দুর্ঘটনায় মৃত ২ পুলিশকর্মী

নিয়মরক্ষকই ভাঙলেন নিয়ম। আর তার মাসুল গুনতে হল জীবন দিয়ে। পথ নিরাপত্তায় প্রচারিত ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচী রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্বে পুলিশ প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ মে ২০১৭ ০১:১৫
Share:

বিদায়: মৃত দুই পুলিশকর্মীকে শ্রদ্ধা। বুধবার। নিজস্ব চিত্র

নিয়মরক্ষকই ভাঙলেন নিয়ম। আর তার মাসুল গুনতে হল জীবন দিয়ে। পথ নিরাপত্তায় প্রচারিত ‘সেফ ড্রাইভ, সেভ লাইফ’ কর্মসূচী রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে দেওয়ার দায়িত্বে পুলিশ প্রশাসন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সেই নিয়মভাঙায় অভিযোগের আঙুল ওঠে সাধারণ মানুষের দিকে। কিন্তু শত প্রচারেও শুধু জনসাধারণই নন, হুঁশ ফেরেনি পুলিশের অন্দরেও। বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের উপর খলিসাকোটার কাছে মঙ্গলবার রাতের পথ দুর্ঘটনা সেটাই প্রমাণ করল।

Advertisement

ওই দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে এয়ারপোর্ট থানার কনস্টেবল সুব্রত মণ্ডল (২৮) ও সিভিক ভলান্টিয়ার নইম আলির (২৩)। চালকের আসনে ছিলেন আরেক সিভিক ভলান্টিয়ার গগন হালদার। বাইপাসের বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তিনি।

পুলিশ সূত্রে খবর, ওই তিন জন বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়েতে টহল দিচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ১১টায় মোটরবাইকে চেপে খলিসাকোটার কাছে চাঁদপুর কলোনিতে ঢোকার মুখেই ঘটে বিপত্তি। মোটরবাইকের সামনের একটি ম্যাটাডর গতি কমিয়ে দেয়। আচমকাই চালকের বাঁ দিকের দরজা খুলে যায়। তাতেই নিয়ন্ত্রণ হারান গগন। ছিটকে পড়েন তিন জন। গগন রাস্তার বাঁ দিকে পড়েন। সেই সময় মোটরবাইকের পিছনে ছিল ষোলো চাকার একটি ট্রেলার। তারই চাকায় পিষ্ট হয়ে যান অন্য দু’ জন। তিন জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় দমদম হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত্যু হয় সুব্রত ও নইমের।

Advertisement

ঘাতক ট্রেলারটি আটক করা হলেও চালক পলাতক। যে ম্যাটাডরের জন্য দুর্ঘটনা ঘটেছে খোঁজ মেলেনি সেটিরও।

পুলিশ সূত্রে খবর, বাঁকুড়ার বাসিন্দা সুব্রতর তিন মাস পরেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। নইমের বাড়ি এয়ারপোর্ট থানা এলাকার বাঁকড়ায়। দু’ জনই এয়ারপোর্ট থানায় কর্মরত গত দু’বছর ধরে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের কথায়, সামনের ম্যাটাডরটি রাস্তার মাঝে দাঁড় করিয়ে আচমকা দরজা খুলে দেওয়াতেই এই দুর্ঘটনাটি ঘটে। ব্রেক কষলেও নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে বাইকটি পিছলে যায়। অন্য দিকে, একটি মোটরবাইকে সওয়ার তিন পুলিশকর্মী। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, চালক ছাড়া অন্য দু’ জনের মাথায় হেলমেট ছিল না। কিন্তু কেন?

পুলিশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, হঠাৎই একটি সূত্র মারফৎ এক অভিযুক্তের খোঁজ মিলেছিল। তাই ঘটনাস্থলে দ্রুত পৌঁছনোর তাড়ায় হয়তো হেলমেট পরেননি ওই দু’ জন। এক পুলিশ কর্তার কথায়, ‘‘যে কোনও পরিস্থিতিতে পুলিশকে সচেতন থাকতে হবে।’’

এ দিকে, ময়না তদন্তের পর বুধবার বিকেলে সুব্রত এবং নইমের দেহ এয়ারপোর্ট থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন বিধাননগরের পুলিশ কমিশনার জ্ঞানবন্ত সিংহ-সহ উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা এবং অন্য পুলিশকর্মীরাও। সেখানেই শেষ শ্রদ্ধা জানান হয় সুব্রত এবং নইমকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন