গঙ্গা থেকে কাঠামো সাফ জলপুলিশের

দুর্গাপুজো, কালীপুজোয় সে সব বিধি মেনে চলা হয়ও বটে। কিন্তু গণেশ-বিশ্বকর্মা-সরস্বতী পুজোয় কি আদৌ সেই বিধির তোয়াক্কা করা হয়?

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:১২
Share:

সাফাই: গঙ্গা থেকে কাঠামো তুলে আনার কাজ চলছে। শুক্রবার, বাজেকদমতলা ঘাটে। নিজস্ব চিত্র

গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে একাধিক বিধিনিষেধ রয়েছে পুরসভার। দুর্গাপুজো, কালীপুজোয় সে সব বিধি মেনে চলা হয়ও বটে। কিন্তু গণেশ-বিশ্বকর্মা-সরস্বতী পুজোয় কি আদৌ সেই বিধির তোয়াক্কা করা হয়? শুক্রবার কলকাতা রিভার ট্র্যাফিক পুলিশের গঙ্গা সাফাই অভিযান সেই প্রশ্নটাই ফের উস্কে দিল।
চলতি মাসেই গণেশ ও বিশ্বকর্মা পুজোয় মেতেছিল মহানগর।

Advertisement

পুজোর শেষে প্রতিমা গঙ্গায় বিসর্জনও দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেই কাঠামো গঙ্গা থেকে তুলে নেওয়ার কোনও উদ্যোগ চোখে পড়েনি। ফলে বিসর্জনের পর থেকে গঙ্গাতেই ভাসছিল প্রতিমার কাঠামো। শুক্রবার সেই সব কাঠামো গঙ্গা থেকে টেনে তুলল জলপুলিশ। কলকাতা ও হাওড়ার বিভিন্ন ঘাট থেকে টেনে তোলা সেই কাঠামোর সংখ্যা প্রায় হাজার খানেক!
পুলিশ সূত্রের খবর, গত কয়েক দিন ধরে গঙ্গায় ভাসতে থাকা কাঠামোগুলি দইঘাট, জাজেস ঘাট, শিবপুর ঘাট, রামকৃষ্ণপুর ঘাট, বাবুঘাট, নিমতলা ঘাটে জড়ো করা হয়েছিল। এ দিন দুপুরে বাজেকদমতলা ঘাটে গিয়ে দেখা গেল, একের পর এক নৌকো কাঠামোগুলিকে টেনে আনছে। রিভার ট্র্যাফিকের কর্মী এবং সিভিক ভলান্টিয়ারেরা জলে নেমে সেই কাঠামো টেনে টেনে পা়ড়ে তুলে আনছে। এর পরে ঘাটে ডাঁই করে রাখা ওই বাতিল কাঠামো পুরসভার গাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে ভাগাড়ে।
দুর্গাপুজোর আগেই তাই গঙ্গা দূষণ নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে শহরবাসীদের উদ্দেশে বার্তা দিচ্ছে কলকাতা পুলিশ। লালবাজার সূত্রে জানানো হয়েছে, দুর্গাপুজোর সময়ে পুজোর উপচার, প্লাস্টিক জলে ফেলতে বাধা দেওয়ার জন্য লাগাতার সচেতনতা প্রচার করা হবে। বিভিন্ন ঘাটের এক পাশে বর্জ্য ফেলার জন্য থাকবে আলাদা জায়গা। পাশাপাশি থাকবে নজরদারিও।
গঙ্গার জলে মারাত্মক দূষণের কথা এর আগেও একাধিক রিপোর্টে উঠে এসেছে। কাঠামোর কারণে গঙ্গাদূষণ নিয়ে বহু দিন ধরেই সরব পরিবেশকর্মীরা। তাঁরা বলছেন, গঙ্গা দূষিত হয়ে গেলে কলকাতার কপালে বিপদ রয়েছে। পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তী বলছেন, ‘‘প্রতিমার রং এবং অন্যান্য উপকরণ জলে মিশে দূষণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। সেই দূষণে ক্ষতি হয় জলজ প্রাণীদের।’’ তাঁর মতে, সারা বছর ছোট-বড় সব পুজোতেই এই ধরনের সক্রিয়তা প্রয়োজন।
গঙ্গায় প্রতিমা বিসর্জন নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরেই সরব পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। হাইকোর্টে মামলাও করেছিলেন তিনি। বলছেন, ‘‘রিভার ট্র্যাফিকের ওসি রাজীব সরকার যে ভাবে গঙ্গাকে দূষণের হাত থেকে বাঁচানোর কাজ করছেন তা প্রশংসনীয়। তবে বন্দর ও পুর কর্তৃপক্ষেরও উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন