হস্টেলে দেরির দায় নিয়ে ক্ষমা চাইছি: লোহিয়া

সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে উপাচার্য অনুরাধাদেবী বলেন, ‘‘হিন্দু হস্টেলের কাজে দেরি হয়েছে। যা ত্রুটি হয়েছে, তার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। ক্ষমাও চাইছি। হস্টেল ফের চালু করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা যে ফেঁসে রয়েছি, আশা করছি, সকলে সেটা বুঝবে। সকলে আমাদের সাহায্য করুক।’’ তবে সরকারি বিধির জটকেও এই দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন তিনি। আর কয়েকটা মাস সময় চেয়েছেন উপাচার্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৮ ০৫:২২
Share:

জরাজীর্ণ: জঙ্গলে ঢাকা হিন্দু হস্টেল। —নিজস্ব চিত্র।

প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও হিন্দু হস্টেল তিন বছরে বাসযোগ্য করে তুলতে পারেননি প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ওই দায় নিজের কাঁধে নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইলেন সেখানকার উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া।

Advertisement

সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে উপাচার্য অনুরাধাদেবী বলেন, ‘‘হিন্দু হস্টেলের কাজে দেরি হয়েছে। যা ত্রুটি হয়েছে, তার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। ক্ষমাও চাইছি। হস্টেল ফের চালু করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা যে ফেঁসে রয়েছি, আশা করছি, সকলে সেটা বুঝবে। সকলে আমাদের সাহায্য করুক।’’ তবে সরকারি বিধির জটকেও এই দীর্ঘসূত্রতার অন্যতম কারণ হিসেবে দায়ী করেছেন তিনি। আর কয়েকটা মাস সময় চেয়েছেন উপাচার্য।

লোহিয়া ক্ষমা চাইলেও ফের হিন্দু হস্টেলে ঢোকার আগে পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকেই হিন্দু হস্টেল বলে ঘোষণা করেছেন পড়ুয়ারা! ক্যাম্পাসে ঢোকার মুখে ফুল দিয়ে লেখা হয়েছে ‘হিন্দু হস্টেলে স্বাগত’। এসএফআই-সমর্থক শুভজিৎ সরকার বলেন, ‘‘হিন্দু হস্টেল ফেরত পাওয়ার আগে ক্যাম্পাসকে প্রতীকী হস্টেল বানিয়ে অবস্থান চলছে এবং চলবে। অন্য হস্টেলটি বাসযোগ্য নয়।’’ পড়ুয়াদের দাবি ছিল, হিন্দু হস্টেলের যে-অংশ মেরামত করা হয়েছে, সেখানে তাঁদের থাকতে দেওয়া হোক। উপাচার্য বলেন, ‘‘হিন্দু হস্টেল পড়ুয়াদের পক্ষে সব রকমের বিপন্মুক্ত বলে পূর্ত দফতর লিখিত ভাবে জানানোর আগে তা চালু করা যাবে না।’’

Advertisement

এ দিন ঐতিহ্যবাহী ওই হস্টেলে গিয়ে দেখা গেল, এক ও দুই নম্বর ওয়ার্ড মেরামত করা হয়েছে। যে-মেঝে ফুঁড়ে ইঁদুর বেরিয়ে এসেছিল, সারানো হয়েছে সেটি। কিন্তু বিদ্যুৎ ব্যবস্থা ও শৌচালয়ের কাজ শেষ হয়নি। দোতলার সিলিং থেকে কোনও কোনও জায়গায় জল পড়ছে।

তিন, চার ও পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ালে কিছুটা সিমেন্টের প্রলেপ পড়েছে। দুই ও তিন নম্বর ওয়ার্ডের সংযোগকারী কাঠের সেতু নড়বড় করছে। রান্নাঘরের উপরের অংশ ভাঙা। কাঠের সিঁড়িগুলিরও অবস্থা খারাপ। তিন নম্বর ওয়ার্ডে ডাঁই করে রাখা চেয়ার-টেবিল। শৌচালয়ের অবস্থাও তথৈবচ। ছ’নম্বর ওয়ার্ডের কাজ চললেও কার্নিস ভেঙে ঝুলছে!

হস্টেলের মাঠে অনেকটা সময় কাটত পড়ুয়াদের। সেই মাঠ এখন জঙ্গল। হিন্দু হস্টেলের আবাসিক ছিলেন ভারতের প্রথম রাষ্ট্রপতি রাজেন্দ্রপ্রসাদ। তবে উপাচার্যের প্রশ্ন, ‘‘হিন্দু হস্টেল নিয়ে এত সেন্টিমেন্ট কেন?’’ পরে নিজেই জানান, ওই সেন্টিমেন্টের সম্মানেই হস্টেল আবার চালু করার চেষ্টা চলছে।

প্রেসিডেন্সি সূত্রের খবর, চার মাস আগে হিন্দু হস্টেল সংস্কারের দায়িত্বে এসেছে পূর্ত দফতর। জঙ্গলের কিছু গাছ কাটা হয়েছে। অথচ উপাচার্য জানাচ্ছেন, দফতর আশ্বাস দিয়েছে, ৪-৫ মাসের মধ্যেই কাজ শেষ হবে। তার আগেও হতে পারে। কিন্তু সত্যিই কি সেটা সম্ভব? জবাব মেলেনি। এই বিষয়ে বক্তব্য জানতে পূর্ত দফতরের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার বিবেক ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন তোলেননি।

কলকাতা শহরের রোজকার ঘটনা, কলকাতার আবহাওয়া, কলকাতার হালচাল জানতে চোখ রাখুন আমাদের কলকাতা বিভাগে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন