জলসা ঘিরে ঝামেলা, তপ্ত মনোহরপুকুর

বুধবার ছিল বাউল গানের অনুষ্ঠান। উদ্যোক্তা ছিলেন এলাকার বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শ্যামল দে ওরফে জুলি। শুক্রবার আবার ডিজে চালিয়ে জোর নাচা-গানার ব্যবস্থা করেন ওই ক্লাবের সম্পাদক বাপ্পা দাস।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৭ ০১:০৬
Share:

চুরমার: গোলমালে ভাঙচুর হওয়া গাড়ি। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র

শীতলা পুজোর অনুষ্ঠানে বাউল বনাম ডিজে-র লড়াই নিয়ে শুরু হয়েছিল বচসা। পরে তা গড়ায় মারামারিতে। যার জেরে রীতিমতো খণ্ডযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হল মনোহরপুকুর রোডের বস্তি এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাড়ার মধ্যে ঝামেলা শুরু হলেও পরে পাশের লকার মাঠ এলাকার ছেলেরা তাতে যোগ দেয়। ফলে ঝামেলা আরও ব়ড় আকার ধারণ করে। পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার গভীর রাতের এই মারামারিতে আহত প্রায় তিরিশ জন। লকার মাঠ থেকে চার জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে খবর, ওই এলাকার ভারতবিজয় ক্লাব প্রতি বছর বড় করে শীতলা পুজোর আয়োজন করে। সঙ্গে অনুষ্ঠানও। বুধবার ছিল বাউল গানের অনুষ্ঠান। উদ্যোক্তা ছিলেন এলাকার বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত শ্যামল দে ওরফে জুলি। শুক্রবার আবার ডিজে চালিয়ে জোর নাচা-গানার ব্যবস্থা করেন ওই ক্লাবের সম্পাদক বাপ্পা দাস। সূত্রের খবর, এলাকার কাউন্সিলর পারমিতা চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত তিনি।

ঠিক কী হয়েছিল এ দিন?

Advertisement

মনোহরপুকুর রোডের বাসিন্দারা বলছেন, রাত একটা নাগাদ অনুষ্ঠান যখন শেষের দিকে, তখন হঠাৎ জুলির দলবল ঝামেলা শুরু করে অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে। বাউল অনুষ্ঠানের চেয়ে ডিজে অনুষ্ঠান বেশি জনপ্রিয় হওয়াতেই ঝামেলা শুরু হয় বলে দাবি তাঁদের। অভিযোগ, জুলির দলবল পাশের লকার মাঠ থেকে বহিরাগতদের নিয়ে এসে এলাকায় ভাঙচুর চালায়।

লকার মাঠ এলাকার বাসিন্দাদের অবশ্য দাবি, তাঁরা অনুষ্ঠান দেখার জন্য ঘটনাস্থলে আগে থেকেই ছিলেন। তাঁরা কাউকে মারধর করেননি। ঝামেলায় জড়িয়ে পড়েন শুধু। মনোহরপুকুর রোডের বস্তির বাসিন্দা মিঠু হালদারের মাথায় পাঁচটা সেলাই পড়েছে মার খেয়ে। তিনি বলেন, ‘‘ওরা বেশ কিছু গাড়ি, মোটরবাইক ভাঙে, ঘরের ভিতরে ঢুকেও মারধর করে।’’

গোটা এলাকায় শাসক দলের আধিপত্য থাকলেও গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের সম্ভাবনার কথা বলছেন অনেকেই। যদিও শাসক দলের নেতারা এ কথা স্বীকার করছেন না। এলাকার কাউন্সিলর পারমিতা চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘এটা দুই পাড়ার ঝামেলা ছাড়া কিছু নয়। তবু পুলিশকে বলেছি,
তদন্ত করতে। যদি কেউ দোষী প্রমাণিত হয়, তা হলে শাস্তি হওয়া উচিত।’’ বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘এই ঝামেলায় কোনও রাজনীতি নেই। পাড়ার ছেলেপিলে নিজেদের মধ্যে পুজো-অনুষ্ঠান নিয়ে মারামারি করেছে। এতে কোনও দলীয় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন