ধুলোর দায় ঝাড়ল পুরসভা

প্রসঙ্গত, শহরের বাতাসের মান খারাপের পিছনে পথের ধুলো যে অন্যতম, তা সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে এসেছে। সে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের রিপোর্টই হোক বা ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (নিরি) অন্তর্বর্তী রিপোর্টই হোক।

Advertisement

দেবাশিস ঘড়াই

শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০২:৫৮
Share:

দূষণ: ধূলি ধূসরিত ময়দান। বৃহস্পতিবার। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক

পথের ধুলোর দায় ঝেড়ে ফেলেছে কলকাতা পুরসভা। তাই ধুলো নিয়ন্ত্রণ করতে পুরসভাকে স্প্রিঙ্কলার মেশিন কিনে দিচ্ছে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ! পুরসভা সূত্রের খবর, ১০টি স্প্রিঙ্কলার মেশিন দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

Advertisement

প্রসঙ্গত, শহরের বাতাসের মান খারাপের পিছনে পথের ধুলো যে অন্যতম, তা সাম্প্রতিক কালে বিভিন্ন রিপোর্টে উঠে এসেছে। সে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের রিপোর্টই হোক বা ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (নিরি) অন্তর্বর্তী রিপোর্টই হোক। পরিবেশ মন্ত্রকের তরফে সম্প্রতি প্রকাশিত ‘ন্যাশনাল ক্লিন এয়ার প্রোগ্রাম’-এ গত পাঁচ বছর ধরে বায়ুদূষকের মাত্রা লঙ্ঘনের জন্য দেশের যে ১০২টি শহরের নাম ‘নন অ্যাটেনমেন্ট সিটি’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল কলকাতা।

সেই রিপোর্টে এ-ও বলা হচ্ছে যে, কলকাতা-সহ দেশের সমস্ত শহরের সার্বিক বায়ুদূষণের পিছনে পথের ধুলো ও নির্মাণস্থলের (নির্মাণপ্রক্রিয়া ও ভাঙা) দূষণই প্রধান দায়ী। পথের ধুলো কমাতে ডিভাইডারে সবুজায়ন, ভাঙাচোরা রাস্তা দ্রুত সারাই, রাস্তায় দিনে দু’বার জল দেওয়ার ব্যবস্থা করা-সহ একাধিক পদক্ষেপ করার কথাও বলা হয়েছে। পুর আধিকারিকদের একাংশ মানছেন, তার পরেও অবশ্য কর্তৃপক্ষের হেলদোল নেই। এই পরিস্থিতিতে দূষণ রোধে কী কী পদক্ষেপ করতে হবে, তা নিয়ে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার ওই ১০২টি শহরকে নিয়ে কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ের মাধ্যমে একটি বৈঠক করে। সেখানেও রাস্তার ধুলো-সহ একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়।

Advertisement

পথের ধুলো নিয়ন্ত্রণে দীর্ঘদিন ধরেই পুর কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করছিল দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ। পর্ষদের মতে, রাস্তা ভাঙাচোরার কারণে যেমন ধুলো হচ্ছে, তেমনই আবার গাড়িগুলি ‘ওভারটেক’ করতে পথের ধারের পিচ ছাড়া অংশ দিয়ে যাওয়ায় প্রচুর ধুলো ওড়ে। পর্ষদকর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, শহরের কোন কোন রাস্তায় ধুলো বেশি, কোথায় আগুন জ্বালানো হচ্ছে, সে সব সরেজমিনে দেখতে ১২টি দল নিয়মিত বেরোচ্ছে। খোলা জায়গায় আগুন জ্বালাতে দেখলে পুলিশকেও জানানো হচ্ছে। পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বলেন, ‘‘শুধু কলকাতা পুরসভাই নয়, হাওড়া পুরসভাকেও পাঁচটি স্প্রিঙ্কলার মেশিন দিচ্ছি। বাতাসের গুণমান রক্ষার জন্য এই সহযোগিতা করছি।’’

কিন্তু রাস্তার ধুলো নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব যে পুরসভাকেই নিতে হবে, সে ব্যাপারে নিঃসংশয় প্রশাসনের কর্তাদের একাংশ। এক কর্তার কথায়, ‘‘রাস্তায় জল দেওয়া পুরসভার কাজ। পর্ষদ বড়জোর সাহায্য করতে পারে। ধুলো নিয়ন্ত্রণে পুরসভাকে আরও সক্রিয় হতে হবে।’’

পুরকর্তাদের বক্তব্য, প্রতিদিন সকালে রাস্তায় জল দেওয়া হয়। তবে মন্ত্রকের রিপোর্টে যে দিনে দু’বার রাস্তায় জল দেওয়ার কথা বলা হয়েছে? সে বিষয়ে কিছু বলতে পারেননি কর্তারা। দেবব্রত মজুমদার মেয়র পারিষদ (জঞ্জাল অপসারণ) বলেন, ‘‘পর্ষদ তো রাজ্য সরকারেরই। তাই তারা স্প্রিঙ্কলার মেশিন কিনে দিতেই পারে। আমরাও ওই মেশিন দিয়ে রাস্তায় জল দিই। বর্তমানে ক’টি মেশিন কাজ করছে, সেটা একটু দেখতে হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন