গণেশ পুজোর বিসর্জনে ডিজে-র তাণ্ডবে কেঁপেছে মহানগরী। কিন্তু কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের পুজো সমন্বয় বৈঠকে উঠলই না সেই ডিজে প্রসঙ্গ। এ নিয়ে পুজো কমিটিগুলিকে কোনও কড়া বার্তাও দিলেন না পুলিশ কমিশনার। এই পরিস্থিতিতে অনেকেরই প্রশ্ন, বিসর্জনে পুলিশ ডিজে বক্স (আদতে পেল্লায় মাপের সাউন্ড বক্স) নিয়ে নরম অবস্থান নিচ্ছে, এমন বার্তাই পরোক্ষে ছড়াবে না তো?
বুধবার কলামন্দিরে পুজো কমিটিগুলির পাশাপাশি পুরসভা, সিইএসসি, দমকলকে নিয়ে সমন্বয় বৈঠক ডেকেছিল লালবাজার। এর আগে নেতাজি ইন্ডোরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এক প্রস্ত সমন্বয় বৈঠক করেছেন। এ দিন শহরের অনেক পুজো কমিটিরই আশা ছিল, গণেশ পুজোর বিসর্জনে শব্দদৈত্যের তাণ্ডবের পরে পুলিশ কড়া বার্তা শোনাবে। কিন্তু তা না হওয়ায় আশাহত অনেকেই।
উত্তর কলকাতার এক পুজোকর্তা বলছেন, ‘‘পুলিশ এ নিয়ে কিছুই বলল না। যে ক’টি পুজো কমিটি বলার সুযোগ পেয়েছিল, তারাও মুখ খুলল না।’’ যদিও লালবাজারের এক কর্তার বক্তব্য, ‘‘ডিজে এমনিতেই বেআইনি। এ নিয়ে নতুন কিছু বলার নেই। বিসর্জনে ডিজে দেখলে বাজেয়াপ্ত করা হবে।’’ যদিও পুলিশের একাংশের দাবি, বিসর্জনে গোলমাল বাধতে পারে, এই আশঙ্কায় প্রভাবশালী বহু পুজোকে ছাড় দেওয়া হয়।
এ দিনের বৈঠকে অনুমতি পাওয়া নিয়েও অভিযোগ করেছে শহরের দু’টি পুজো কমিটি। কালীঘাটের একটি পুজো কমিটি বৈঠকে জানিয়েছে, সব অনুমতি থাকা সত্ত্বেও স্থানীয় থানা ও শাসক দলের তরফে অসহযোগিতা করা হচ্ছে। বিডন স্ট্রিট এলাকার মহিলা পরিচালিত একটি পুজো কমিটির অভিযোগ, তিন বছর আগে হঠাৎ তাদের পুলিশ ও দমকলের অনুমতি প্রত্যাহার করা হয়েছে। অথচ, তাদের সব রকম নথিই রয়েছে। এ সব অভিযোগ খতিয়ে দেখে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ। কসবার বোসপুকুর এলাকার দু’টি পুজো কমিটির অভিযোগ, পুরসভা তাদের এলাকায় রাস্তা খুঁড়ে রেখেছে। ফলে মণ্ডপ তৈরিতে সমস্যা হচ্ছে।
পুলিশ এ দিন জানিয়ে দিয়েছে, পুজোর ক্ষেত্রে সব নির্দেশিকা মেনে চলতেই হবে। গণেশ পুজোর প্রেক্ষিতে বিসর্জনে প্রতিমার উচ্চতা নিয়েও সতর্ক করা হয়েছে। জোর দেওয়া হয়েছে অগ্নিসুরক্ষা ও মণ্ডপের ভিতরে সিসিটিভি রেকর্ডিং নিয়েও।