মাত্র সাত মিটার চওড়া রাস্তা। মেরেকেটে দু’টি গাড়ি যাওয়ার জায়গা রয়েছে। এয়ারপোর্ট দু’নম্বর যশোর রোডের সেই রাস্তাতেই বুধবার গভীর রাতে লরি বিকলের জেরে বৃহস্পতিবার সকালে চরম দুর্ভোগের শিকার হলেন সাধারণ মানুষ। সকাল পৌনে ৯টা নাগাদ রাস্তা থেকে বিকল লরি সরাতে সক্ষম হয় পুলিশ। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে আরও ঘণ্টাখানেক লেগে যায়।
স্থানীয় সূত্রের খবর, রাত আড়াইটে নাগাদ গুরুদ্বারের উল্টোদিকের রাস্তায় একটি কলকাতামুখী পাথর বোঝাই লরির পিছনের যন্ত্রাংশ ভেঙে যায়। এর পরেই বিপত্তির সূত্রপাত। পুলিশের দাবি, রাত আড়াইটে নয়, ভোর ৪টে নাগাদ লরি বিকল হয়েছিল। পূর্ত দফতর সূত্রের খবর, যশোর রোডের ওই অংশটি সঙ্কীর্ণ।
কলকাতা এবং বারাসতগামী দু’টি লেন মিলিয়ে মোট ১৪ মিটার চওড়া। কলকাতামুখী সাত মিটার চওড়া রাস্তায় আবার পূর্ত দফতর কাজ করছে। ফলে ওই রাস্তাতেই লরি বিকল হওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। সকালে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে থাকে।
কলকাতামুখী রাস্তায় গাড়ির লাইন মাইকেলনগর ছাড়িয়ে যায়। যশোর রোডের ধাক্কায় সাতসকালে হাঁসফাঁস করতে থাকে ভিআইপি রোডও।
বারাসতগামী রাস্তায় তেঘরিয়া পর্যন্ত সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়ে। রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্সও গাড়ির লাইনে দাঁড়িয়ে থাকে দীর্ঘক্ষণ। সকালে কাজে যোগ দিতে এসে যানজটে আটকে পড়েন এয়ারপোর্ট ট্র্যাফিক গার্ডের কর্মীরা। সাধারণ মানুষের মতোই হেঁটে গন্তব্যে পৌঁছন তাঁরা।
ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাথায় হাত তাঁদেরও। সঙ্কীর্ণ যশোর রোডে গাড়ির চাপ সামলাতে ঘটনাস্থলের কাছের কাট আউট দিয়ে এক দফায় বারাসতগামী গাড়ি, অন্য দফায় কলকাতাগামী গাড়ি ছাড়া হয়। বিমানবন্দরে ভিতর দিয়ে যে রাস্তাটি আড়াই নম্বর গেটের কাছে ওঠে, এ দিন সেটি স্বস্তি-সড়কের কাজ করে। তবে সেই রাস্তা এবং দমদমের ইটালগাছার রাস্তাতেও এই যানজটের প্রভাব পড়ে।
তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্মী দোলতলার বাসিন্দা অনীশ কর বলেন, ‘‘মাইকেলনগর থেকে হেঁটে এক নম্বরে পৌঁছেছি। সেখানে থেকে নাগেরবাজার হয়ে অফিস।’’ যাত্রীদের প্রশ্ন, রাতে খারাপ হওয়া গাড়ি সরাতে সকাল হল কেন?’’ তবে রোদে দাঁড়িয়ে পুলিশকর্মীদের যানজট সামলানোর ভূমিকারও এ দিন তাঁরা প্রশংসা করেছেন।
গাড়ি সরাতে দেরি প্রসঙ্গে বিধাননগর সিটি পুলিশের এক কর্তা বলেন, ‘‘লরির পাথর না নামিয়ে গাড়িটি সরানো সম্ভব হচ্ছিল না। সে সব ব্যবস্থা করে গাড়ি সরাতে সময় লেগেছে। দ্রুত সে কাজ করে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করা হয়েছে।’’