পুলিশের সামনেই শহরে চলছে টোটো

এমন খবরে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতায় টোটো পুরোপুরি নিষিদ্ধ। পুলিশেরই উচিত সে দিকে নজর দেওয়া। অভিযোগকারীরা আমাদের জানালে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Advertisement

মেহবুব কাদের চৌধুরী

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:২৬
Share:

থানায় আটক টোটো। —নিজস্ব চিত্র

নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কলকাতা পুলিশের এলাকাতেই রমরমিয়ে চলছে টোটো। কাশীপুর, বি টি রোডেই অবাধে এই টোটো চলছে বলে সেখানকার বাসিন্দাদের অভিযোগ। এমনকি পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার ফলেই এমনটা ঘটছে বলেও অভিযোগ স্থানীয় মানুষের।

Advertisement

বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুলিশ টোটো ধরে আনলেও পরে টাকার বিনিময়ে ছেড়ে দেয়। এমন দাবি করে শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ড ও কাশীপুর থানা— দু’ জায়গার তিন পুলিশকর্মীর বিরুদ্ধে বাসিন্দারা নবান্ন-সহ কলকাতা পুলিশের বড় কর্তাদের কাছে অভিযোগ করেছেন।

বরাহনগরে টোটো চলছে বহু দিন থেকেই। সেটি রাজ্য পুলিশের এলাকা। সম্প্রতি টোটোর দাপট দেখা যাচ্ছে কলকাতা পুলিশ এলাকার কাশীপুরেও। অভিযোগ,বরাহনগর থেকে কাশীপুর থানা এলাকায় কাশীনাথ দত্ত রোড ও কাশীপুর রোডের মোড়, রতনবাবুর ঘাট কিংবা প্রামাণিক ঘাট রোডে টোটো ঢুকে পড়ছে বলে পুলিশের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন অভিযোগকারীরা। কাশীপুর থানা এলাকায় চলাচল করা টোটো আটক করে কাশীপুর থানায় নিয়ে আসা হয়। নিয়ম মতো আটক হওয়া টোটোগুলিকে পুরোপুরি সিল করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পাঠিয়ে দিতে হবে। কিন্তু অভিযোগ, কাশীপুর থানায় আসার পরে ওই সমস্ত টোটোকে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে না পাঠিয়ে বেশির ভাগই ছেড়ে দেওয়া হয়।

Advertisement

এমন খবরে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন পরিবহণমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর কথায়, ‘‘কলকাতায় টোটো পুরোপুরি নিষিদ্ধ। পুলিশেরই উচিত সে দিকে নজর দেওয়া। অভিযোগকারীরা আমাদের জানালে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

পরিবহণ দফতর সূত্রের খবর, সেন্ট্রাল মোটর ভেহিক্‌লস আইন অনুযায়ী, ঘণ্টায় ২৫ কিলোমিটারের বেশি গতিবেগে চলা গাড়ির ইলেকট্রিকের ইঞ্জিনের ক্ষমতা ২৫০ ওয়াটের বেশি হলেই তার জন্য রেজিস্ট্রেশন নম্বরের প্রয়োজন। গাড়ির সামনে ও পিছনে রেজিস্ট্রেশন নম্বর প্লেট থাকা বাধ্যতামূলক। চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকাটাও বাধ্যতামূলক। ফলে টোটো কিংবা ট্রাই সাইকেল মোটর ভেহিক্‌ল আইনের আওতায় পড়ে না। পশ্চিমবঙ্গের জেলা শহরগুলিতে

রমরমিয়ে টোটো চললেও কলকাতা শহরে টোটো চলাচলের অনুমতি দেয়নি পরিবহণ দফতর।

যদিও এই অভিযোগ প্রসঙ্গে শ্যামবাজার ট্র্যাফিক গার্ডের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কলকাতা পুলিশ এলাকায় টোটো ঢুকলেই আমরা তা তৎক্ষণাৎ আটক করে ডাম্পিং গ্রাউন্ডে পাঠিয়ে দিই। কিন্তু কাশীপুরের লাগোয়া বরাহনগর রাজ্য পুলিশের আওতায় পড়ে। ওই এলাকায় টোটো চললেও আমাদের কিছু করার থাকে না।’’ যদিও কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) দেবাশিস সরকার বলেন, ‘‘পরিত্যক্ত গাড়ি রাখার জন্য শহরে ডাম্পিং গ্রাউন্ডের জায়গার অভাব রয়েছে।’’ ডাম্পিং গ্রাউন্ডে জায়গার অভাবের জন্য কি বেআইনি টোটো আটক করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়েই ছেড়ে দেওয়া যায়? এর উত্তরে ডিসি (উত্তর) বলেন, ‘‘কাশীপুর রোড, বি টি রোডে টোটো চলাচল করে না বলেই শুনেছি। এমনটা ঘটে থাকলে আমরা নিশ্চয়ই তদন্ত করব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন