তল্লাশি: আনোয়ারের খোঁজে নেমেছে ডুবুরি। নিজস্ব চিত্র
শনিবার বেলা ১২টায় বাড়ি থেকে বেরোনোর পরে তিনি আর ফেরেননি। মোবাইলে ফোন করলে বেজে গিয়েছে। রবিবার তাঁর কাজের জায়গায় দেখা গেল রক্তের দাগ। তার পরেই উত্তাল হল নাদিয়াল এলাকার লালপুল তল্লাট।
পুলিশ জানায়, নিখোঁজ যুবকের নাম আনোয়ার আলি পুরকাইত। এই ঘটনায় নাদিয়াল থানার পুলিশ একটি অপহরণের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। আনোয়ারের বাড়ির লোকজনের অভিযোগ, তাঁকে খুন করে দেহ লোপাট করতে কোথাও ফেলে দেওয়া হয়েছে। বছর পঁয়ত্রিশের আনোয়ারের স্ত্রী এবং তিন বছর ও ছ’মাসের দু’টি সন্তান রয়েছে।
আনোয়ারের খোঁজে এ দিন স্নিফার ডগ নিয়ে আসে পুলিশ। তা ছাড়া বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দুই ডুবুরি এলাকার একটি জলাশয়ে নেমে ঘণ্টা দেড়েকেরও বেশি সময় ধরে খোঁজাখুঁজি করেন। কিন্তু কিছু মেলেনি।
তদন্তকারীরা জানাচ্ছেন, লালপুলে আনোয়ারের বাড়ির কাছে একটি বহুতল বাজার তৈরি হয়েছে। ভবন তৈরির কাজ শেষ, তবে সব দোকানঘর এখনও বিক্রি হয়নি। ওই ভবনে ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন আনোয়ার। কোনও দোকানঘর বিক্রি হলে সেটি সাজানো, শ্রমিকের জোগান দেওয়া, তাঁরা ঠিক মতো কাজ করছেন কি না— এ সবই দেখভাল করা ছিল আনোয়ারের দায়িত্ব। সম্প্রতি ওই বাজারের চারতলায় একটি দোকানঘর তৈরির কাজ চলছিল। আনোয়ার সেটিরও দেখাশোনা করছিলেন।
পুলিশ জেনেছে, শনিবার বেলা ১২টা নাগাদ বাড়ি থেকে ওই কাজে যাচ্ছেন বলে বেরোন আনোয়ার। তার পর থেকে তাঁর খোঁজ নেই। প্রতিবেশী ও পরিচিতদের বাড়িতে খোঁজ করলেও কেউ কিছু বলতে পারেননি। তার পরে রবিবার খুঁজতে খুঁজতে ওই বাজারের চারতলার সেই দোকানঘরে যায় পুলিশ। সেটি খুলতে দেখা যায়, মেঝের অনেকটা জুড়ে রক্তের দাগ। তখনই বাড়ির লোকজন অভিযোগ করেন, আনোয়ারকে খুন করে দেহ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এর পরেই এলাকা জুড়ে হুলস্থূল পড়ে যায়। এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, ‘‘রবিবার সকাল সাড়ে ৬টা পর্যন্ত আনোয়ারের মোবাইল ফোন খোলা ছিল। তার পরে সেটি বন্ধ হয়ে যায়। মোবাইল সিমের শেষ টাওয়ার লোকেশন আশপাশের এলাকাতেই পাওয়া গিয়েছে।’’
আনোয়ারের বাড়ির লোকজন পুলিশকে জানিয়েছেন, সম্প্রতি এক প্রোমোটারের সঙ্গে টাকা-পয়সা নিয়ে তাঁর গোলমাল বাধে। ওই প্রোমোটারকে শ্রমিকের জোগান দিতেন আনোয়ার। ওই ঘটনার সঙ্গে আনোয়ারের নিখোঁজ হওয়ার কোনও যোগ আছে কি না, পুলিশ তা খতিয়ে দেখছে।