ছাদ চুঁইয়ে জল এটিসি-র অফিসে

কলকাতা বিমানবন্দরের এটিসি ভবনের ন’তলায় এই টাওয়ারে এক সঙ্গে প্রায় ১০-১২ জন কর্মী থাকেন। তাঁদের মধ্যে এটিসি অফিসার যেমন থাকেন তেমনই আবহাওয়া বিশারদেরাও থাকেন। এই বর্ষায় সেই ঘরের ছাদ থেকেই ক্রমাগত জল চুঁইয়ে পড়ছে। সেই জল ধরে রাখতে বালতিও কেনা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মেঝেতে জল পড়ছে। আশঙ্কা, ওই জল যন্ত্রের উপরে পড়তে শুরু করলে সমস্যা হতে পারে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৮ ০২:২০
Share:

বেহাল: খুলে পড়েছে ছাদের টালি। সেখান দিয়ে ভিতরে জল ঢোকায় যন্ত্রপাতি খারাপ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কলকাতা বিমানবন্দরে। নিজস্ব চিত্র

ঝমঝম করে বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে জল চুঁইয়ে পড়ছে। চারপাশে রেডিও-বার্তার যন্ত্র, রেডার, রানওয়ের আলো নিয়ন্ত্রণের যন্ত্রাংশ, ফায়ার বেল, আবহাওয়া দফতরের যন্ত্রপাতি।

Advertisement

আশঙ্কা, যে কোনও সময়ে সেই জল থেকে শর্ট সার্কিট হতে পারে। খারাপ হতে পারে যে কোনও যন্ত্র। কলকাতায় নামতে আসা বিমানের পাইলটের সঙ্গে ওই টাওয়ারে বসেই শেষ মুহূর্তের কথাবার্তা সেরে নেন এয়ার ট্র্যাফিক কন্ট্রোল (এটিসি)-এর অফিসারেরা। সেই সময় আচমকা যন্ত্র বিগড়ে গেলে অথবা রেডার কাজ না করলে সমূহ বিপদ।

কলকাতা বিমানবন্দরের এটিসি ভবনের ন’তলায় এই টাওয়ারে এক সঙ্গে প্রায় ১০-১২ জন কর্মী থাকেন। তাঁদের মধ্যে এটিসি অফিসার যেমন থাকেন তেমনই আবহাওয়া বিশারদেরাও থাকেন। এই বর্ষায় সেই ঘরের ছাদ থেকেই ক্রমাগত জল চুঁইয়ে পড়ছে। সেই জল ধরে রাখতে বালতিও কেনা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত মেঝেতে জল পড়ছে। আশঙ্কা, ওই জল যন্ত্রের উপরে পড়তে শুরু করলে সমস্যা হতে পারে।

Advertisement

এটিসি-র দায়িত্বে থাকা রিজিওনাল এগজিকিউটিভ ডিরেক্টর কুন্দনলাল শর্মা বুধবার বলেন, ‘‘জল পড়ার খবর পেয়েছি। ছাদ সারানোর কাজও চলছে।’’

বিমানবন্দর সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত কলকাতায় যে বিমানগুলি নামতে আসে, শহরের ২০ কিলোমিটার দূর থেকে তার দায়িত্ব নেয় টাওয়ার। তখন দু’টি বিমানের মাঝে দূরত্ব কত থাকবে, কলকাতার রানওয়ে পরিষ্কার আছে কি না, আবহাওয়ার কী হাল— এ সবই টাওয়ারে বসে অফিসারেরা পাইলটকে জানান। তা ছাড়া কলকাতা থেকে যে বিমানগুলি উড়ে যায়, তা কখন উড়বে, রানওয়ে খালি রয়েছে কি না, অন্য বিমান সেই সময় নামছে কি না, এ সব তথ্যও পাইলট টাওয়ারের কাছ থেকেই পান। এর বাইরেও কলকাতা বিমানবন্দরের ভিতরে বিমান যখন বে থেকে রানওয়ে যায় অথবা রানওয়ে থেকে বে-তে আসে তখনও তার উপরে নজরদারির দায়িত্ব থাকে টাওয়ারের।

এক অফিসারের কথায়, ‘‘এমন একটা জায়গায় ক্রমাগত জল চুঁইয়ে পড়লে তার পরিণতি কত ভয়ঙ্কর হতে পারে সে দিকে খেয়াল রাখা উচিত কর্তৃপক্ষের।’’ অফিসারদের অভিযোগ, বর্ষা শুরুর আগেই মেরামতির কাজ শেষ হয়ে গেলে এ ভাবে ছাদ থেকে জল চুঁইয়ে পড়ত না। অভিযোগ, ২০১৩-১৪ সালে এক বার এ ভাবেই টাওয়ারের ছাদ থেকে জল চুঁইয়ে পড়তে শুরু করায় তখন সারানো হয়েছিল। বছর তিন তা ঠিক ছিল। এ বছর ফের সমস্যা
শুরু হয়েছে।

বিমানবন্দরের নতুন টার্মিনালের ছাদ থেকেও নিয়মিত জল চুঁইয়ে মেঝেতে পড়ছে। সেখান দিয়ে যাত্রীরা যাতায়াত করেন। সে ক্ষেত্রে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের বদনাম হলেও তা থেকে বড়সড় কোনও ক্ষতির আশঙ্কা নেই। কিন্তু, টাওয়ারের জল থেকে যন্ত্র খারাপ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যাচ্ছে। বিমানবন্দর সূত্রের খবর, কলকাতায় নতুন টাওয়ার ভবন তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। এখন যেখানে ৪ নম্বর গেট, সেই ভিআইপি যাতায়াতের গেটের উল্টো দিকে এই ভবন তৈরির কাজ চলছে। কুন্দনলাল জানিয়েছেন, ২০২০ সালে সেই বিল্ডিং তৈরি হয়ে যাওয়ার কথা। তত দিন কাজ চালাতে হবে বর্তমান ভবনেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন