প্রতিবেশী হওয়ার সুযোগ নিয়ে দুই যুবক ঘনিষ্ঠ হওয়ার চেষ্টা করেছিল এক গৃহবধূর সঙ্গে। তার সঙ্গে শারিরীক সম্পর্কও তৈরি করতে চেয়েছিল। কিন্তু ওই বধূ তাতে কান দেননি। অভিযোগ, এর বদলা নিতে গৃহবধূর চেহারার সঙ্গে মিল আছে, এমন এক জনের পর্নোগ্রাফির ভিডিও ক্লিপ তৈরি করে তা ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয় ওই দু’জন। এতেও দমে না গিয়ে দুই সন্তানের মা ওই গৃহবধূ লালবাজারের সাইবার ক্রাইম বিভাগের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ করেন মানবাধিকার কমিশনেও। তার পরেও অভিযুক্তেরা অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে বলে অভিযোগ।
ঘটনার সূত্রপাত গত বছরে অক্টোবরে। বারুইপুর থানা এলাকার দুই যুবক, অভিযুক্ত রাজু দলুই এবং সেবাকর ভুঁইয়া ওই মহিলার সঙ্গে বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করে। প্রথমে তারা গ্যাসের সংযোগের ব্যবস্থা করে দেবে বলে মহিলার কাছ থেকে একটি ছবি চায়। সরল বিশ্বাসে নিজের একটি ছবি তাদের দেন ওই মহিলা। তার পরে সরাসরি শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেয় তারা। মহিলার দাবি, শুনেই তিনি তা নাকচ করে দেন। এ বছরের গোড়ায় মহিলাকে স্থানীয় বিজ্ঞাপনের মডেলের কাজ করারও ‘অফার’ দেয় রাজু ও সেবাকর। এ নিয়ে বারবার ওই দুই যুবক তাঁর কাছে আসার চেষ্টা করায় সন্দেহ হয় গৃহবধূর। তিনি প্রস্তাব খারিজ করে দেন। সর্বশেষ কিছু উপহার দিয়ে তাদের স্বার্থসিদ্ধি করার চেষ্টাও কাজে আসেনি।
পুলিশ সূত্রে খবর, এর কিছু দিন পরেই নিজেদের আসল রূপ দেখাতে শুরু করে রাজু ও সেবাকর। গ্যাসের সংযোগের জন্য দেওয়া সেই ছবির আদলে একটি নীল ছবির ভিডিও ক্লিপ ওই মহিলার বলে রটিয়ে তা ইন্টারনেটে ছেড়ে দেয় তারা। মোবাইলে এমএমএস তৈরি করে তা ছড়িয়ে দেয় গ্রামের বেশ কিছু যুবকের কাছে। ঘটনাটি জানাজানি হতেই কিছু দিন চরম অস্বস্তিতে কাটান ওই মহিলা। পাড়ায় বেরোতেই খুবই অসুবিধে হতো বলে জানান তিনি। একটা সময়ে সম্মানহানির ভয়ে আর বাড়ির বাইরে পা-ই রাখতে পারছিলেন না তিনি। ঘটানর জেরে বন্ধ হয়ে যায় তাঁর দুই সন্তানের স্কুলে যাওয়া। মহিলার দাবি, ভিডিওতে যাকে দেখা যাচ্ছে তার সঙ্গে চেহারার খানিকটা মিল থাকলেও সেটা তিনি নন। তাঁর ছবি বিকৃত করে তৈরি করা হয়েছে সেটি। তাঁর আইনজীবীও এমনই দাবি করেছেন। মহিলার স্বামী, শ্বশুরবাড়ির লোকজনও প্রথমে তাকে সন্দেহের চোখেই দেখেছিলেন। পরে যখন তাঁরা বিষয়টি খানিকটা আন্দাজ করতে পারেন, তখনই পাশে দাঁড়ান। লিখিত অভিযোগ করা হয় প্রশাসনের সব স্তরে। ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।