ডুবন্ত তরুণীকে বাঁচালেন লঞ্চকর্মী

প্রশান্তবাবুর অভিযোগ, এ দিন ওই তরুণী তাঁর হাত ছাড়িয়ে গঙ্গায় ডুবে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘উনি বারবার হাত ছাড়িয়ে নিচ্ছিলেন। আর বলছিলেন ‘আমাকে বাঁচাচ্ছেন কেন, আমি মরতে চাই’। কিন্তু আমি ছাড়িনি। অনেক চেষ্টা করে ওঁকে উদ্ধার করি।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০১৭ ০২:৪৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

তখন দুপুর ১টা। বাগবাজারের দিক থেকে হাওড়ায় আসছিল হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির একটি লঞ্চ। হাওড়া ব্রিজের নীচ দিয়ে যাওয়ার সময়ে হঠাৎই যাত্রী ও কর্মীরা দেখলেন, মাঝগঙ্গায় হাবুডুবু খাচ্ছেন এক মহিলা। চিৎকার শুরু করেন তাঁরা। তখনই লঞ্চে থাকা বয়া নিয়ে গঙ্গায় ঝাঁপ দেন এক কর্মী প্রশান্ত ঘোষ। বেশ কিছুক্ষণ চেষ্টার পরে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে লঞ্চে তোলেন।

Advertisement

ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার। বছর চৌত্রিশের ওই তরুণীকে প্রথমে হাওড়া ফেরিঘাটে হুগলি নদী জলপথ পরিবহণ সমবায় সমিতির অফিসে নিয়ে আসা হয়। পরে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতা পুলিশের উত্তর বন্দর থানায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পরে পুলিশের দাবি, পদ্মপুকুরের বাসিন্দা ওই মহিলা শারীরিক অসুস্থতা ও পারিবারিক অশান্তির কারণে হাওড়া ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হতে গিয়েছিলেন।

এ দিন হাওড়া ফেরিঘাটে দাঁড়িয়ে প্রশান্তবাবু জানান, এর আগেও অনেক লঞ্চকর্মী হাওড়া ব্রিজ থেকে ঝাঁপ দেওয়া মহিলা বা পুরুষকে উদ্ধার করেছেন। তাঁরা কেউ বাধা দেননি। কিন্তু প্রশান্তবাবুর অভিযোগ, এ দিন ওই তরুণী তাঁর হাত ছাড়িয়ে গঙ্গায় ডুবে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। প্রশান্তবাবু বলেন, ‘‘উনি বারবার হাত ছাড়িয়ে নিচ্ছিলেন। আর বলছিলেন ‘আমাকে বাঁচাচ্ছেন কেন, আমি মরতে চাই’। কিন্তু আমি ছাড়িনি। অনেক চেষ্টা করে ওঁকে উদ্ধার করি।’’

Advertisement

পুলিশ জানায়, ওই মহিলার থেকে ফোন নম্বর নিয়ে তাঁর স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি চলে আসেন হাওড়া ফেরিঘাটে। গঙ্গায় কিছু ঘটলে যেহেতু কলকাতা পুলিশকে খবর দেওয়া দস্তুর, তাই খবর যায় উত্তর বন্দর থানাতেও। সেখানকার অফিসারেরা এসে ওই তরুণী ও তাঁর স্বামীকে থানায় নিয়ে যান।

ওই মহিলার স্বামী বলেন, ‘‘মাসখানেক আগে ওঁর জরায়ুতে টিউমার অপারেশন হয়েছিল। তার পর পেটে যন্ত্রণা হত। মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছিল। এ দিন সকালে হাসপাতালে যাওয়ার নাম করে বাড়ি থেকে বেরোয়। ভাবতে পারিনি, ও এই জন্য হাওড়ায় এসেছিল।’’ কলকাতা পুলিশের এক কর্তা জানান, ঘটনার পরে মহিলা কথা বলার মতো অবস্থায় ছিলেন না। শারীরিক অসুস্থতা শুধু নয়, পারিবারিক অশান্তিতেও ভুগছিলেন তিনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন