ধ্বংসস্তূপে খোঁজাখুঁজিই সার, মিলল না কিছু

ঘটনার দিন বিকেল থেকেই ১৫২ জন বাসিন্দার ঠাঁই হয়েছে স্থানীয় বিকেসি কলেজের একতলার সাতটি ঘরে। এ দিন সকালে পুরসভার তরফে মিলেছে কলা ও পাউরুটি। দুপুরের খাবার পাওয়া গিয়েছে স্থানীয় গুরুদ্বার থেকে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৪৮
Share:

সবহারা: পুড়ে যাওয়া ঝুপড়িতে। বুধবার, ডানলপে। ছবি: সজল চট্টোপাধ্যায়

এক্সপ্রেসওয়ের ধারে কালো ছাইয়ের স্তূপ থেকে কিছু খুঁজে বার করার চেষ্টা করছিলেন বছর পঞ্চাশের সইদুল সর্দার। অনেক ক্ষণ পরে হাল ছেড়ে রাস্তার এক পাশে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘মেয়েটার জন্য একটা সোনার দুল, রুপোর নাকছাবি বানিয়েছিলাম। একটা স্টিলের কৌটোয় রাখা ছিল। পোড়া কৌটোটাই শুধু পেলাম। আর কিছু পেলাম না।’

Advertisement

মঙ্গলবার দুপুর থেকে পোড়া কাঠ, টিন, টালি, ইটের ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে ডানলপ পার্কিং এলাকার ঝুপড়ির প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা। ৪৪টি ঘর পুড়ে ছাই। বুধবার সকাল থেকে সইদুলের মতো সেই ছাই ঘেঁটে চলেছেন আরও অনেকে। আশা, যদি কিছু মেলে। সেই আশাতেই সারা দুপুর নিজের পোড়া ঘরে ছাইয়ের স্তূপ সরিয়ে টাকা জমানোর ভাঁড় খুঁজেছেন সুমিত্রা সোনার। বললেন, ‘‘দিন আনি দিন খাই। কোনও মতে রোজ ভাঁড়ে টাকা রাখতাম। কোথায় যে গেল?’’ আগুনের জেরে ৩০টির মতো গাছও পুড়ে গিয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বেলঘরিয়া এক্সপ্রেসওয়ের ধারে তিনটি বাতিস্তম্ভ।

ঘটনার দিন বিকেল থেকেই ১৫২ জন বাসিন্দার ঠাঁই হয়েছে স্থানীয় বিকেসি কলেজের একতলার সাতটি ঘরে। এ দিন সকালে পুরসভার তরফে মিলেছে কলা ও পাউরুটি। দুপুরের খাবার পাওয়া গিয়েছে স্থানীয় গুরুদ্বার থেকে। আর একটি সংস্থা দিয়েছে রাতের খাবার। পোশাকের ব্যবস্থা করেছেন কলেজের পড়ুয়ারাই। এ দিন সকাল থেকে শিবিরে গিয়ে দেখভাল করেন স্থানীয় কাউন্সিলর অঞ্জন পাল, দীপঙ্কর ভট্টাচার্যেরা।

Advertisement

স্থানীয় বিধায়ক তথা মন্ত্রী তাপস রায় বলেন, ‘‘সরকারি ত্রাণ-সহ সকলেই সহযোগিতা করছেন। সকলের নামের তালিকা করে নেওয়া হয়েছে। যাতে কেউ বঞ্চিত না হন।’’ ওই ঝুপড়ির বাসিন্দা মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী শান্তনু সোনার এ দিন পরীক্ষা দিতে গিয়েছে বলে জানান তার মা সরস্বতীদেবী। তিনি বলেন, ‘‘চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক সব বই দিয়েছেন। তা নিয়ে ছেলে বন্ধুর বাড়ি গিয়ে থাকছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন