হাতেনাতে: বাজেয়াপ্ত হওয়া ডলার। নিজস্ব চিত্র
মায়ানমার থেকে কখনও মণিপুর, কখনও মিজোরামের সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে সোনা ঢুকছে ভারতে। সেই সোনা ধরাও পড়ছে। ডিরেক্টরেট অব রেভেনিউ ইন্টেলিজেন্স (ডিআরআই) অফিসারেরা সম্প্রতি কলকাতা থেকে সেই চোরাই সোনা বাজেয়াপ্ত করেছেন। গ্রেফতার করেছেন ছ’জনকে।
তদন্তে জানা যাচ্ছে, সোনা ভারতে বিক্রি করে সেই টাকা কোনও না কোনও পথে মায়ানমার চলে যাচ্ছে। সোমবার সকালে কলকাতা থেকে মায়ানমার যাওয়ার পথে বিশাল অঙ্কের ডলার-সহ ধরা পড়ে গেলেন দুই বিমানযাত্রী। মনে করা হচ্ছে, চোরাই পথে আসা সোনা কলকাতা-সহ অন্য শহরে বিক্রি করে যে টাকা পাওয়া গিয়েছে, তারই একটি অংশ নিয়ে তাঁরা মায়ানমারে ফিরছিলেন।
বাংলাদেশ বিমানের উড়ান ধরতে তাঁরা কলকাতা বিমানবন্দরে এসেছিলেন। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, ঢাকা থেকে মায়ানমার যাওয়ার কথা ছিল ওই দুই যাত্রীর। তাঁদের কাছ থেকে ১ লক্ষ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার পাওয়া গিয়েছে। ভারতীয় মুদ্রায় যার মূল্য ১ কোটি ২৪ লক্ষ টাকারও বেশি। এত বিশাল অঙ্কের বিদেশি মুদ্রা নিয়ে সাম্প্রতিক কালে কোনও যাত্রী কলকাতা বিমানবন্দরে ধরা পড়েনি বলেই বিমানবন্দর সূত্রের খবর। যে দুই যাত্রীর কাছ থেকে এই ডলার ধরা পড়েছে, তাঁদের মধ্যে এক জন ৬৬ বছরের মহিলা ছিলেন। তাঁর নাম হাওয়া বিবি বলে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রের খবর, অন্য জন হাওয়া বিবির ভাইপো মাউং মেহেমুদ। দু’জনেই মায়ানমারের নাগরিক।
কলকাতা থেকে বিদেশ যাওয়ার পথে এখন চেক-ইন ব্যাগেজ আলাদা করে এক্স-রে করতে হয় না। চেক-ইন কাউন্টারে তা দিয়ে দিলে কনভেয়ার বেল্ট দিয়ে যাওয়ার সময়ে তার এক্স-রে হয়ে যায়। সোমবার সেই এক্স-রে মেশিনের মনিটরের সামনে বসেছিলেন এয়ার ইন্ডিয়ার সহযোগী সংস্থা এআইএটিএসএল-এর এক অফিসার। তিনিই দু’টি ব্যাগের মধ্যে নোট দেখে তা আটকান। পরে ওই দুই ব্যাগের মালিক হাওয়া ও মাউংকে আটকানো হয়। তাঁদের সামনে ব্যাগ খুলে ডলার বার করা হয়। দু’জনকে সোমবার সারা দিন ধরে জেরা করেছেন কলকাতা বিমানবন্দরের শুল্ক অফিসারেরা।
ডিআরআই সূত্রের খবর, মায়ানমার থেকে আসা প্রচুর চোরাই সোনা ধরা পড়ছে। আবার অনেক সোনা নজরদারি এড়িয়ে ঢুকেও পড়ছে। যাঁরা সোনা নিয়ে আসেন, তাঁদের কাজ শুধু সোনা পৌঁছে দেওয়া। সেই সোনা বিক্রির টাকা তাঁদের দেওয়া হয় না। একদল রয়েছেন, যাঁরা শুধু সোনা বিক্রির টাকা নিয়ে ফিরে যান মায়ানমারে। হাওয়া বিবি ওই দ্বিতীয় দলের সদস্যা। এক জন ষাটোর্ধ্ব মহিলাকে দেখে সাধারণ ভাবে সন্দেহ হবে না ভেবেই তাঁকে এই কাজে লাগানো হয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা।