নিরাপত্তার দায় কার, চেনা চাপান-উতোর

ভরদুপুরে গলগলে কালো ধোঁয়া ঢুকে এসেছিল পাশের বাড়ির তিনতলার ঘরে। কী করবেন, কিছুক্ষণের জন্য বুঝে উঠতে পারছিলেন না বাসিন্দারা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ জানুয়ারি ২০১৭ ০২:১৫
Share:

ভরদুপুরে গলগলে কালো ধোঁয়া ঢুকে এসেছিল পাশের বাড়ির তিনতলার ঘরে। কী করবেন, কিছুক্ষণের জন্য বুঝে উঠতে পারছিলেন না বাসিন্দারা। রবিবার দুপুরে বেলেঘাটার চুনাপট্টির তিনটি কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের পরে আতঙ্কের সেই ধোঁয়া এখনও তাঁদের তাড়া করছে।

Advertisement

টালি বা টিনের শেডের সার সার কারখানায় বিদ্যুৎ সংযোগের ওয়্যারিং এখনও বিপজ্জনক ভাবে মাকড়সার জালের মতো জট পাকিয়ে আছে। তিনটি কারখানা পুড়ে খাক। কিন্তু বাকি কারখানাগুলিতেও যে কোনও দিন অঘটনের আশঙ্কা রয়েছে। প্রায় ৭০-৮০ বছর ধরে এই এলাকায় ১০-১২টি ছোট ছোট কারখানা চললেও কোনওটিরই অগ্নি-নির্বাপণ ব্যবস্থা নেই বলে জানিয়েছে দমকল।

কারখানাগুলির অধিকাংশই ব্যক্তিগত সম্পত্তি হওয়ায় সেগুলি ঢেলে সাজা সম্ভব নয় বলে দায় এড়িয়েছেন স্থানীয় ৫৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর জীবন সাহা। উল্টে বাসিন্দাদেরই সচেতন হওয়া উচিত বলে দাবি তাঁর। এ দিন দুপুরে আগুন লাগার পরেই তিনি ঘটনাস্থলে পৌঁছন। আগুন নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত বহুতলের উপরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। পরে তিনি বলেন, ‘‘সরকারের তরফ থেকে সচেতনতা বাড়ানোর জন্যে মাঝেমধ্যেই বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়। কিন্তু কারখানাগুলি বহু পুরনো এবং ব্যক্তিগত সম্পত্তি হওয়ায় সেগুলির আধুনিকীকরণ সম্ভব হয়নি।’’

Advertisement

কারখানা লাগোয়া এলাকাতেই জমি প্রোমোটিং করে পরপর বহুতল তৈরি হয়েছে। কিন্তু আগে কখনও এ ভাবে অগ্নিকাণ্ড না ঘটায় এতটা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেননি বাসিন্দারা। সজল রায় নামে স্থানীয় এক বাসিন্দার কথায়, ‘‘দমকল দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনায় অন্য কারখানাগুলিতে তা ছড়ায়নি। আরও কয়েকটা কারখানায় ছ়ড়ালে পাশের বহুতলগুলিতেও বিপদের আশঙ্কা ছিল।’’ তাঁর দাবি, এই আগুনের তাপেই বহুতলগুলির জানলা ও পাইপের ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি হয়েছে বাড়ির ভিতরের কিছু আসবাবপত্রেরও। আগুন বাড়লে আরও ক্ষতির আশঙ্কা ছিল।

দমকলের দাবি, বেশির ভাগ কারখানার বৈদ্যুতিক সংযোগের পাইপই নিম্ন মানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি। দমকলের দাবি, দু’-একটি কারখানায় বেআইনি ভাবে মাত্রাতিরিক্ত দাহ্য পদার্থও মজুত রয়েছে। যার ফলে এ দিন আগুন প্রাথমিক ভাবে দ্রুত ছড়িয়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপত্তায় কি কিছুই করতে পারে না প্রশাসন? কাউন্সিলরের কথায়, ‘‘বাসিন্দারা সচেতন হলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব।’’ যদিও স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, প্রশাসনকে বারবার জানানো হলেও কোনও দিনই কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। আর এই চাপান-উতোরের জেরেই নিরাপত্তাহীনতায় এখন ভুগছেন বাসিন্দারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন