ফাইল চিত্র।
চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগে সোমবার দুপুরে হাজরার চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে ভাঙচুর চালায় এক রোগীর পরিবার। মারধর করে কর্তব্যরত চিকিৎসককেও। সোমবারের সেই ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেফতার করল ভবানীপুর থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম সঞ্জয় দাস এবং অভিজিৎ দাস।
পুলিশ জানায়, ৯৫ নম্বর টালিগঞ্জ রোডের বাসিন্দা, পেশায় অটোচালক, বছর তেত্রিশের গোপাল কয়ালকে সোমবার অসুস্থ অবস্থায় চিত্তরঞ্জন ক্যানসার হাসপাতালের বহির্বিভাগে নিয়ে যান তাঁর পরিবার। শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল তাঁর। অভিযোগ, চিকিৎসকেরা কেউই অসুস্থ গোপালকে দেখতে চাননি। এই অবস্থায় শ্বাসকষ্ট বাড়লে ওই রোগীকে ওয়ার্ডে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবার সূত্রের খবর, সেখানেই কয়েক মিনিটের মধ্যে মারা যান গোপাল।
এর পরই রোগীর পরিজনেরা পাঁচ তলার মেল ওয়ার্ডে ঢুকে ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। উল্টে দেওয়া হয় খালি বেড। মারধর করা হয় চিকিৎসক-কর্মীদেরও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভবানীপুর থানা থেকে বিশাল পুলিশ বাহিনী পৌঁছয় ও বিক্ষোভকারীদের বাইরে বার করে দেয়। এর পরেই পুলিশ হাতেনাতে দুই যুবককে গ্রেফতার করে।
সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ কিংবা ভাঙচুরের ঘটনা নতুন নয়। কিন্তু কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন এই হাসপাতালের ওয়ার্ডে ঢুকে তাণ্ডব চালানোর ঘটনাকে তুচ্ছ বলে উড়িয়ে দিতে চাইছেন না হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
মঙ্গলবার হাসপাতালের তরফে জানানো হয়, সোমবারের ঘটনা খতিয়ে দেখার জন্য পাঁচ সদস্যের ‘ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং’ কমিটি তৈরি করা হয়েছে। অভিজ্ঞ চিকিৎসক, ক্যানসার গবেষকেরা রয়েছেন ওই কমিটিতে। গোপালের পরিবারের তরফে অভিযোগ উঠেছিল, বহির্বিভাগে সার্জারি বিভাগের প্রধান চিকিৎসক মিয়াজ আলম রোগী ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেন। এমনটা সত্যিই হয়েছে কি না, অথবা গোপালের চিকিৎসায় গাফিলতি ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখে দশ দিনের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে কমিটি। হাসপাতালের অধিকর্তা তাপস মাজি বলেন, ‘‘অনেক সময় রোগীর পরিজন ও চিকিৎসকদের মধ্যে যোগাযোগের সমস্যা তৈরি হয়। চিকিৎসকদের কথা রোগীর পরিজনেরা ঠিক বুঝতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে তেমন কিছু হয়েছিল কিনা সেটাও দেখা হবে।’’ কমিটির রিপোর্ট পাওয়ার পরেই হাসপাতালের তরফে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।