প্রতীকী ছবি।
রাস্তার পাশে একটি দোকানের শাটারের সামনে অর্ধদগ্ধ অবস্থায় উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছেন এক বৃদ্ধা। দেহের মাংস খসে পড়েছে রাস্তায়। পরনে আধপোড়া শাড়ি।
শনিবার রাত তিনটে নাগাদ আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার রঘুনাথ চ্যাটার্জি স্ট্রিট থেকে এমনই এক দেহ উদ্ধার করল পুলিশ। মৃতার নাম শুভ্রা চক্রবর্তী (৬৫)। বাড়ি গোপাল বসু লেনে। স্থানীয় বাসিন্দা শেখর দাসের দাবি, রাত আড়াইটে নাগাদ কুকুরের চিৎকারে তাঁর ঘুম ভেঙে যায়। তিনি এবং আরও কয়েক জন রাস্তায় বেরিয়ে দেখেন, একটি ওষুধের দোকানের সামনে অর্ধদগ্ধ অবস্থায় পড়ে আছেন এক বৃদ্ধা। শেখরবাবুরাই পুলিশে খবর দেন।
রবিবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, ওষুধের দোকানের শাটারে তখনও লেগে রয়েছে পোড়া মাংস। প্রাথমিক ভাবে ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, শুভ্রাদেবীর ছেলে সোমনাথ চক্রবর্তী হৃদ্রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি। তাঁর মানসিক সমস্যাও রয়েছে। শনিবার রাতে সোমনাথবাবুর অবস্থা আশঙ্কাজনক হয়েছিল বলে জানিয়েছেন এক পুলিশকর্তা। তদন্তকারীদের ধারণা, সেই খবর পাওয়ার পরে শুভ্রাদেবী আত্মঘাতী হয়েছেন।
তবে এলাকাবাসীরা জানাচ্ছেন, গোপাল বসু লেন ঘটনাস্থল থেকে বেশ কিছুটা দূরে। বৃদ্ধা আত্মহত্যা করলেও কেন ওই জায়গাটি বেছে নিলেন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, অগ্নিদগ্ধ হওয়ার সময়ে ওই বৃদ্ধার চিৎকারের কোনও শব্দও তাঁরা পাননি। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক ভাবে এতটুকুই জানা গিয়েছে। বিশদ জানতে তদন্ত চলছে।
অন্য দিকে, রবিবার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ শোভাবাজারে যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউয়ে ফুটপাথ থেকে এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার হয়। মৃতের নাম কৃষ্ণ পাল (৪৯)। তাঁর বাড়ি মধ্যমগ্রামের বিধান পল্লিতে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন পেশায় ব্যবসায়ী কৃষ্ণবাবু। রাতে তিনি আর ফেরেননি।
এ দিন সকালে বড়তলা থানায় খবর আসে, ফুটপাথে এক ব্যক্তির দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ যখন পৌছয়, তত ক্ষণে কৃষ্ণবাবুর খোঁজে শোভাবাজারে হাজির হয়ে গিয়েছেন তাঁর পরিজনেরা। পুলিশ ও লোকের ভিড় দেখে তাঁরা গিয়ে দেহ শনাক্ত করেন। পরিবারের অভিযোগ, কৃষ্ণবাবুর সোনার আংটি, সোনার হার এবং টাকা ছিনতাই হয়েছে। সঙ্গে থাকা মোবাইলও উধাও।
তদন্তকারীদের অনুমান, ডায়াবেটিস থাকা ওই ব্যক্তির অত্যধিক মদ্যপানের ফলেই মৃত্যু হয়েছে। তবে শহরে দিনের আলোয় এক ব্যক্তির দেহ উদ্ধার এবং ছিনতাইয়ের ঘটনায় প্রশ্নে টহলদারি পুলিশের ভূমিকাও। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, ময়না-তদন্তের পরেই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।