মাকে পুড়িয়ে মারার ‘চেষ্টা’, আটক কিশোর

দামি মোবাইল ও মোটরবাইক কিনে না দেওয়ায় মাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সেই ছেলেকে আটক করেছে বিধাননগর পুলিশ। ঘটনাটি সোমবার রাতের নিউ টাউন থানা এলাকার। মঙ্গলবার সকালে সেই কিশোরকে সল্টলেক জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে তোলা হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিনের জন্য হোমে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০০:৫২
Share:

দামি মোবাইল ও মোটরবাইক কিনে না দেওয়ায় মাকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। এ বছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী সেই ছেলেকে আটক করেছে বিধাননগর পুলিশ। ঘটনাটি সোমবার রাতের নিউ টাউন থানা এলাকার। মঙ্গলবার সকালে সেই কিশোরকে সল্টলেক জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে তোলা হয়। বিচারক তাকে ১৪ দিনের জন্য হোমে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রের খবর, একটি কাপড়ের দোকান চালান আটক হওয়া ওই মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর মা। তাঁর দুই ছেলে। বড় ছেলে মহিলার স্বামীর সঙ্গে থাকেন। ছোট ছেলেকে নিয়ে আলাদা ভাড়া থাকেন ওই মহিলা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, মাঝেমধ্যেই দামি জিনিস কিনে দেওয়া নিয়ে মা ও ছেলের মধ্যে অশান্তি হত। তাঁরা জানান, ওই কিশোরের একটি মোটরবাইক এবং মোবাইল রয়েছে। তা সত্ত্বেও মায়ের কাছে দামি মোবাইল ও মোটরবাইক কিনে দেওয়ার জন্য কয়েক দিন ধরে বায়না করছিল সে। সোমবার রাত দশটা থেকে সেই নিয়েই অশান্তি চলছিল মা এবং ছেলের।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, অশান্তি চলাকালীন আচমকা ঘরের ভিতরে থাকা কেরোসিন তেল মায়ের গায়ে ঢেলে দেয় ওই কিশোর। এর পরে দেশলাই জ্বালিয়ে মায়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে দেয় ছেলেটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, মায়ের গায়ে আগুন ধরিয়ে ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে দাঁড়িয়েছিল ছেলেটি। এক প্রতিবেশী দেখতে পেয়ে প্রথমে বাড়ির মালিকের পরিবারকে জানান। এর পরেই অন্য প্রতিবেশীদের খবর দেওয়া হয়। সকলে মিলে দরজা খুলে ওই মহিলাকে উদ্ধার করে আগুন নেভানোর কাজে নামেন। ওই কিশোরও তখন মাকে বাঁচানোর চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছেন স্থানীয়দের কয়েক জন।

Advertisement

অভিযোগ, এর পরেই সুযোগ বুঝে ছেলেটি পালানোর চেষ্টা করলে তাকে ধরে ফেলেন প্রতিবেশীরা। অগ্নিদগ্ধ মহিলাকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। হাসপাতাল সূত্রের খবর, মহিলার শরীরের ৯০ শতাংশই পুড়ে গিয়েছে। স্থানীয়দের বাঁচাতে দেখে ওই কিশোর এগিয়ে গেলে তার মুখ এবং পা আগুনে সামান্য পুড়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ছেলেটিকে আটক করে। বাড়ির মালিকের পরিবারের এক সদস্য পুলিশের কাছে কিশোরের বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছেন।

মঙ্গলবার হাসপাতালে গিয়ে মায়ের বক্তব্য নথিবদ্ধ করেছে পুলিশ। ছেলেটির শারীরিক পরীক্ষার পরে তাকে সল্টলেকের জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে হাজির করানো হয়।

কোন পরিস্থিতিতে এমন কাণ্ড ঘটালো কিশোরটি? মনোরোগ চিকিৎসক অনিরুদ্ধ দেব বলেন, ‘‘ছোট থেকে নিশ্চয়ই ছেলেটি দাবি মতো জিনিস পেয়ে এসেছে। ফলে ‘যা চাইব, তা পাওয়াটা আমার অধিকার’ এমন মানসিকতা তৈরি হয়েছিল। এ দিন তা না হওয়ায় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া হিসেবে সম্ভবত সে এমন ঘটনা ঘটিয়েছে। এর ফলাফল কী হতে পারে, তা না ভেবেই করে ফেলেছে। যা হয়তো পূর্ব পরিকল্পিত নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন