প্রমাণ ছাড়াই সাক্ষী কেন অভিযুক্ত, বিস্মিত আদালত

প্রথম চার্জশিটে তাঁর নাম ছিল সাক্ষী হিসেবে। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত চার্জশিটে তাঁকেই অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হল। তাঁর বিরুদ্ধে তেমন তথ্য-প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে সাক্ষী পরে অভিযুক্ত হয়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত। শুধু তা-ই নয়, অভিযুক্তের তালিকা থেকে ওই নামটি বাদও দিল কোর্ট।

Advertisement

শান্তনু ঘোষ ও শিবাজী দে সরকার

ঘুসুড়ি শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৬ ০১:৩৪
Share:

প্রথম চার্জশিটে তাঁর নাম ছিল সাক্ষী হিসেবে। পরবর্তী সময়ে অতিরিক্ত চার্জশিটে তাঁকেই অভিযুক্ত হিসেবে দেখানো হল। তাঁর বিরুদ্ধে তেমন তথ্য-প্রমাণ না থাকা সত্ত্বেও কী ভাবে সাক্ষী পরে অভিযুক্ত হয়ে গেলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত। শুধু তা-ই নয়, অভিযুক্তের তালিকা থেকে ওই নামটি বাদও দিল কোর্ট।

Advertisement

গত ২৩ ডিসেম্বর কলকাতা নগর দায়রা আদালতে ঘুসুড়ির ঘুষ-কাণ্ডের অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দিয়েছিল রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা। আদালতে জমা দেওয়া ৫০ পাতার বেশি ওই চার্জশিটে বালি পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান ও সিপিএম নেতা অরুণাভ লাহিড়ী এবং অফিস সুপারিন্টেন্ডেন্ট মহম্মদ আমানুল্লা মোল্লার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছিলেন তদন্তকারীরা। ঘুষের ঘটনা জানা সত্ত্বেও তা ধামাচাপা দেওয়া এবং তাতে মদত দেওয়ার অভিযোগ আনা হয় দু’জনের বিরুদ্ধেই।

কিন্তু অরুণাভবাবুর বিরুদ্ধে প্রাথমিক তদন্তে বিভিন্ন সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণ আদালতে পেশ করতে পারলেও আমানুল্লা মোল্লার বিরুদ্ধে তা পারেনি রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা। গত ৬ জানুয়ারি আদালত ওই সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দেখে। তখনই বিচারক প্রশ্ন তোলেন, যে ব্যক্তি প্রথম চার্জশিটে সাক্ষী হিসেবে রয়েছেন এবং যাঁকে দিয়ে সিজার লিস্টে সই করানো হয়েছে, তিনি কোন পরিস্থিতিতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে অভিযুক্ত হলেন। পাশাপাশি, আমানুল্লা মোল্লা নামে ওই অভিযুক্তের নামে তদন্তকারীরা তেমন তথ্য-প্রমাণ দিতে না পারায় তাঁর ক্ষেত্রে চার্জশিট থেকে নাম বাদ রাখার নির্দেশ দিল আদালত। তবে প্রাথমিক ভাবে বিভিন্ন সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণ থাকায় অরুণাভবাবুর নাম বিচারগ্রাহ্য হয়েছে।

Advertisement

মহম্মদ আমানুল্লা মোল্লা তদন্তে সাক্ষী হওয়া সত্ত্বেও তাঁকে কীসের ভিত্তিতে অ‌ভিযুক্ত করা হল, তা নিয়ে রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখার কর্তাদের কাছে সদুত্তর মেলেনি। ডিআইজি অজয় ঘোষ বলেন, ‘‘যা বলার ঊর্ধ্বতন কর্তারা বলবেন।’’ কিন্তু এডিজি রামফল পওয়ারকে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি।’’

ঘুসুড়ির ঘুষ-কাণ্ডের তদন্তে প্রথম থেকেই অরুণাভবাবুর বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল। মূল অভিযুক্ত তথা ধৃত সাব-অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার প্রণব অধিকারীও জেরায় বারবার তদন্তকারীদের কাছে চেয়ারম্যানের নাম জানিয়েছিলেন। এর পরে বেশ কয়েক বার অরুণাভবাবুকে দফতরে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তদন্তকারীরা। এমনকী, বালি বাদামতলায় ওই সিপিএম নেতার বাড়ি এবং শ্বশুরবাড়িতেও তল্লাশি চালায় রাজ্য দুর্নীতি দমন শাখা। তখনই বালি পুরসভার অফিসে গিয়ে প্রণব অধিকারী-সহ অন্যদের সম্পর্কে খোঁজখবর ও তল্লাশি চলে। তখন বিভিন্ন সময়ে অফিস সুপারিন্টেন্ডেন্ট মহম্মদ আমানুল্লা মোল্লাকে সাক্ষী হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছিল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন