বিয়ের বাজার করতে যাওয়ার পথে মৃত্যু তরুণীর

ঘটনায় বারাসত থানায় অভিযোগ জানিয়েছে শ্রাবণীর পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, লরিচালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আকস্মিক এমন দুর্ঘটনায় মেয়েকে হারিয়ে হতবাক শ্রাবণীর পরিবার।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৯ ০০:৫২
Share:

শ্রাবণী পাল

প্রায় ১০ বছরের সম্পর্ক তাঁদের। আর কয়েক মাসের মধ্যেই বিয়ে হওয়ার কথা ছিল দু’জনের। রবিবার রাতে হবু স্বামী অরিৎ দাসের সঙ্গে বিয়ের কেনাকাটা করতে যাচ্ছিলেন বারাসত ন’পাড়ার শ্রাবণী পাল (২৩)। কিন্তু মাঝপথে লরির ধাক্কায় প্রাণ হারালেন তিনি। একসঙ্গে দুর্ঘটনায় পড়েও বেঁচে গিয়েছেন অরিৎ। তাঁর আঘাতও গুরুতর নয়। এমনকি, যে মোটরবাইকে চেপে তাঁরা কেনাকাটা করতে যাচ্ছিলেন, অক্ষত রয়েছে সেটিও।

Advertisement

এই ঘটনায় বারাসত থানায় অভিযোগ জানিয়েছে শ্রাবণীর পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, লরিচালককে গ্রেফতার করা হয়েছে। আকস্মিক এমন দুর্ঘটনায় মেয়েকে হারিয়ে হতবাক শ্রাবণীর পরিবার।

স্নাতক শ্রাবণী এলাকায় টিউশন দিতেন। পড়শিরা জানিয়েছেন, পাড়ায় খুবই জনপ্রিয় ছিলেন তিনি। সকলে তাঁকে মিষ্টি বলে ডাকতেন। শ্রাবণীর বাবা সমীর পাল মৃৎশিল্পী। শ্রাবণী তাঁর ছোট মেয়ে। অরিতেরও বাড়ি বারাসত ন’পাড়ায়। সম্প্রতি একটি বেসরকারি ব্যাঙ্কে চাকরি পেয়েছেন তিনি। দুই বাড়িতেই অবাধ যাতায়াত ছিল দু’জনের। ফেসবুকে তাঁরা বাগদানের কথা জানিয়েছিলেন।

Advertisement

শ্রাবণীর কাকা অসীম পাল জানান, রবিবার সকালে বাড়ির লোকেদের সঙ্গে ব্যারাকপুরে মামার বাড়ি গিয়েছিলেন তাঁর ভাইঝি। সেখান থেকে রাতে বারাসতে ফেরেন। হেলাবটলতায় বাস থেকে নেমে শ্রাবণীর আত্মীয়েরা বাড়ি চলে যান। সেখানেই মোটরবাইক নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন অরিৎ। হেলাবটতলা থেকে শ্রাবণী ও অরিতের একটি শপিং মলে যাওয়ার কথা ছিল।

পুলিশ জানিয়েছে, কলোনি মোড়ে উড়ালপুলে ওঠার মুখে একটি বালি বোঝাই লরি অরিতের মোটরবাইকে ধাক্কা মারে। রাস্তার দিকে ছিটকে পড়েন শ্রাবণী। ফুটপাতের দিকে পড়েন অরিৎ। লরির চাকা শ্রাবণীর মাথার উপর দিয়ে চলে যায়। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন।

খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে যান দুই বাড়ির লোকজন। মেয়েকে হারিয়ে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন শ্রাবণীর মা সন্দীপা পাল। বাড়ির লোকেরা বলছেন, ‘‘রবিবার রাতে ওকে যেতে বারণ করেছিলাম। বলেছিলাম, এক দিন পরে গিয়ে কেনাকাটা করিস। ও যদি তা মেনে নিয়ে আমাদের সঙ্গে ফিরে আসত, তা হলে আজ এই দিন দেখতে হত না।’’

ঘটনার পর থেকে কার্যত গৃহবন্দি হয়ে রয়েছেন অরিৎ। কারও সঙ্গে কথা বলছেন না তিনি। ফোন বন্ধ থাকায় তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন