স্থান-কাল-পাত্র ভিন্ন। তবুও ওরা মাথাব্যথা বাড়িয়েছে কারা দফতরের। কারণ, ওদের কোন ঠিকানায় রাখা হবে, তা রবিবার পর্যন্ত স্থির করতে পারেনি কারা দফতর। ওদের কারও বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার মামলা রয়েছে। কেউ কামদুনি গণধর্ষণে অভিযুক্ত। খাগড়াগড় বিস্ফোরণে যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে কারও বিরুদ্ধে। কেউ জেলে আগুন লাগানোয় অভিযুক্ত। তাদের স্থানান্তর স্থির না হওয়া পর্যন্ত আলিপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগার খালি হতে সময় লাগতে পারে বলে মত কারা দফতরের।
গত ১৪ নভেম্বর ধোপাগাছিতে বারুইপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারের উদ্বোধন হয়। আলিপুর থেকে এখনও পর্যন্ত সাজাপ্রাপ্ত ২০০ বন্দিকে সেখানে পাঠানো হয়েছে। আলিপুরে এখন আছে ১২০০ বন্দি। তাদের মধ্যে কামদুনি গণধর্ষণ এবং খাগড়াগড় বিস্ফোরণে অভিযুক্তের পাশাপাশি রাজ্যে প্রথম ধৃত সন্দেহভাজন ইসলামিক স্টেট (আইএস) বন্দিও রয়েছে। সেই সব ‘বিশেষ’ বন্দি ১০০ জন। হুগলি জেলা সংশোধনাগারে আগুন লাগানোয় অভিযুক্ত রমেশ মাহাতোকে অন্য সংশোধনাগারে স্থানান্তর করা হলেও তার সঙ্গীরা আলিপুরে রয়েছে। সেখানে মাওবাদী কার্যকলাপের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া বন্দিরাও রয়েছে। এক কারা কর্তার কথায়, ‘‘ওই বন্দিদের কোথায় রাখা হবে, সেই সিদ্ধান্ত এখনও হয়নি। সিদ্ধান্ত হলেই দ্রুত স্থানান্তর প্রক্রিয়া সমাপ্ত হতে পারে।’’
কারা দফতর সূত্রে খবর, বিশেষ বন্দিদের রাজ্যের অন্য কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রাখা হতে পারে। যাদের মামলা ডায়মন্ড হারবার, বারুইপুর ও কাকদ্বীপ আদালতে রয়েছে, সেই সব বিচারাধীন বন্দিকে প্রাথমিক ভাবে বারুইপুর কেন্দ্রীয় সংশোধনাগারে রাখা স্থির হয়েছে। কারা দফতর সূত্রের খবর, কয়েক দিনের মধ্যে আলিপুরের বন্দিদের নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। গত ডিসেম্বরেই আলিপুর সংশোধনাগার খালি করার চেষ্টা করেছিল দফতর। এখন যা পরিস্থিতি, তাতে খালি করতে চলতি জানুয়ারি গড়িয়ে যেতে পারে বলে খবর। বারুইপুর সংশোধনাগারের যা চেহারা, তাতে আলিপুরে থাকা ১২০০ বন্দির মধ্যে ৫৫০-৬০০ বন্দিকে বারুইপুরে নিয়ে যাওয়া যেতে পারে। বাকিদের অন্য সংশোধনাগারে স্থানান্তর করবে কারা দফতর।
১৮ একর জমির উপরে গড়ে উঠছে বারুইপুর সংশোধনাগার। প্রথম দফায় ৮.৭ একর জমিতে ভবনটি তৈরি হয়েছে। আর দ্বিতীয় দফায় আগামী ৩১ মার্চের মধ্যে ৯.৩ একর জমিতে বাকি ভবনটি নির্মাণ হওয়ার কথা বলে জানিয়েছিল কারা দফতর।