স্নান করতে নেমে তলিয়ে গেলেন তরুণ

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই পুকুরে স্নান করতে নামেন জনা দশেক তরুণ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সাহিলও।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৫৪
Share:

টালা ঝিল পার্কের এখানেই স্নান করতে নেমে তলিয়ে যান সাহিল মিশ্র (ইনসেটে)। নিজস্ব চিত্র

বন্ধুদের সঙ্গে জলাশয়ে স্নান করতে নেমে তলিয়ে গিয়ে মৃত্যু হল এক তরুণের। রবিবার সকালে, টালা ঝিল পার্কে এই ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত তরুণের নাম সাহিল মিশ্র (১৮)। বাড়ি টালা এলাকাতেই।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই পুকুরে স্নান করতে নামেন জনা দশেক তরুণ। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সাহিলও। তিনি সাঁতার জানতেন না। পুকুরে নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি তলিয়ে যান। সাহিলকে দেখতে না পেয়ে বন্ধুদের চিৎকারে ছুটে আসেন কর্তব্যরত নিরাপত্তারক্ষীরা। ডুবুরি এনে মিনিট পনেরোর মধ্যে ওই তরুণকে উদ্ধার করে আর জি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

ওই উদ্যানের এক নিরাপত্তারক্ষী প্রদীপ রায় এ নিয়ে বলছেন, ‘‘আমি তখন ঝিলের কাছাকাছি ছিলাম। বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ চিৎকার শুনে ছুটে যেতেই ওরা বলে, এক বন্ধু তলিয়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে আমাদের ডুবুরিকে খবর দিই।’’

Advertisement

এই ঘটনার পরে ঝিল পার্কের নিরাপত্তা নিয়ে সরব হয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের একাংশের অভিযোগ, ওই পার্কে নিরাপত্তারক্ষীদের সংখ্যা হাতেগোনা। তাই ঠিক সময়ে ওই তরুণকে উদ্ধার করতে পারলে হয়তো তাঁকে বাঁচানো যেত। টালা ঝিল পার্কে মোট ১১ জন নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন, যাঁরা চারটি শিফটে কাজ করেন। তাই তাঁদের সংখ্যা কম হওয়ার কারণে যে ওই পার্কে নজরদারি ঠিক ভাবে করা সম্ভব হয় না, তা মেনে নিচ্ছেন নিরাপত্তারক্ষীদের একাংশ। নাম প্রকাশের অনিচ্ছুক এক নিরাপত্তারক্ষীর আবার অভিযোগ, ‘‘পার্কের ঝিলে অবাধে স্নান করা রুখতে উদ্যানের গেট বন্ধ করলে উল্টে আমাদের মারধর করা হয়। সম্প্রতি এ নিয়ে টালা থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।’’

এ দিন টালা ঝিল পার্কের অদূরে সাহিলের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, বাবা কানাইলাল মিশ্র ও মা অঞ্জলি বারবার জ্ঞান হারাচ্ছেন। কানাইলালবাবু কাঁদতে কাঁদতে মাঝেমাঝেই স্বগতোক্তি করছেন, ‘‘কোনও দিন ওখানে যাসনি। আজ কেনই বা গেলি ওখানে স্নান করতে?’’ প্রতিবেশীরা জানাচ্ছেন, বন্ধুদের সঙ্গে এ দিনই প্রথম সাহিল টালা ঝিল পার্কে স্নান করতে গিয়েছিলেন। মাধ্যমিক পাশ করে সাহিল পড়াশোনা ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে ক্যারাটের ভাল

প্রশিক্ষক ছিলেন তিনি।

এই দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে অবশ্য স্থানীয়দের মধ্যে সচেতনতার অভাবকেই দায়ী করছেন স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলর তরুণ সাহা। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘মানুষ নিজে সচেতন না হলে কিছুই বদলাবে না। দুর্ঘটনা ঠেকাতে উদ্যানের মূল গেট বন্ধ করলে আট ফুট উচ্চতার পাঁচিল টপকে স্থানীয় যুবকরা ঝিলে স্নান করতে নামেন।’’ তিনি জানিয়েছেন, পার্কে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে ভোটের পরেই পুরসভায় প্রস্তাব দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন