মেয়ে জন্মানোয় কি ‘খুন’ বধূ? সন্দেহে ধৃত স্বামী-শাশুড়ি

পুলিশ সূত্রের দাবি, অসীমা রায় (২৩) নামে ওই তরুণীর গলায় প্রথমে দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে বালিশ দিয়ে ওই বধূর মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করা হয় বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৯
Share:

অসীমা রায়

কন্যাসন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন তিনি। অভিযোগ, সেই ‘অপরাধেই’ গত সাত মাস ধরে তাঁর উপরে চলছিল নিয়মিত নির্যাতন। প্রথমে মানসিক, পরে শুরু হয় শারীরিক অত্যাচার। মানিকতলায় শ্বশুরবাড়ি থেকে এক বধূর মৃতদেহ উদ্ধারের পরদিন এমনই তথ্য এল পুলিশের হাতে। সোমবার তদন্তকারীরা জানান, ওই মৃত্যু স্বাভাবিক নয়। তরুণীকে খুন করা হয়েছে বলেই ধারণা পুলিশের।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের দাবি, অসীমা রায় (২৩) নামে ওই তরুণীর গলায় প্রথমে দড়ি দিয়ে ফাঁস লাগানো হয়। পরে মৃত্যু নিশ্চিত করতে বালিশ দিয়ে ওই বধূর মুখ চেপে ধরে শ্বাসরোধ করা হয় বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ। খুনের সঙ্গে যুক্ত থাকার অভিযোগে বধূর স্বামী বিশ্বজিৎ রায় এবং শাশুড়ি শ্যামলী রায়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ দিন দু’জনকেই শিয়ালদহ আদালতে তোলা হয়। সরকারি কৌঁসুলি অরূপ চক্রবর্তী জানিয়েছেন, দু’জনকেই আগামী ১৫ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রবিবার দুপুরে মানিকতলা থানা এলাকার শ্রীকৃষ্ণ কলোনিতে শ্বশুরবাড়ির তিনতলার একটি ঘরে অসীমাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পাওয়া গিয়েছে জানিয়ে ফোন যায় পুলিশের কাছে। আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ওই বধূকে মৃত বলে ঘোষণা করা হলে তদন্তে নামে পুলিশ। পুলিশ সূত্রের খবর, মেয়ের মৃত্যুর খবর পাওয়ার পরেই রবিবার অসীমার বাবা গৌতম প্রামাণিক জামাই এবং মেয়ের শাশুড়ির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। তাঁর অভিযোগ, অসীমার শাশুড়ি শ্যামলীর মদতেই তাঁর মেয়েকে খুন করেছেন বিশ্বজিৎ।

Advertisement

অসীমার পরিবার সূত্রে খবর, বছর তিনেক আগে পাশেরই পাড়ার ছেলে, পেশায় লেদ মিস্ত্রি বিশ্বজিতের সঙ্গে বিয়ে হয় অসীমার। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের দাবিতে ওই বধূর উপরে অত্যাচার চলত। কিন্তু তা বেড়ে যায় সাত মাস আগে অসীমা এক কন্যাসন্তানের জন্ম দিলে। বধূর বাবা জানান, মৃত্যুর আগের দিনও অসীমা বাবা-মায়ের গিয়েছিলেন। তখনও তিনি বাবাকে অত্যাচার করার কথা জানান। কিন্তু পরদিনই যে এত বড় ঘটনা ঘটে যাবে, তা তাঁরা ভাবতে পারেননি বলেই বক্তব্য অসীমার বাবার।

তরুণীর বাবার অভিযোগ পাওয়ার পরেই বিশ্বজিৎকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে পুলিশ। এরই সঙ্গে পড়শিদের অভিযোগ ছিল, অসীমার গলায় একটি দাগ রয়েছে। তারই মধ্যে পুলিশের হাতে এসে পৌঁছয় ময়না-তদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট। রিপোর্টে তরুণীর শ্বাসরোধ হওয়ার প্রমাণ মিলতেই পুলিশ গ্রেফতার করে দু’জনকে। এ দিকে, সোমবার ময়না-তদন্তের পরে অসীমার দেহ তাঁর পরিজনেদের হাতে তুলে দেয় পুলিশ। ওই বধূর সাত মাসের শিশুকন্যাও আপাতত অসীমার মায়ের কাছেই রয়েছে বলে সূত্রের খবর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন