মৌ মুখোপাধ্যায়
খাস কলকাতাতেই আবার জ্বরে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হল দুই মহিলার। দু’টি মৃত্যুই ডেঙ্গিতে বলে পরিবারের অভিযোগ। যদিও সরকারি ভাবে তা জানানো হয়নি।
ঝুমা অধিকারী (৩৪) নামে উল্টোডাঙার গৌরীবাড়ি লেনের এক গৃহবধূ রবিবার ভোরে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান। আর মৌ মুখোপাধ্যায় (২০) নামে যাদবপুরের লোটাস পার্কের বাসিন্দা এক কলেজপড়ুয়া এমআর বাঙুর হাসপাতালে মারা গিয়েছেন শনিবার দুপুরে।
ঝুমার স্বামী অমিত অধিকারীর অভিযোগ, পুরসভার ক্লিনিকের রক্তপরীক্ষায় স্ত্রীর রক্তে ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। কিন্তু হাসপাতালের ডেথ সার্টিফিকেটে ডেঙ্গির উল্লেখই নেই! অমিতবাবুর দাবি, বৃহস্পতিবার পুর ক্লিনিকে তাঁর স্ত্রীর রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়ে। শুক্রবার পুরকর্মীরাই ঝুমাকে জেবি রায় আয়ুর্বেদিক হাসপাতালে ভর্তি করান। অবস্থার অবনতি হওয়ায় শনিবার বিকেলে উল্টোডাঙার একটি এবং শ্যামবাজারের দু’টি নার্সিংহোমে ঘোরার পরে রাতে সল্টলেকের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় ঝুমাকে। রবিবার ভোরে সেখানেই মৃত্যু হয় তাঁর।
মৌয়ের বাবা তারক মুখোপাধ্যায়ের অভিযোগ, তাঁর মেয়ের রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গি ধরা পড়েছিল। বাঙুর হাসপাতালের একটি সূত্রেরও দাবি, মৌয়ের রক্তে এনএস-১ পজি়টিভ (ডেঙ্গির ভাইরাস) ছিল। এবং ডেঙ্গির ‘শক সিনড্রোম’-ও ছিল। ডেথ সার্টিফিকেটে কী লেখা হয়েছে, সেটা স্পষ্ট করে কেউ বলতে চাননি।
মেয়ে মৌ-কে হারিয়ে শোকার্ত বাবা। নিজস্ব চিত্র
দক্ষিণ কলকাতার একটি কলেজে উদ্ভিদবিদ্যার পড়ুয়া মৌয়ের মঙ্গলবার জ্বর ও হাল্কা মাথাব্যথা হয়েছিল। প্যারাসিটামল খাওয়ায় তা কমে যায় বলে জানান তাঁর বাবা তারকবাবু। গত বৃহস্পতিবার কলেজ থেকে ফেরার পথে মৌ ফের অসুস্থ হয়ে পড়েন। সন্ধ্যায় পাড়ার চিকিৎসককে দেখালে তিনি রক্ত পরীক্ষা করাতে বলেন। তারকবাবু জানান, রক্তপরীক্ষায় ডেঙ্গির কথা জানা যায় শুক্রবার। ওই চিকিৎসক ওষুধ দেন এবং বেশি করে জল খেতে বলেন। সে-রাতে মৌয়ের বমি হয়। প্রস্রাবের সঙ্গে রক্তক্ষরণ হওয়ায় প্রথমে তাঁকে বাঘা যতীন স্টেট জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। শনিবার ভোরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় আইসিইউয়ে স্থানান্তর করার জন্য মৌকে নিয়ে যাওয়া হয় এমআর বাঙুর হাসপাতালে। দুপুরে সেখানেই মারা যান ওই কলেজছাত্রী।