হাতসাফাই করেই বহু বছর

পুলিশ জানায়, রোকেয়ার চুরি করা জিনিস তার বাড়িতে মাটির ভাঁড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন সাধারণ সামগ্রীর মধ্যে লুকিয়ে রাখা ছিল। যত উদ্ধার হয়েছে, ততই চোখ কপালে উঠেছে পুলিশের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৯ মে ২০১৭ ০২:০০
Share:

হাতসাফাইয়ের অভ্যেস ছোটবেলা থেকেই। সেটাই কার্যত পেশায় পরিণত করেছিল সে। বহু বছর ধরে লোকজনের পকেট থেকে ফোন, গলা থেকে গয়না, বাড়ি থেকে নগদ টাকা ছাড়া বৈদেশিক মুদ্রাও চুরি করেছে। কিন্তু ধরা পড়েনি কখনও। কোনও তদন্তেও তার নাম উঠে আসেনি।

Advertisement

তার দাবি, ছোটবেলায় স্বভাবে, পরে অভাবে এই কাজ চালিয়ে গিয়েছে সে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। চুরি করা জিনিস বিক্রি করেই যে তার সংসার চালাত, সে কথাই জানতেন পড়শিরা। সেই সূত্র ধরেই কথাটা পুলিশের কানে যায়। শনিবার তাকে রাজারহাটের পারখড়িবাড়ির পোদরার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ধৃত মহিলার নাম রোকেয়া বিবি (৫২)। রবিবার বারাসত আদালতে তার সাত দিনের জন্য পুলিশি হেফাজত হয়।

পুলিশ জানায়, রোকেয়ার চুরি করা জিনিস তার বাড়িতে মাটির ভাঁড় থেকে শুরু করে বিভিন্ন সাধারণ সামগ্রীর মধ্যে লুকিয়ে রাখা ছিল। যত উদ্ধার হয়েছে, ততই চোখ কপালে উঠেছে পুলিশের। বাজেয়াপ্ত করা জিনিসের মধ্যে রয়েছে ৫৮টি ফোন, ট্যাব, নগদ সাড়ে ৩০০০ টাকা, সোনা ও রুপোর গয়না, মিশর, স্কটল্যান্ড, নেপাল, ভুটান ও চিনের মুদ্রা। রোকেয়া বৈদেশিক মুদ্রা কোথা থেকে চুরি করল, তা ভেবে বিস্মিত পুলিশ।

Advertisement

তবে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, ছোটবেলা থেকেই রোকেয়া চোখের পলকে জিনিস সরিয়ে ফেলতে পারত। পরে সে খিদিরপুর এলাকা থেকে পকেটমারির কলাকৌশল শেখে। চুরি-ডাকাতির কাজেও হাত পাকায়। বয়স বাড়ার পরে সেই কাজ ছেড়ে দিয়ে শুধু পকেটমারিতেই মন দেয় রোকেয়া। রাজারহাট থেকে একটি বেসরকারি রুটে কলকাতায় এসে পকেটমারি করত সে।

কিন্তু এত বছরেও তার নাম পুলিশের খাতায় ওঠেনি। পুলিশের ইনফর্মারদের তালিকাতেও রোকেয়ার নাম ছিল না। তার সংসার বলতে স্বামী ও দুই মেয়ে। স্বামীর রোজগারের উপরে সম্বল করে সংসার চলত না। তাই চুরি কিংবা পকেটমারি থেকে পাওয়া জিনিস বিক্রি করত সে।

এই সব দামি সামগ্রী বিক্রির কথা রোকেয়ার প্রতিবেশীরা জানতে পেরেছিলেন। সম্প্রতি দামি মোবাইল ও অন্যান্য সামগ্রী বিক্রি করেছিল রোকেয়া। স্থানীয় সূত্র থেকে সে কথা জানতে পেরে তার বাড়িতে হানা দেয় রাজারহাট থানার পুলিশ।

পুলিশের অনুমান, রোকেয়া একাই সব চুরি ও পকেটমারির কাজ করেছে, এমনটা ঠিক নয়। একটি গ্যাং তৈরি করেছিল সে। সেই চক্রের খোঁজেও তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন