, কোন নাগরিকের রক্ত কোন গ্রুপের— এমন সব তথ্যই জমা থাকবে ওই ওয়ার্ডের কাউন্সিলরের অফিসে।

Advertisement

১৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায় আবার দক্ষিণ দমদম পুরসভার চেয়ারম্যান পারিষদও। ভোটের আগে ঘর গোছানোর বিষয়টি তিনি মানতে নারাজ। তাঁর পাল্টা দাবি, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, মন্ত্রী ব্রাত্য বসু সব সময়ে আমাদের মানুষের মধ্যে থেকে কাজ করার কথা বলেন। সব তথ্য হাতে থাকলে ওয়ার্ডের নাগরিকদের জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানানোরও সুযোগ থাকে। এক জন নাগরিকের রক্ত প্রয়োজন হলে তিনি অন্য কোথাও কেন
ছুটবেন? বরং আমিই তাঁকে প্রয়োজনীয় রক্তের গ্রুপের অন্য এক নাগরিকের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দেব। এর মধ্যে রাজনীতি আসছে কোথায়?’’ যাঁর ভাবনার ফল এটি, সেই ব্রাত্য বসু শুধু বলেন, ‘‘দক্ষিণ দমদম পুরসভাকে বলেছিলাম নাগরিকদের সম্পর্কে একটি ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরি করতে। ১৫ নম্বর ওয়ার্ড থেকে কাজ শুরু হচ্ছে। আগামী দিনে অন্যান্য ওয়ার্ডেও হবে। এটা জনসংযোগের উদ্দেশ্যে করা।’’

গত চার মাস ধরে এই ডেটা ব্যাঙ্ক তৈরির কাজ চলছে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে। সেখানকার প্রায় সাড়ে পাঁচ হাজার নাগরিকের সম্পর্কে বিশদ তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই ডেটা ব্যাঙ্ক একটি বিশেষ সফ্‌টওয়্যার ব্যবহার করা হচ্ছে। সেটি লিপিবদ্ধ নাগরিকদের পরিবারের ছেলে-মেয়েদের বয়স ১৮ বছর হওয়ার দিন কয়েক আগে থেকেই সঙ্কেত দেবে। তাতে ওই তরুণ-তরুণীদের নাম ভোটার তালিকায় তোলার ব্যবস্থাও কাউন্সিলরের অফিস থেকে করা হবে।

মন্ত্রী কিংবা কাউন্সিলর যা-ই বলুন, ভোটের আগে এই জনসংযোগ তৈরির উপায়টি তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে ওয়াকিবহাল মহল। তাদের দাবি, এলাকার কাউন্সিলর যদি কোনও কাউকে জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানান, বিবাহ বার্ষিকীতে ফুল পাঠান, তবে তাঁর প্রতি নাগরিকদের পক্ষ থেকে একটা দুর্বলতা তৈরি হবে। পাশাপাশি, প্রতিটি পরিবারের রাজনৈতিক মনোভাব সম্পর্কেও আন্দাজ করা সহজ হবে কাউন্সিলরের তরফে। কোন বাড়িতে নতুন ভোটার রয়েছেন, কোন পরিবারে কত ভোট রয়েছে— এমন সব হিসেব-নিকেশও করা যাবে। স্থানীয় এক তৃণমূল
নেতার কথায়, ‘‘নাগরিকদের সঙ্গে সারা বছর যোগাযোগ রেখে আমি যদি নিজের ভোটের হিসেব করি, তাতে অন্যায়ের কিছু নেই। আমি যদি ভাল ছাত্র হই, তবে কী ভাবে পরীক্ষায় নম্বর বাড়বে, তার চেষ্টা তো করবই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন