গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম কেটে কোটি কোটি টাকা লুঠ করেছে আন্তঃরাজ্য দুষ্কৃতী-দল। তাদের মতো প্রযুক্তির জ্ঞান, যন্ত্রপাতি সব দুষ্কৃতীর নেই। কিন্তু এটিএম লুঠের সাধ তো আছে। কাউকে খুনজখম না করেও লক্ষ লক্ষ টাকা হাতে আসতে পারে একটি মাত্র এটিএম ভেঙেই। এ বার তার নিদর্শন দেখা গেল খাস কলকাতাতেই। অপরাধে হাতেখড়ি দিতে দুই দুষ্কৃতী বেছে নিয়েছিল এটিএম-ই। শাবল দিয়ে সেটির একাংশ ভেঙেও ফেলেছিল তারা। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ধরা পড়ে যায় তারা।
শুক্রবার ভোরে ঘটনাটি ঘটে ডায়মন্ড হারবার রোড ও মোমিনপুর রোডের মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের এটিএমে। ধৃতদের নাম মহমম্দ আনিস ও উমা রায়। পেশায় গাড়িচালক ওই দুই যুবক খিদিরপুরের বাসিন্দা। পুলিশ জানায়, এটিএমের নীচের অংশের পাশাপাশি সিসিটিভিও ভেঙে ফেলেছিল তারা। ঠিক যেমনটা করেছিল গ্যাস কাটার দিয়ে এটিএম ভেঙে টাকা লুঠ করার দল।
দুষ্কৃতীরা সফল না হলেও এ দিনের ঘটনা ফের দেখিয়ে দিয়েছে রক্ষীবিহীন এটিএমের বিপদ কতটা। গোয়েন্দাপ্রধান দেবাশিস বড়াল বলেন, ‘‘এটিএম ভেঙে বার বার টাকা লুঠের ঘটনা ঘটলেও সেখানে কোনও নিরাপত্তারক্ষী থাকেন না। আমরা বিভিন্ন ব্যাঙ্ক-কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে বহু বার জানিয়েছি। কোনও কাজ হয়নি।’’ গোয়েন্দারা এ-ও বলেছিলেন, সব এটিএমে রক্ষী মোতায়েন সম্ভব না হলে ব্যাঙ্কগুলি এমন কোনও বৈদ্যুতিন ব্যবস্থা চালু করুক, যাতে এটিএম ভাঙতে গেলেই বিপদঘণ্টি সতর্ক করবে স্থানীয় থানা ও লালবাজারকে। হয়নি সেই ব্যবস্থাও।
শুক্রবার যে এটিএম ভাঙার চেষ্টা হয়, সেখানেও নিরাপত্তারক্ষী ছিলেন না। ঘটনাচক্রে এক ব্যক্তি সব দেখতে পেয়ে ১০০ ডায়ালে ফোন করে খবর দেন। তবে সব সময়ে যে অপরাধ কারও চোখে পড়বে এবং কোনও সচেতন ব্যক্তি পুলিশকে খবর দেবেন— এমনটা সম্ভব নয়।
লালবাজারের এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘এটিএম ভেঙে লক্ষ লক্ষ টাকা গায়েব করার ঘটনা এখন প্রায় রোজনামচা হয়ে গিয়েছে।
হয়তো তাতেই উৎসাহিত হয়েই অন্য দুষ্কৃতীরা এটিএম ভাঙার চেষ্টা করেছিল।’’