থমকে রবিবাসরীয় বিকিকিনি। বারাসতে।— নিজস্ব চিত্র
মাসের প্রথম রবিবার। অন্য সময় হলে ক্রেতারা হামলে পড়তেন বাজারে। নোট বাতিলের জেরে ডিসেম্বরের প্রথম রবিবারের বাজারও কার্যত নিরাশ করল ব্যবসায়ীদের।
লেক মার্কেটের মাছ ব্যবসায়ী অজয় দে রীতিমতো হতাশ। বলেন, ‘‘নোট বাতিলের ২৬ দিন কেটে গিয়েছে। বাজারে নতুন ৫০০ টাকার নোটের দেখা নেই। তা না এলে বাজার জমবে কী করে!’’
গত তিনটি রবিবার বাজার খারাপ গিয়েছে। অনেকের আশা ছিল, বেতন পেয়ে মাসের প্রথম রবিবারে ভিড় জমবে। কিন্তু লেক মার্কেট, ল্যান্সডাউন মার্কেট কিংবা উত্তরে মানিকতলা বাজারে গিয়ে অন্য ছবি ধরা পড়ল।
রবিবার ছিল বিয়ের দিনও। লেক মার্কেটের অজয়বাবু গত বছর এই মরসুমে দিনে অন্তত ৭টি বিয়েতে মাছ সরবরাহের বরাত পেয়েছিলেন। এ বার সর্বসাকুল্যে দু’টি অর্ডার এসেছে। ৪ ডিসেম্বর একটি বিয়েবাড়ির অর্ডার পেয়েছিলেন মাছ ব্যবসায়ী মহাদেব পাল। কিন্তু তা বাতিল কের দেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘দিন পাঁচেক আগে পার্টি পুরনো নোট দেবে বলেছিল। কিন্তু বাতিল নোট নিয়ে কী করব?’’
রবিবার কয়েকটি পুরনো ৫০০ টাকার নোট নিয়েছেন ল্যান্সডাউনের মাছ ব্যবসায়ী কিশোর সাউ। তাঁর কথায়, ‘‘পুরনো নোট নিয়ে আসায় ৪ ও ১৩ তারিখের তিনটি কেটারিংয়ের অর্ডার ফিরিয়ে দিয়েছি। তাই এ বার ব্যবসাটাই জমেনি।’’ চেকে টাকা দিয়ে তিনটি কেটারিং সংস্থা মাছ নেবে বললেও রাজি হননি ল্যান্সডাউনের বিক্রেতা নেপাল দাস। তাঁর কথায়, ‘‘ব্যাঙ্কে টাকা তুলতে পারব না। চেক নিয়ে কী করব? নগদ টাকা চাই।’’
কেটারিং সংস্থার থেকে এখনও বিয়ের কোনও অর্ডারই পাননি শ্যামবাজারের এক মাংস বিক্রেতা। জানান, বাঁধাধরা খদ্দেররাও পর্যাপ্ত পরিমাণে মাংস কিনছেন না। আগে যিনি গড়ে এক কেজি কিনতেন, এখন তিনি মেরেকেটে ৫০০ গ্রাম কিনছেন। ল্যান্সডাউন মার্কেটের মুরগির মাংস বিক্রেতা মহম্মদ নাকিব আলিরও একই অভিজ্ঞতা। তাঁর কথায়, ‘‘একটি হোটেল আমার থেকে রোজ ১০ কেজি মাংস কিনত। এখন কিনছে ৫ কেজি করে।’’