শাসকদলের বাসকর্মী ইউনিয়নের পাঁচ নেতার বিরুদ্ধে তোলাবাজি এবং স্বেচ্ছাচারের অভিযোগ তুলে সোমবার দিনভর হাওড়া-নাকতলা রুটে মিনিবাস বন্ধ রাখলেন বাসকর্মীরা। এর জেরে এ দিন সকাল থেকে ভোগান্তির শিকার হন বহু যাত্রী। সরকারি বাসের জন্য অপেক্ষায় না থেকে অনেকেই অটো বা মেট্রো ধরতে ছোটেন।
নাকতলা মিনিবাস ইউনিয়নের অভিযুক্ত পাঁচ নেতা স্বপন মুখোপাধ্যায়, বাবাই ঘোষ, সোমনাথ সাহা, অমর সাহা এবং কায়ুম আলি মণ্ডলের বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগে এ দিন বিক্ষোভ দেখান মিনিবাস কর্মীরা। এর জেরে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ওই রুটের ২৬টি মিনিবাসের একটিও রাস্তায় নামেনি। বিক্ষোভের জেরে আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত নাকতলা মিনিবাস ওয়ার্কারস ইউনিয়নের অফিস ছেড়ে ওই অভিযুক্তেরা পালিয়ে যান বলেও অভিযোগ। শেষে নতুন কমিটি তৈরি করার আশ্বাস পেলে কাজে ফেরেন বাসকর্মীরা। এ দিন বিক্ষুব্ধদের মধ্যে থেকে নতুন পাঁচ জনকে বেছে নিয়ে একটি যৌথ কমিটি তৈরি করে দিয়েছেন স্থানীয় তৃণমূলনেতা তথা নাকতলা মিনিবাস ইউনিয়নের সভাপতি ভাস্কর দাম। তিনি বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের মধ্যে সোমনাথ বাদে বাকিদের দায়িত্ব থেকে সরানো হয়েছে। সোমনাথকে বলা হয়েছে, প্রতি মাসে ইউনিয়নের খরচের হিসেব টাঙিয়ে দিতে। এর পরেও অভিযোগ এলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
বাসকর্মী ইউনিয়ন সূত্রে খবর, অভিযুক্ত ওই পাঁচ নেতা আদতে বাস কর্মী। স্বপন মিনিবাস চালক এবং বাবাই, সোমনাথ, অমর, কায়ূম কন্ডাক্টর। কিন্ত গত সাত বছর ধরে ইউনিয়নের তরফে বাসরুট দেখাশোনার দায়িত্ব পেয়ে তাঁরাই হয়ে ওঠেন নেতৃস্থানীয়। অভিযোগ, মিনিবাসের মালিক থেকে বাসকর্মী— সকলের উপরেই ‘দাপট’ দেখাতেন ওই পাঁচ নেতা। বাসকর্মীদের অভিযোগ, ডিউটি পাইয়ে দেওয়ার নামে টাকা আদায় করা হত। কেউ টাকা না দিতে চাইলে তাঁকে বসিয়ে দেওয়া হত। মিনিবাস মালিকদের একাংশেরও অভিযোগ, ওই পাঁচ জনের আবদার মেটাতে না পারলে চলত হুমকি। প্রতিবাদ করলে হেনস্থা করা হত বা কর্মী তুলে নেওয়া হত।
এ প্রসঙ্গে অভিযুক্ত বাবাই বাসকর্মীদের অসন্তোষের কথা স্বীকার করে বলেন, ‘‘কর্মীরাই রুট বন্ধ করেছে। সব অভিযোগ মিথ্যে। বিষয়টি উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি।” আর এক অভিযুক্ত সোমনাথ বলেন, “যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তাঁদের মধ্যে বাবাই এবং কায়ূমকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।” কায়ুমের দাবি, ‘‘আমি নতুন, আমার কথায় কোনও সিদ্ধান্ত হত না। তা-ও আমায় বাদ দেওয়া হয়েছে।’’ ক্ষমতায় থাকার জন্য তাদের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা অপবাদ’ দেওয়া হচ্ছে বলে পাল্টা অভিযোগ করেছেন অমর ও স্বপন।