পুলিশের উপস্থিতিতে দুই দলের মারামারি। নিজস্ব চিত্র
কেওড়াতলা মহাশ্মশানের কাছে শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি ভাঙার ঘটনায় বুধবার যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তাদের মধ্যে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েক জন পড়ুয়া ছিল। মূর্তি ভাঙার রাজনীতিকে ঘিরেই বৃহস্পতিবার উত্তপ্ত হয়ে ওঠে যাদবপুর। পুলিশের সামনেই মারামারিতে জড়িয়ে পড়ে একটি হিন্দুত্ববাদী সংগঠন ও বাম শিবির।
এই গোলমালের জেরে সন্ধ্যায় ওই এলাকায় চূড়ান্ত দুর্ভোগ পোহাতে হয় আমজনতাকে। ব্যাহত হয় যান চলাচল। পুলিশ জানায়, এই ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মারামারি থামাতে গিয়ে আহত হন কয়েক জন পুলিশকর্মীও। রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত এলাকায় উত্তেজনা ছিল। বাসিন্দাদের অভিযোগ, যাদবপুরে মূল রাস্তার এক দিকে গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গোলমাল চলায় হেঁটে যাওয়াও নিরাপদ ছিল না।
লালবাজারের খবর, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মূর্তি ভাঙচুর এবং তাতে কালি লেপে দেওয়ার প্রতিবাদে এ দিন সন্ধ্যায় যাদবপুরের ৮বি বাসস্ট্যান্ডের কাছে প্রতিবাদসভার ডাক দেয় ‘হিন্দুত্ব অস্তিত্ব রক্ষা কমিটি’ নামে একটি সংগঠন। অভিযোগ, ওই সংগঠনের পক্ষ থেকে হিন্দু সংহতি মঞ্চের নেতা তপন ঘোষ নিজের ফেসবুক পেজে বিক্ষোভের ডাক দিয়েছিলেন। সেই অনুযায়ী বিকেল থেকে ওই সংগঠনের সদস্যেরা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে গেরুয়া টি-শার্ট পরে উপস্থিত হতে শুরু করে। হাজির হয় এসএফআই, ডিওয়াইএফের কর্মী-সমর্থকেরাও। সেই ভিড়ে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের অতি-বাম রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত কয়েক জন পড়ুয়াও ছিলেন। ভিড়ে দেখা গিয়েছে কয়েক জন স্থানীয় তৃণমূল-সমর্থককেও। অচিরেই এসসি মল্লিক রোডের উপরে শুরু হয়ে যায় দু’পক্ষের মারামারি।
বামেদের অভিযোগ, হিন্দুত্ববাদীরা লেনিনের মূর্তি ভাঙতে হাজির হয়েছিল। মারধর ছাড়াও বামেদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, হিন্দুত্ববাদী সংগঠনের এক নেতাকে পুলিশ এলাকা থেকে সরিয়ে নিয়ে যেতে চাইলে সেই গাড়িতেও হামলা চালায় তারা। পরে বিরাট পুলিশবাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। গোলমাল থামার পরে ওই এলাকায় মিছিল করে বাম ছাত্র-যুবারা। কুশপুতুলও দাহ করে। ডিওয়াইএফের কলকাতা জেলা সম্পাদক ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘লেনিনের মূর্তি সংগ্রামের প্রতীক। গেরুয়া বাহিনী সেই মূর্তি ভেঙে গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চাইছে।’’
আরও পড়ুন: কেওড়াতলায় আক্রান্ত বিজেপি, দিলীপের মিছিল আটকে দিল পুলিশ
তবে গোলমাল সত্ত্বেও যান চলাচল খুব বেশি ব্যাহত হয়নি বলে পুলিশের দাবি। লালবাজারের একাংশ জানায়, যাদবপুরের ৮বি মোড় দিয়ে গাড়ি চলাচল কিছু ক্ষণ বন্ধ ছিল ঠিকই। তবে ঢাকুরিয়াগামী গাড়িগুলিকে সুকান্ত সেতু থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছিল।