ফাইল চিত্র।
কলকাতা বিমানবন্দরের ট্রলি নিয়ে বিস্তর অভিযোগ রয়েছে যাত্রীদের। চেয়ে পাওয়া যায় না। বহু ট্রলিই ভাঙা। অনেকগুলির আবার চাকা খারাপ।
একই কারণ দেখিয়ে এ বার হাত গুটিয়ে নিল ট্রলির ঠিকাদার সংস্থাও। ‘সেঞ্চুরি ভেঞ্চার’ নামে পটনার ওই সংস্থার কর্মীরাই কলকাতা বিমানবন্দরে ট্রলি পরিষেবা দিচ্ছিলেন। পরিষেবা বলতে, বিমানবন্দরের বাইরে ও ভিতরে যাত্রীরা যেখানে ট্রলি ফেলে রেখে যান, সেখান থেকে ট্রলি নিয়ে গিয়ে বিমানবন্দরের বাইরে ও কনভেয়ার বেল্টের সামনে সাজিয়ে রাখা যাতে টার্মিনালে ঢোকা-বেরোনোর সময়ে হাতের সামনে ট্রলি পান যাত্রীরা।
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা অতুল দীক্ষিত জানিয়েছেন, চুক্তি শেষ হওয়ার আগেই ওই ঠিকাদার সংস্থা চলে যাওয়ায় এনআইএস অস্থায়ী ভাবে ট্রলির দায়িত্ব নিয়েছে। চুক্তির ভিত্তিতে বিমানবন্দর পরিচ্ছন্ন রাখার কাজ করে এনআইএস। অতুল বলেন, ‘‘আমরা টেন্ডার ডেকে নতুন ঠিকাদার সংস্থা নিয়োগ করছি।’’ দু’তিন মাসের মধ্যে দু’হাজার নতুন ট্রলিও আনা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন অধিকর্তা।
পটনা থেকে ঠিকাদার সংস্থার প্রধান শশিকুমার চৌধুরী জানিয়েছেন, ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিমানবন্দরের সঙ্গে তাঁদের চুক্তি থাকলেও ২০ জুলাই থেকে তাঁরা কাজ বন্ধ করে দিয়েছেন। শশী জানিয়েছেন, এমনিতেই ট্রলি কম। তার উপরে বেশির ভাগই খারাপ। এ দিকে, নিত্যদিন যাত্রীর সংখ্যা বাড়ছে। হাতের কাছে ভাল ট্রলি না পেয়ে যাত্রীরা তাঁদের কর্মীদেরই গালিগালাজ করছেন। তার উপরে কম সংখ্যক ট্রলি সময়ের মধ্যে ঠিক জায়গায় রাখতে গিয়ে কর্মীদের উপরে অতিরিক্ত চাপ পড়ছিল। তাতে আপত্তি করছিলেন তাঁরা।
শশী জানিয়েছেন, ওই চুক্তিতে তাঁদের লোকসান হচ্ছিল। চুক্তির সময়ে ৩২০০ ট্রলি থাকবে বলে কথা হয়েছিল। চুক্তি অনুযায়ী, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তাঁদের কোনও টাকা দিতেন না। ট্রলিতে বিজ্ঞাপন দিয়ে তা থেকে টাকা রোজগার করার কথা ছিল সংস্থার। বিজ্ঞাপন থেকে ট্রলি-পিছু ৫০০ টাকা পাওয়া যেত। শশীর কথায়, ‘‘২০১৬ সালের সেপ্টেম্বরে চুক্তির শুরুতে দেখি, মাত্র ১৮০০ ট্রলি কাজ করছে। এখনও পর্যন্ত সেই ট্রলির সংখ্যা বাড়েনি। প্রতি মাসে কর্মীদের বেতন এবং পিএফ বাবদ খরচ হচ্ছিল ১৫ লক্ষ টাকা। আয় হচ্ছিল তার চেয়েও কম।’’
পটনা, গুয়াহাটি, রাঁচী-সহ বিভিন্ন বিমানবন্দরে একই পরিষেবা দেন শশী। এই সমস্যা গুয়াহাটি ছাড়া আর কোনও বিমানবন্দরে নেই বলে জানিয়েছেন তিনি।