ভূগর্ভে পাইপ ফেটে ভাসছে পথ

সোমবার রাত থেকেই সারানোর কাজ শুরু হয়েছে। কাজের সময়ে যাতে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তার জন্য পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ মার্চ ২০১৯ ০০:০০
Share:

দুর্ভোগ: রামমন্দির এলাকায় জলে ভেসে যাচ্ছে রাস্তা। সোমবার। ছবি: সুমন বল্লভ

রাস্তা ভেঙে বসে যাওয়ায় তৈরি হয়েছে বড়সড় গর্ত। সেই গর্ত থেকে উপচে উঠছে জল। ভেসে যাচ্ছে আশপাশের রাস্তা। এই অবস্থা কলকাতার ব্যস্ততম রাস্তা চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের রামমন্দির এলাকার। সেখানে মাটির নীচে পানীয় জলের পাইপ ফেটে এই দুর্ভোগ চলছে গত পাঁচ দিন ধরে। তাতে যে শুধু এলাকা ডুবে থাকছে তা-ই নয়, প্রচুর পরিমাণ জলেরও অপচয় হচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের আশঙ্কা, মাটির নীচে পানীয় জলের পাইপ ফেটে জল বেরোতে থাকায় রাস্তার মাঝখানে যে ভাবে গর্ত হয়ে গিয়েছে, তাতে যে কোনও মুহূর্তে বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তাঁদের অভিযোগ, দোলের দিন শুরু হয়েছিল এই সমস্যা। স্থানীয় কাউন্সিলরকেও জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। তবে বিষয়টি সম্পর্কে ওয়াকিবহাল মেয়র ফিরহাদ হাকিমও। সোমবার তিনি বলেন, ‘‘মাটির নীচে অনেক গভীরে একটি ৪২ ইঞ্চি পাইপে ফাটল ধরেছে। ওই রাস্তার নীচ দিয়ে আবার মেট্রো রেল গিয়েছে। তাই সতর্ক হয়ে কাজ করতে হচ্ছে।’’ তিনি জানান, সোমবার রাত থেকেই সারানোর কাজ শুরু হয়েছে। কাজের সময়ে যাতে ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়, তার জন্য পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি।

Advertisement

এ দিন সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেল, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ ও মুক্তারামবাবু স্ট্রিটের সংযোগস্থল পুরোপুরি জলমগ্ন। রামমন্দির এলাকায় ফুটপাতে কাপড়ের দোকান আমন সাউয়ের। তিনি জানান, পুরসভার টাইম কলে পানীয় জল আসার সময়ে, অর্থাৎ সারা দিনে চার বার সব থেকে বেশি জলমগ্ন হয়ে থাকে রাস্তা। এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, সকাল ৬টা থেকে সকাল ৯টা, বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা, বিকেল সাড়ে ৩টে থেকে সন্ধ্যা ৬টা ও রাত সাড়ে ৭টা থেকে ৮টা— দিনে এই চার বার পানীয় জল আসে। তাঁর কথায়, ‘‘দোকানদারি করব কী, জলের মধ্যে ক্রেতারা দাঁড়াতেই পারছেন না। অনেকে ভাবছেন, রাস্তার নর্দমার জল। তাঁদের বোঝাচ্ছি, নোংরা জল নয়। ওটা পানীয় জল।’’

যেখানে পাইপ ফেটেছে, সেখানে রাস্তা এতটাই গর্ত হয়েছে যে, তাতে বাসের চাকা পড়ে বাস বিপজ্জনক ভাবে হেলে পড়ছে। চাকা পড়ায় গর্তের জল ছিটকে যাচ্ছে আশপাশে। বিরাটি-বি বা দী বাগ রুটের এক বাসচালক বলেন, ‘‘গর্তটা দিনদিন গভীর ও বড় হচ্ছে। তাই গর্ত এড়িয়ে যাওয়ারও উপায় নেই। বাসের চাকা অত বড় গর্তে পড়লে দুর্ঘটনার আশঙ্কা তো থেকেই যায়।’’ ওই এলাকায় ফুটপাতে ব্যবসা করেন মিঠু পোদ্দার। তিনি জানান, সামনেই শেঠ সুরজমল জালান বালিকা বিদ্যালয়। রয়েছে রামমন্দির। স্কুলের মেয়েরা জল পেরিয়ে আসতে গিয়ে পায়ের জুতো পর্যন্ত ভিজিয়ে ফেলছে। এলাকায় কর্তব্যরত এক ট্র্যাফিক পুলিশকর্মী জানান, গর্তে কিছু ইটের টুকরো ফেলা হলেও তা যথেষ্ট নয়। বড়সড় দুর্ঘটনা যে কোনও সময়ে ঘটতে পারে। তা ছাড়া, অফিসের সময়ে যান চলাচলের গতিও বেশ কমে যাচ্ছে।

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

ব্যবস্থা নিতে এত দেরি হচ্ছে কেন? পুরসভার জল সরবরাহ দফতরের এক আধিকারিক জানান, ৪২ ইঞ্চির পাইপ। তা সারাই করতে হলে জল সরবরাহ বন্ধ রাখতে হবে। আরও অসুবিধা ফাটল গভীরে হওয়ায়। নীচে আবার মেট্রো। মাটি নেই, কেবল বালি রয়েছে ওই স্তরে। তাই সব দিক দেখে কাজ করতে হচ্ছে। মেয়র জানান, রাতে কাজ শুরু হবে। তবে ঠিক হয়েছে, আগামী শনিবার টালা জলাধার থেকে জল সরবরাহ বন্ধ রেখে পুরো কাজ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন