ফের বেপরোয়া অডি, গ্রেফতার ৩

বেপরোয়া বিদেশি গাড়ির ধাক্কায় এক সেনা জওয়ানের মৃত্যু দেখেছে এই শহর। সেটা ছিল মাস চারেক আগে, রেড রোডে।রবিবার রাতে রাজপথে একই ধরনের বিদেশি গাড়ি বেপরোয়া চালানোর অভিযোগ উঠল তিন যুবকের বিরুদ্ধে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০১৬ ০৩:৫০
Share:

আটক হওয়া সেই গাড়ি। সোমবার। — নিজস্ব চিত্র

বেপরোয়া বিদেশি গাড়ির ধাক্কায় এক সেনা জওয়ানের মৃত্যু দেখেছে এই শহর। সেটা ছিল মাস চারেক আগে, রেড রোডে।

Advertisement

রবিবার রাতে রাজপথে একই ধরনের বিদেশি গাড়ি বেপরোয়া চালানোর অভিযোগ উঠল তিন যুবকের বিরুদ্ধে। এ বারের ঘটনাস্থল এস পি মুখার্জি রোড এবং মনোহরপুকুর রোডের মোড়। অভিযোগ, ট্রাফিক সিগন্যাল না মেনে তীব্র গতিতে গাড়ি ছোটাচ্ছিলেন ওই তিন জন। এমনকী, মত্ত অবস্থায় গাড়ি থেকে নেমে ট্রাফিক সার্জেন্টকে ধাক্কা মারারও অভিযোগও উঠেছে তাঁদের বিরুদ্ধে।

রেড রোডের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত সাম্বিয়া সোহরাব এখন জেলে। অভিযোগ, সাম্বিয়া গাড়ি চালাচ্ছিলেন মত্ত অবস্থায়।

Advertisement

রবিবার রাতের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত তিন যুবক শাহিল অগ্রবাল, সাকেত রুংতা এবং রোহিত জায়সবালের মধ্যে গাড়ি চালাচ্ছিলেন শাহিল। তিন জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছিল। সোমবার সকালে আদালত থেকে তাঁরা জামিন পান।

ঠিক কী ঘটেছিল রবিবার?

পুলিশ জানিয়েছে, ওই রাতে সাড়ে ন’টা নাগাদ টালিগঞ্জ ট্রাফিক গার্ডের সার্জেন্ট অলোক সরকার শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রোড এবং মনোহরপুকুর রোডের মোড়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন। হঠাৎ একটি কালো রঙের অডি গাড়ি ট্রাফিক সিগন্যাল না মেনে বেপরোয়া গতিতে এগিয়ে যায়। পুলিশ গাড়িটিকে থামতে বলা সত্ত্বেও সেটি দাঁড়ায়নি। তা দেখে অলোকবাবু মোটরবাইকে চেপে গাড়িটির পিছনে ধাওয়া করেন। শেষমেশ গাড়িটি রাসবিহারী মোড়ে এসে সিগন্যালে দাঁড়ানো অন্য গাড়ির পিছনে দাঁড়িয়ে যায়।

অলোকবাবুও মোটরবাইক নিয়ে চলে আসেন। গাড়িটি যাতে আবার পালাতে না পারে, সে জন্য গাড়িটিকে সামনে গার্ডরেল দিয়ে আটকে দেন অলোকবাবু। জানুয়ারি মাসে, রেড রোডে কুচকাওয়াজের মহড়া শুরুর মুখে এমনই কয়েকটি গার্ডরেলে ধাক্কা মেরে সাম্বিয়ার অডি গাড়ি এসে ধাক্কা মেরেছিল বায়ুসেনার কর্পোরাল অভিমন্যু গৌড়কে। এ দিন সামনে গার্ডরেল দেখে অবশ্য শাহিলের সেই সাহস হয়নি।

তবে পুলিশের বয়ান অনুযায়ী, গাড়ি আটকে দিলে তিন যুবক নেমে আসেন। অলোকবাবু প্রথমে শাহিলের কাছে ড্রাইভিং লাইসেন্স দেখতে চান। তখনই শুরু হয় বচসা। ট্রাফিক সিগন্যাল না মানা নিয়ে বচসার সময়েই তিন যুবক অলোকবাবুকে ধাক্কা মারেন বলে অভিযোগ। গোলমাল দেখে রাসবিহারী মোড়ের স্থানীয় বাসিন্দারা হাজির হন। চলে আসে পুলিশও। তিন যুবককে গ্রেফতার করে টালিগঞ্জ থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। গাড়িটিকেও বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। পরে, ওই তিন যুবককেই এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃত তিন জনই যে ‘মদ্যপ’ ছিলেন এবং সেই অবস্থাতেই তাঁরা গাড়ি চালাচ্ছিলেন, তার উল্লেখ রয়েছে চিকিৎসকদের দেওয়া রিপোর্টেই।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে, শাহিলের বাবা সুভাযচন্দ্র অগ্রবাল গাড়িটির মালিক। সুভাষবাবু পেশায় ব্যবসায়ী। শাহিলের কাছ থেকে ড্রাইভিং লাইসেন্সও উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাঁর বাড়ি উত্তর কলকাতার আমহার্স্ট রো-তে। শাহিল এবং রোহিত দু’জনেরই বিজনেস ম্যানেজমেন্টে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি রয়েছে। জানা গিয়েছে, রবিবার রাতে শাহিল তাঁর দুই বন্ধু সাকেত এবং রোহিতকে নিয়ে পার্ক সার্কাসের একটি মল থেকে ফিরছিলেন। তখনই এই ঘটনা ঘটে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন