পড়ুয়াদের নিয়ে স্কুলগাড়ি কী ভাবে চলবে, সেই ব্যাপারে পরিবহণ দফতর বিধি তৈরি করেছে। অভিযোগ, অনেক স্কুলগাড়ির মালিকই তা মানেন না। ওই বিধির ব্যাপারে ওয়াকিবহাল নন অভিভাবকেরাও। সে কারণেই শুক্রবার ‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’ অভিভাবকদের স্কুলগাড়ির নিয়মাবলীর ব্যাপারে সচেতন করতে দক্ষিণ কলকাতার এক বেসরকারি স্কুলের সামনে শিবিরের আয়োজন করেছিল। এই কর্মসূচি এ বার ১১ বছরে পড়ল। সংস্থার সদস্যদের দাবি, বিধি মেনে স্কুলগাড়ি চালালে দুর্ঘটনা কমবে। মুখ্যমন্ত্রীর ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ কর্মসূচিতে স্কুলগাড়িকেও সামিল করার জন্য এই অনুষ্ঠান এক অভিনব উদ্যোগ বলে জানান সংস্থার সদস্যেরা।
‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসেসিয়েশন’-এর সচিব সুদীপ দত্ত বলেন, ‘‘অভিভাবকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতেই এই অভিযানের কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। শুধু অভিভাবকেরাই নন, গাড়ি চালকদের জন্যও সচেতনতা শিবির করা হয়ে থাকে।’’ কিছু দিন আগে কলকাতা পুলিশ এবং খড়্গপুর আইআইটি যৌথ ভাবে শহরের তিনটি বড় স্কুল নিয়ে একটি ‘পাইলট প্রোজেক্ট’ করেছিল। সেই সমীক্ষা বলছে, ৫০-৬০ শতাংশ পড়ুয়াই স্কুলগাড়িতে যাতায়াত করে।
সুদীপবাবু জানান, ‘পুলকার ওনার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন’-এর অধীনে প্রায় ২,৫০০ স্কুলগাড়ি চলে। বিধি মেনেই সেগুলি চলে। কিন্তু তার বাইরে আরও হাজার দুয়েক স্কুলগাড়ি রয়েছে। সেগুলি নির্দিষ্ট নিয়মাবলি মেনে চলে কি না, তা তাঁরা জানেন না। অভিভাবকেরা যদি বিধি-নিষেধের ক্ষেত্রে ওয়াকিবহাল থাকেন, সে ক্ষেত্রে এই সমস্যা অনেকটাই কমবে। যে সমস্ত স্কুলগাড়ির মালিক নিয়ম মানছেন না, অভিভাবকেরা তাঁদের স্কুলগাড়ি ব্যবহার করবেন না।
এ দিন সংস্থার তরফে জানানো হয়, রাজ্য পরিবহণ দফতর স্কুলগাড়ির ক্ষেত্রে যে সমস্ত নিয়ম প্রণয়ন করেছে, সেগুলির মধ্যে অন্যতম হল স্কুলগাড়ির ‘পারমিট’ থাকতে হবে। এ ছাড়াও গাড়ির টায়ার, হেড লাইট, ইন্ডিকেটার লাইট, ওয়াইপার ঠিক থাকতে হবে এবং ঘণ্টায় ৬০-৮০ কিমির বেশি গতি হতে পারবে না। গাড়ির পিছনের সিট ঠিক রাখা ছাড়াও স্পিড গভর্নরও বসাতে হবে।
সম্প্রতি জারি হওয়া পরিবহণ দফতরের নির্দেশানুযায়ী স্কুলগাড়িতে ‘জিপিএস’ পদ্ধতি চালু করতে
হবে। এই পদ্ধতিতে অভিভাবকেরাও স্কুলগাড়ির অবস্থান সম্পর্কেও জানতে পারবেন।
এ দিন শিবিরে উপস্থিত গৌতম খাঁড়া নামে এক অভিভাবক বলেন, ‘‘আমি বাগুইআটি থেকে ছেলেকে স্কুলে নিয়ে আসার জন্য স্কুলগাড়ির খোঁজ করছি। তা ছাড়া বাচ্চাকে স্কুলে পাঠানো কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। স্কুলগাড়ির ব্যাপারে এই ধরনের সচেতনতা থাকা দরকার।’’ সালকিয়া থেকে আসা এক অভিভাবক দীপক সরকার বলেন, ‘‘স্কুলগাড়ির যে এত নিয়ম থাকতে পারে জানতাম না। অভিভাবকদের জন্য এই ধরনের সচেতনতামূলক শিবির খুবই গুরুত্বপুর্ণ।’’ এ দিন এক খুদে পড়ুয়াকে দিয়ে কয়েকটি নতুন স্কুলগাড়ির সূচনাও করা হয়।