মাদকের ফাঁদ পাতা কলেজেও

পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে আমন গুপ্ত (২৩), অসীম হাইত (২৪) এবং প্রীতম পাত্র (২৪) পেশাদার মাদক পাচারকারী। তাদের কাছ থেকে ৪০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছে, যার দাম আনুমানিক এক লক্ষ টাকা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০১৯ ০৩:৫৬
Share:

উদ্ধার হওয়া মাদক। নিজস্ব চিত্র

কেউ বিবিএ-র (ব্যাচেলর অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন) ছাত্র। কেউ বি-টেক ইলেকট্রিক্যাল। চাকরি করেন বেসরকারি সংস্থার উচ্চপদে। কেউ আবার অ্যাকাউন্ট্যান্সি অনার্স নিয়ে কলেজে পড়ছেন। শুক্রবার রাতে মাদক-পাচারচক্রে জড়িত সন্দেহে এমনই পাঁচ জনকে গ্রেফতার করল লালবাজারের মাদক-দমন শাখা। এঁদের সঙ্গেই ধরা পড়েছে আরও তিন মাদক কারবারি। অভিযোগ, তাদের হাত ঘুরেই মাদক পৌঁছে যেত কলেজে কলেজে। তার পরে তা চলে যেত পড়ুয়াদের কাছে।

Advertisement

পুলিশ জানায়, ধৃতদের মধ্যে আমন গুপ্ত (২৩), অসীম হাইত (২৪) এবং প্রীতম পাত্র (২৪) পেশাদার মাদক পাচারকারী। তাদের কাছ থেকে ৪০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার হয়েছে, যার দাম আনুমানিক এক লক্ষ টাকা। তারাই প্রথমে পুলিশের নজরে ছিল। বৃহস্পতিবার তাদের কাছ থেকেই মাদক কেনেন রৌনক জৈন (২৩), রৌনক সিংহ (২৯), লক্ষ্য আগরওয়াল (২৪), সায়ন বন্দ্যোপাধ্যায় (২৫) এবং অর্ঘ্যকমল বন্দ্যোপাধ্যায়েরা (২৫)। প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই ভবানীপুর থানায় নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। এ দিন আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক প্রত্যেককেই আগামী ১০ জুন পর্যন্ত জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

লালবাজারের এক কর্তা জানান, দক্ষিণ কলকাতায় একটি মাদক-পাচারচক্র ভোটের সময় থেকেই সক্রিয় হয়েছে বলে খবর ছিল। তদন্তে নেমে পুলিশ দেখে, মূলত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে যোগাযোগ রেখেই পড়ুয়াদের মাদক বিক্রি করা হচ্ছে। এর জন্য শরৎ বসু রোডের একটি পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন রাস্তা, একটি হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা এবং আশুতোষ কলেজের আশপাশের রাস্তাকে বেছে নেওয়া হয়েছিল। ওই পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘ফোনে ওই জায়গায় ক্রেতাদের আসতে বলে বেশ ভাল মানের হেরোইন চড়া দামে বিক্রি করা হত। কয়েক দিন নজরদারি চালিয়ে বৃহস্পতিবার রাত ১১টা নাগাদ হাতেনাতে পাঁচ জনকে ধরি। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে ওই রাতেই আশুতোষ কলেজের পাশের রাস্তা থেকে বাকি তিন জনকে পাওয়া যায়।’’

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, লক্ষ্য নামের ধৃত যুবক বিবিএ করছেন। হাওড়ায় এক আয়ুর্বেদিক সংস্থার দোকান রয়েছে তাঁদের। সায়ন অ্যাকাউন্ট্যান্সি অনার্সের ছাত্র। অর্ঘ্যকমল বি-টেক ইলেকট্রিক্যাল পড়েছেন। এখন একটি বেসরকারি সংস্থায় উচ্চপদে চাকরি করেন। রৌনক দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন। বড়বাজারে তাঁদের পেনের ব্যবসা রয়েছে। রৌনক সিংহের বাড়ি কালীঘাট এলাকায়। গাড়ির যন্ত্রাংশের ব্যবসা রয়েছে তাঁদের। পাঁচ জনেরই বাড়ির লোকেদের সঙ্গে কথা বলছেন তদন্তকারীরা। এক তদন্তকারী আধিকারিকের কথায়, ‘‘পাঁচ জনই অনুতপ্ত। ওঁদের রিহ্যাবে পাঠানো হতে পারে। মূল অভিযুক্ত তিন জনকে জেরা করে আরও কয়েক জনকে দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন