Drowning Death

পরিবারের সঙ্গে গঙ্গাস্নানে নেমে তলিয়ে গেলেন দুই তরুণ

স্নান তখন শেষ হয়ে গিয়েছিল। একটি পাত্রে জল ভরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। তাই জল ভরতে যায় নীতীশ। তখনই পাত্রটি হাত ফসকে জলের ভিতরে চলে যায়। পাত্রটি ধরতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০২৩ ০৬:৩০
Share:

প্রচেষ্টা: দুই ভাইয়ের খোঁজে নামানো হয়েছিল ডুবুরি। বুধবার, প্রিন্সেপ ঘাট সংলগ্ন গোয়ালিয়র ঘাটে।  ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।

ঠাকুরদার মৃত্যু হয়েছে ৪৫ দিন আগে। তাই পারিবারিক রীতি মেনে বুধবার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে গঙ্গাস্নান করতে গিয়েছিলেন দুই ভাই। গঙ্গায় নেমে তলিয়ে গেলেন দু’জনেই। ডুবুরি নামিয়ে তল্লাশি চালিয়েও সন্ধ্যা পর্যন্ত তাঁদের হদিস মেলেনি। দক্ষিণ বন্দর থানায় রাতে নিখোঁজ ডায়েরি করতে হয়েছে নিখোঁজদের পরিবারকে।

Advertisement

পুলিশ জানিয়েছে, ওই দুই ভাইয়ের নাম সানি সাউ এবং নীতীশ সাউ। সানির বয়স ১৯ বছর এবং নীতীশের ১৭ বছর। খিদিরপুরের বাবুবাজার এলাকায় বাড়ি তাঁদের। বাবা দানেশ্বর সাউয়ের একটি ঠান্ডা পানীয়ের দোকান রয়েছে এলাকায়। শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধী দানেশ্বরও পরিজনদের সঙ্গে দুই ছেলেকে নিয়ে এ দিন সকালে প্রিন্সেপ ঘাট সংলগ্ন গোয়ালিয়র ঘাটে যান।

স্নান তখন শেষ হয়ে গিয়েছিল। একটি পাত্রে জল ভরে নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল তাঁদের। তাই জল ভরতে যায় নীতীশ। তখনই পাত্রটি হাত ফসকে জলের ভিতরে চলে যায়। পাত্রটি ধরতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, জলের নীচে আর সিঁড়ির তল পায়নি নীতীশ। ভাইকে ডুবতে দেখে এগিয়ে যান সানি। তাঁরও একই অবস্থা হয়। কয়েক মুহূর্তের মধ্যেই জলে তলিয়ে যান দু’জনে।

Advertisement

সানিদের আত্মীয় পঙ্কজ সাউ বলেন, ‘‘ভাইকে ডুবতে দেখে সানি এগিয়ে গিয়েছিল। কেউই সাঁতার জানত না। পরিবারের সকলে ওই দৃশ্য দেখে সাহায্যের জন্য চিৎকার করলেও কেউ এগিয়ে আসেননি। ঘাটে কোনও পুলিশ বা উদ্ধারকারী ছিলেন না।’’ পঙ্কজদের অভিযোগ, খবর পেয়েও ঘণ্টাখানেক বাদে পুলিশ যায়। ডাকা হয় ডুবুরিকে।কয়েক মিনিটের জন্য জলে নেমেই তিনি উঠে পড়েন জোয়ার আসছে বলে। দুপুরে ফের ডুবুরি নামানো হয়। কিন্তু জলের নীচে কিছুতে আঘাত লেগে তাঁর নাক দিয়ে রক্ত বেরোতে থাকলে তিনি উঠে পড়েন। আর কাউকে নামানো হয়নি।

ঘটনাস্থলে যখন পৌঁছনো গেল, তখন বেলা বেড়ে গিয়েছে। ঘাটের ওই অংশে গঙ্গাস্নান করতে আসা লোকের ভিড়ও বেড়েছে। শোনা গেল, দিনকয়েক আগেই সিঁড়ির নীচের অংশে পলি পরিষ্কারের কাজ হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের অনুমান, সিঁড়ির পরে যে কিছু নেই, সেটাই হয়তো দুই তরুণ ঠাহর করতে পারেননি।

প্রশ্ন উঠছে, যে ঘাটে প্রতিদিন এত মানুষ আসেন, সেখানে কেন নজরদারি থাকবে না? কেন সিঁড়ির নীচের মাটি কাটার কথা জানিয়ে কোনও সতর্কবার্তা ব্যানার দিয়ে টাঙানো থাকবে না? এলাকাটি কলকাতা পুলিশের দক্ষিণ বন্দর থানার অন্তর্গত। পুলিশ জানিয়েছে, ঘাটের ওই অংশে পুরসভার নিযুক্ত দু’জন ব্যক্তি কাজ করেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন