ছাত্রাবাসে ফেরার পথে দুর্ঘটনা, জখম দু’জন

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত আড়াইটে নাগাদ সোহেল ও সিদ্দিকি স্কুটার নিয়ে নিউ টাউনের ছাত্রাবাসে ফিরছিলেন। স্কুটার চালাচ্ছিলেন সোহেল।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ জুন ২০১৮ ০২:৪৬
Share:

প্রগতি ময়দান থানা চত্বরে দুর্ঘটনাগ্রস্ত অ্যাপ-ক্যাব এবং স্কুটার। নিজস্ব চিত্র

তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাঁরা নিয়ম ভেঙে রাতে নির্দিষ্ট সময়ের পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস থেকে বেরিয়েছিলেন। গভীর রাতে সেখানে ফেরার সময়ে অ্যাপ-ক্যাবের ধাক্কায় গুরুতর জখম হলেন ওই দুই পড়ুয়া। শনিবার ঘটনাটি ঘটেছে ইএম বাইপাসে ক্যাপ্টেন ভেড়ির কাছে। আহতদের নাম আমির সোহেল ও মীর আবু বকর সিদ্দিকি। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই দুই ছাত্র থাকেন বিশ্ববিদ্যালয়েরই নিউ টাউন ক্যাম্পাসের ভিতরে ছাত্রাবাসে। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে ছাত্রাবাসের নজরদারি নিয়ে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার রাত আড়াইটে নাগাদ সোহেল ও সিদ্দিকি স্কুটার নিয়ে নিউ টাউনের ছাত্রাবাসে ফিরছিলেন। স্কুটার চালাচ্ছিলেন সোহেল। চিংড়িঘাটা থেকে সায়েন্স সিটির দিকে আসার সময়ে একটি অ্যাপ-ক্যাব স্কুটারে ধাক্কা মারে। ছিটকে পড়েন দু’জন। পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে প্রথমে ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে অবস্থার অবনতি হওয়ায় সোহেল ও সিদ্দিকিকে নিয়ে যাওয়া হয় বাইপাসের ধারে এক বেসরকারি হাসপাতালে। প্রাথমিক ভাবে জানা গিয়েছে, কারও মাথায় হেলমেট ছিল না। এক জন মত্ত অবস্থায় ছিলেন। এই ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে অ্যাপ-ক্যাবের চালক বিশাল বাল্মীকিকে।

জানা গিয়েছে, সোহেল আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্সের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র। সিদ্দিকি ইলেকট্রিক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে এম টেক পড়ছেন। শনিবার রাতে তাঁরা নিউ টাউনের ছাত্রাবাস থেকে গিয়েছিলেন চিংড়িঘাটায়, বিশ্ববিদ্যালয়েরই আর একটি ছাত্রাবাসে।

Advertisement

নিউ টাউনে আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে কুড়ি তলার ছাত্রাবাস। নিয়ম অনুযায়ী, রাত ৮টার পরে ছাত্রাবাসের গেট বন্ধ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ, দিনের পর দিন ওই সময়ের পরে ছাত্রাবাসে ঢোকা-বেরোনো চলছেই। শনিবার রাতে সোহেল ও সিদ্দিকি যে ভাবে প্রথমে ছাত্রাবাসের গেট ও তার পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের গেট পেরিয়ে স্কুটার নিয়ে বেরিয়েছিলেন, তাতে কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীদের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।

আবাসিকদের বড় অংশের অভিযোগ, হস্টেল কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে শিকেয় উঠেছে পঠনপাঠন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকও অভিযোগ করেছেন, ‘‘যথাযথ নজরদারি না থাকায় পড়ুয়াদের কেউ কেউ মাঝেমধ্যেই গভীর রাতে অবাধে হস্টেল ছেড়ে বেরিয়ে যান। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কঠোর হলে শনিবারের দুর্ঘটনা এড়ানো যেত।’’

ছাত্রাবাসে নজরদারির অভাবের অভিযোগ পরোক্ষে মেনে নিয়েছেন সেখানকার চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম। তাঁর কথায়, ‘‘সদ্য দায়িত্বে এসেছি। দীর্ঘদিন ধরেই পড়ুয়াদের একাংশ হস্টেলের নিয়ম মানছেন না বলে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক হবে। ছাত্রাবাসের সামনে সিসি ক্যামেরাও বসানো হবে।’’ আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নুরসেদ আলি বলেন, ‘‘গভীর রাতে ওই দুই ছাত্র কী ভাবে রক্ষীদের নজর এড়িয়ে ক্যাম্পাস ছেড়ে বাইরে গেলেন, তা নিয়ে তদন্ত হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
আরও পড়ুন