বেআইনি পার্কিংয়ের জেরে বাড়ছে দুর্ঘটনা। পাশাপাশি রয়েছে যানজটের তাণ্ডব। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের এক্সপ্রেসওয়ে ও হাইওয়েগুলিতে চোখ রাখলেই দেখা যাবে সার দিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে ট্রাক।
এমনিতেই ঘন জনবসতিপূর্ণ এই শিল্পাঞ্চলে রাস্তা অনুযায়ী যানবাহনের সংখ্যা অনেক বেশি। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যান নিয়ন্ত্রণ করতে হিমসিম খায় পুলিশ। সোদপুর মুড়াগাছা থেকে কল্যাণীর দিক পর্যন্ত সিঙ্গল লেন। রাজ্য সড়ক বা হাইওয়ের ধার বরাবর কোনও অ্যাপ্রোচ রোড নেই, গাড়ি দাঁড় করানোর মতো জায়গাও নেই। ফলে রাস্তার উপরেই মালবাহী গাড়ি সার দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে। শিল্পাঞ্চলের কোনও শহরে মিটিং-মিছিল হলে তো আর কোনও কথাই নেই। তখন পুলিশই রাস্তার ধারে ট্রাক ও বড় ট্রাকগুলিকে দাঁড় করিয়ে রাখে। সরু রাস্তা আরও সরু হয়।
রাস্তার ধারে বেআইনি পার্কিং নিয়ে ব্যারাকপুরে সব থেকে বেশি অভিযোগ দায়ের করেছেন আইনজীবী তথা তৃণমূল নেতা সম্রাট তপাদার। সম্রাটবাবুর বক্তব্য, ‘‘দিনের বেলায় কিছু জায়গায় রাস্তার বেশ কিছুটা অংশ দখল করে দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকের জন্য দুর্ঘটনা ঘটে। রাতে তো অন্ধকারে অনেক সময়ে বুঝতেই পারা যায় না। তখনই দুর্ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে বহু বার অভিযোগ জানিয়েছি।’’
অভিযোগে যে বিশেষ কাজ হয়নি, তা দেখাই যায়। গত তিন-চার মাসে এই বেআইনি পার্কিং করা ট্রাকের জন্য এক্সপ্রেসওয়েতে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। ব্যারাকপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ ও প্রশাসনিক কারণে নাকা করা হয়। তখন ট্রাক বা মালবাহী গাড়ি ঢোকার জন্য নির্দিষ্ট কিছু সময় নির্ধারিত করতে হয়। ট্রাক টার্মিনালের মতো কিছু না থাকায় রাস্তার ধারেই ট্রাক দাঁড়িয়ে যায়।’’
তবে মহকুমা প্রশাসনের কর্তারা মেনে নিয়েছেন, যে হারে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের শহরগুলিতে জনবসতি এবং গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে, তাতে ট্রাক টার্মিনালের প্রয়োজনীয়তা আছে। ব্যারাকপুরের মহকুমাশাসক পীযূষ গোস্বামী বলেন, ‘‘ব্যারাকপুরে একটি টার্মিনালের প্রয়োজন আছে। যে ভাবে গাড়ির সংখ্যা বাড়ছে, তাতে প্রতি কিলোমিটার যেতে সময় বেশি লাগছে। মূলত হাইরোডগুলিতে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা হলে ভাল হয়। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য পরিবহণ দফতরকে বলা হবে।’’